Daily
জল, জঙ্গল আর ম্যানগ্রোভ। মিলেই সুন্দরবন। সুন্দরী, গরান, গেঁওয়া সহ মোট ৩৪ প্রজাতির ম্যানগ্রোভের উপস্থিতি রয়েছে এই সুন্দরবনে।
সমুদ্র নদী ঘেরা ভারত-বাংলাদেশের সীমানা জুড়ে বিস্তৃত এই ম্যানগ্রোভের জঙ্গলকেই ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে।
পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর যখন বাড়ছে ঠিক তখনই জলস্তরকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং ঘূর্ণিঝড় রোধ করতে ম্যানগ্রোভের জুড়ি মেলা ভার।
সভ্যতা যত এগিয়েছে ততই কাটা পড়েছে জঙ্গল। বিভিন্ন সময় বিশেষ করে আম্ফান, বুলবুল ও ইয়াসের মত ঘূর্ণিঝড় তছনছ করে দিয়েছে সুন্দরবনকে। তছনছ করে দিয়েছে মানুষের জীবন-জীবিকা কে।
এবার সেই সুন্দরবনকে বাঁচাতে বিশেষ করে ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে সুন্দরবনের গেটওয়ে ক্যানিং ব্লকে মাতলা নদীর চরে উদ্বোধন হলো ম্যানগ্রোভ পরিচিতি কেন্দ্রের। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে ক্যানিং ১ নম্বর ব্লকের তত্ত্বাবধানে ক্যানিং ১ নম্বর ও দু’নম্বর পঞ্চায়েতের তদারকিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জয়যাত্রা শুরু হল ম্যানগ্রোভ পরিচিতি কেন্দ্রের।
সুন্দরবনের মোট ৩৪ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে এই কেন্দ্রে মোট ২৪ প্রজাতির ম্যানগ্রোভ এর দেখা মিলবে। আর এই কাজে মহাত্মা গান্ধী গ্রামীণ কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পে গ্রামের মহিলা-পুরুষদের সামিল করা হয়েছে। এতে একদিকে বাড়বে রোজগার। অন্যদিকে বেড়ে উঠবে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল। রক্ষা হবে পরিবেশের ভারসাম্য। এদিন পরিচিতি কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রামদাস।
বেশ সাজো সাজো রবে রীতিমত মাইক বেঁধে মঞ্চে পঞ্চায়েতের আধিকারিকরা সহ সবাই মিলে গ্রামবাসীদের হাতে নতুন কোদাল বালতি সহ বেশ কিছু খাদ্য সামগ্রীও তুলে দেন। ক্যানিং থানার আইসি আতিকুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য সুশীল সর্দাররা সবাই মিলে মাতলা চরে নেমে নিজের হাতে ম্যানগ্রোভ চারা লাগান। উৎসবের মেজাজে জ্বলজ্বল করছে ম্যানগ্রোভ পরিচিতি কেন্দ্রের সাইনবোর্ড। সুন্দরবন দেখতে মানুষ যখন আসবেন তখন তারাও ম্যানগ্রোভ সম্পর্কে ধারণা নিতে পারবেন। পর্যটকদের ধারণা দিতে এই ম্যানগ্রোভ পরিচিতি কেন্দ্র বিশেষভাবে কাজ করবে।
ম্যানগ্রোভ বাঁচবে। সুন্দরবন হাসবে। জীবিকা বাঁচবে। জীবনও বাঁচবে। গেটওয়ে অফ সুন্দরবন ক্যানিং থেকে পর্যটকরা ধারণা করতে পারবেন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজে এই ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের গুরুত্ব।
দীপান্বিতা দাস, ক্যানিং
বিজনেস প্রাইম নিউজ