Trending
মুখ্যমন্ত্রীর কড়া দাওয়াই। এক ঝটকায় শুরু কলকাতা সাফ করার কাজ। নেমেছে বুলডোজার। দখলদারি দেখলেই ধুয়ে মুছে সাফ ফুটপাথের দোকান। অ্যাকশনে প্রশাসন। হুড়োহুড়ি পরে গেছে দখলদারদের মধ্যে। পুরসভার চেয়ারম্যান, নেতা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে কড়া ডোজ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপরেই শহর জুড়ে চলছে উচ্ছেদ অভিযান। প্রশ্ন হচ্ছে এত দেরিতে হুঁশ ফিরল কেন? সব জেনেও কেন টনক নড়ল না স্থানীয় প্রশাসনের? লোকসভা ভোটে শহরের দিকে ভোটের অঙ্ক কমার কারনেই কী টনক নড়ল তবে? প্রশ্নে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
হাতিবাগান থেকে গড়িয়াহাট। সল্টলেক, শিয়ালদা থেকে জদুবাবুর বাজার- সর্বত্র তৎপর প্রশাসন। টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে ফুটপাথে থাকা দোকানের ছাদ, প্লাস্টিক। বুল্ডোজার দিয়ে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক দোকান। আটক করা হয় বেশ কিছু ব্যবসায়ীকে। এতবছর ধরে সমস্ত কিছু পুলিশ-প্রশাসনের সামনেই ঘটেছে। কেউ কোন প্রতিবাদ করেনি। এতদিন পরে কেন তৎপর প্রশাসন? কেন বৈঠকে টাফ টার্গেট দিলেন মুখ্যমন্ত্রী? যেসমস্ত ব্যবসায়ীদের দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে, তাদের কী আগাম কিছু জানান হয়েছে? প্রশ্ন বিরোধীদের।
এতদিন বেআইনি দোকান নিয়ে নাকে সরষের তেল দিয়েছিল প্রশাসন, বলছেন বিরোধীরা। আসলে নির্বাচনের প্রসঙ্গটাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সামনেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচন। আর তাকেই মাথায় রেখে এখন সজাগ মুখ্যমন্ত্রী। লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেও দেখা গিয়েছে শহরের পুর এলাকায় কমেছে ভোটের অঙ্ক। গ্রাম-গঞ্জের মানুষ ঢালাও ঘাস ফুলে ভোট দিলেও শহরে বিজেপি-র সঙ্গে ফারাকটা অনেকটাই। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে যাতে সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, তাই জন্যই কী তড়িঘড়ি এই কড়া ডোজ? শক্ত হাতে নির্বাচনের ঘুঁটি নিজের হাতে রাখতেই কী এই চাল মুখ্যমন্ত্রীর? প্রশ্ন করছেন বিরোধীরা।
লাগাতার চলছে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। ঢালাও দোকান উচ্ছেদে কার্যত হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে দখলদারদের মধ্যে। ১৩ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন তিনি। রাস্তাঘাটে কিছু কী নজরে পরেনি তাঁর? যদি তাই হয়, তাহলে এতদিন পরে কেন হুঁশ ফিরল সকলের। প্রসঙ্গত, নীলরতন হাসপাতাল বা এসএসকেএম হাসপাতালের সামনে ব্যাঙের ছাতার মত চলেছে ফুটপাথ দখল করে দোকানদারদের দাদাগিরি। আর এইসবটাই ঘটেছে সকলের চোখের সামনে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কী সেসব কোন খবরই ছিল না? কিছুই জানতেন না? কিন্তু বৈঠকে নিজে মুখেই তিনি স্বীকার করেছেন যে তাঁর কাছে সমস্ত খবর আসে। তিনি সবটাই জানেন। কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, শোনাব আপনাদের।
শহরজুড়ে চলছে ফুটপাথ দখলমুক্ত করার অভিযান। শহরকে সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন অবস্থায় দেখতে সকলেই চায়। কিন্তু ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করে নয়। অবশ্যই তাদের জন্য বিকল্প জায়গার পরিবর্তে। আসলে ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে কোনরকম কসুর করতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী। আর তাই ভোট টানতে পথে নামিয়েছেন তাঁর বাহিনিকে। কটাক্ষ বিরোধীদের। আর এখানেই ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে এনে দু’য়ে-দু’য়ে চার করার কথা বলেছেন তারা। তুলেছেন হাজার একটা প্রশ্ন। যে প্রশ্নে এই মুহূর্তে তোলপাড় বাংলা।
দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।