আসছে অগাস্টে বড়সড় দুর্ভোগের আঁচ পেতে চলেছেন শহরবাসী। নাগরিক ভোগান্তি উঠবে চরমে। যেটুকু জানা যাচ্ছে, শহর থেকে একধাক্কায় বসে যেতে পারে ২ হাজার বেসরকারি বাস। মানে তিলোত্তমার একাধিক রুটে দেখা যেতে পারে বাসের আকাল। সংশয় এমনই জায়গায় পৌঁছচ্ছে যে হয়ত একাধিক রুট শুধুমাত্র বাসের অভাবেই বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তার পরিবর্তে কোন ব্যবস্থা, কোন সমাধান, কোন সুরাহা? না, এখনো পর্যন্ত তার কিছুই জানা যাচ্ছে না। কিন্তু হঠাৎ করে অগাস্ট মাসে ২ হাজার বেসরকারি বাস বসে যাবার কারণটা কী? বলব সেটাই আজকের প্রতিবেদনে।

শহরের বুকে এখন যে বেসরকারি বাস চলে তাদের অনেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ। এই বিষয়েই ২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় ১৫ বছরের বেশি কোন বাস চালানো যাবে না। আর সেটা পরিবেশের স্বার্থেই। কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল বাস মালিকদের সংগঠন। তারা দ্বারস্থ হয় সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আবার সেই মামলা ফিরিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টে। তারপর পরিবহন দফতর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নেয় পরিবহন দফতর। এবং সেই নির্দেশ যাতে কার্যকর হয়, সেই বিষয়ে নজর দেয়। পরিবহন দফতর বলছে, যেসব নতুন বাস ২০০৯ সালে রাস্তায় নেমেছিল ২০২৪ এর অগাস্ট মাসে সেই সব বাসেদের বয়স পেরিয়ে যাবে ১৫ বছর। মানে সেই বাসগুলো পরিবেশের স্বার্থে আর চালানো যাবে না। ফলে বাস যদি বসিয়ে দিতে হয় তাহলে শহর জুড়ে দেখা যেতে পারে বাসের আকাল। ফলে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ পৌঁছতে পারে চরমে।

পরিবহন দফতরের সূত্র বলছে, কলকাতায় বেসরকারি বাস রয়েছে ৪ হাজার ৮৪০টা মতন। কোভিডের কারণে বেশ কিছু বাস বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এখন বেসরকারি বাসের সংখ্যা ৩ হাজার ৬১৫। অন্যদিকে কলকাতায় মিনিবাসের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬৪ মতন। এখন সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ১ হাজার ৪৯৮ মতন। এবার যেকটি বেসরকারি বাস এবং মিনিবাস বর্তমানে রাস্তায় চলছে তার মধ্যে ২ হাজার বাসের বয়স ১৫ বছর। পরিবহন দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, যদি শহরের বুক থেকে এভাবে ২ হাজার বাস একেবারে বসে যায় তাহলে সেই প্রভাবের দরুণ যেমন দুর্ভোগ বাড়বে নিত্যযাত্রীদের, ঠিক তেমনই আবার বেশ কিছু রুট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তার মধ্যে যেমন কদমতলা-ধর্মতলা, বোটানিক্যাল গার্ডেন-ধর্মতলার মত একাধিক রুট কার্যত বাসশূন্য হতে পারে। ফলে একটা খুব বড়সড় ফাঁক তৈরি হয়ে যাবে যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যপার হচ্ছে, বহু মালিক আবার নতুন করে বাস কেনার ব্যপারে নাকি তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

সব মিলিয়ে যা বোঝা যাচ্ছে, যদি আসছে অগাস্টে এভাবেই ২ হাজার বাস তুলে নেওয়া হয় তাহলে কলকাতার বুকে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছবে। তখন সেই দুর্ভোগ ঠেকাতে পরিবহন দফতর কী ব্যবস্থা নেবে? সেই বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায় নি। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।

জীবন হোক অর্থবহ