Trending
নাসার পর ইসরো
পাখির চোখ সূর্য
পাড়ি দেবে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ
কিন্তু কেন? ইসরোর চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য এখনো মিইয়ে যায় নি। তার আগেই আবার নতুন করে ইতিহাস তৈরির পথে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকেই সূর্যের দিকে উড়তে শুরু করল ইসরোর আদিত্য এল-ওয়ান। কিন্তু এই গোটা প্রোজেক্টে খরচ কত হল? আর কেনই বা সূর্যকে পাখির চোখ করলেন ভারতের মহাকাশবিজ্ঞানীরা? কিই বা পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে আমাদের ইসরো? জানতে হলে প্রতিবেদনটি দেখুন একেবারে শেষ পর্যন্ত।
২০১৮ সালে সূর্যকে পাখির চোখ করেছিল নাসা। তার জন্যই পার্কার সোলার প্রোব নামের মহাকাশযান পাঠিয়েছিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। বর্তমানে সেটি প্রদক্ষিণ করছে সূর্যকে। নাসার পাঠানো এই মহাকাশযানটি প্রদক্ষিণের সময় সূর্যের কাছাকাছিও পৌঁছে যায়। নাসা জানিয়েছিল, পার্কার সোলার প্রোব প্রায় ৭২ লক্ষ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে এবার নাসার সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে ইসরোর। কারণ এবার ভারতের চোখে সূর্য। কিসের খোঁজ করবে আমাদের আদিত্য এল ওয়ান? অনেকেই মনে করছেন তাহলে কি পার্কারের থেকেও আরও কাছে এগিয়ে যাবে আদিত্য এল ১?
ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছবে আদিত্য এল-১। এই ল্যাগরাঞ্জ পয়েন্ট আসলে কী? এটি মহাশূন্যের এমন একটি পয়েন্ট যেখানে সূর্য এবং পৃথিবীর আকর্ষণ-বিকর্ষণ বল সমানভাবে কাজ করবে। আর যে কারণে ঐ পয়েন্টে পৌঁছনোর পর কৃত্রিম উপগ্রহের আর জ্বালানির প্রয়োজন পড়বে না। আর এই পয়েন্টটাই রয়েছে পৃথিবী থেকে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে। আদিত্য এল-১ কে নিয়ে সূর্যের দিকে রওনা হয়েছে পিএসএলভি এক্স এল সি-৫৭। এটি উপগ্রহকে পৌঁছে দেবে পৃথিবীর কক্ষপথে। তারপর পৃথিবীর চারপাশে কয়েকদিন প্রদক্ষিণ করে ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে পৌঁছবার জন্য মহাশূন্যে উড়তে শুরু করবে আদিত্য এল-১।
এই রকেট চারটি ধাপে পুরো কাজটি করতে চলেছে। প্রথমে বুস্টার স্টেজ যেখানে সক্রিয় ছটি সলিড প্রোপেল্যান্ট স্ট্র্যাপ অন মোটর। তারপরের দায়িত্ব এস-১৩৯ সলিড রকেট বুস্টারের। জ্বালানির জন্য কাজ করবে সলিড প্রোপেল্যান্ট। তারপরের কাজ ইসরোর ‘বিকাশ’ ইঞ্জিনের। এখানেই ব্যবহার করা হয় লিকুইড প্রোপেল্যান্ট। তারপর স্টেজ থ্রি-তে এস-৭ ইঞ্জিন। এখানেও ব্যবহার করা হবে জ্বালানি হিসেবে সলিড প্রোপেল্যান্ট। তারপর স্টেজ-৪ যা অন্তিম পর্ব। প্রথমে পিএসএলভি রকেট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে মাত্র ২৪৫ কিলোমিটার দূর থেকে। এভাবেই উপবৃত্তাকার পথে ঘুরবে আদিত্য। তারপর ক্রমশ দূর থেকে দূরে যেতে যেতে একটা সময় সূর্যের দিকে রওনা দেবে আদিত্য। ইসরো বলছে আগামী চার মাস ধরে সূর্যের ১৪৪০-টি ছবি তুলবে আদিত্য এল-১। ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে প্রায় চার মাস ধরেই স্যাটেলাইট প্রদক্ষিণ করবে।
মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়া, সূর্যের ওপর কী প্রভাব পড়ে এছাড়া সূর্য গ্রহণ, সৌরঝড়, এমনকি সূর্যের নানা অবস্থান পর্যবেক্ষণ করবে আদিত্য এল-১। এই অভিযানে পেলোড থাকবে ৭-টি। যা পর্যবেক্ষণ করবে ফোটোস্ফিয়ার, ক্রোমোস্ফিয়ার এবং পর্যবেক্ষণ করবে করোনা। সৌরমণ্ডল থেকে নানা ছবি তুলবে এবং সেটাই পাঠিয়ে দেবে আদিত্য। খেয়াল রাখবেন, ফোটোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা থাকে ৩,৭০০ ডিগ্রি থাকে ৬,২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। আর ক্রোমোস্ফিয়ারের তাপমাত্রা থাকে ৩,৭০০ ডিগ্রি থেকে ৭,৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
ইসরোর এই সৌর অভিযান নিঃসন্দেহে একটা মাইলস্টোন তৈরির পথে। আর এই গোটা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইসরো খরচ করেছে মাত্র ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু এতো কম খরচে কিভাবে পুরো বিষয়টা সামলাতে পারল ইসরো? চন্দ্রযান-৩ এর থেকেও কম খরচে? ইসরো বলছে, আসলে চাঁদে ল্যান্ডারের অবতরণ করানোর বিষয়টা ছিল। ফলে সেক্ষেত্রে খরচের একটা ধাক্কা আসে। কিন্তু আদিত্য এল-১ এর এসব কোন হ্যাপা নেই। সুতরাং কম খরচেই কিস্তিমাত করবে ইসরো। চাঁদের পর সৌর অভিযান সাফল্য পাক এটাই চায় আপামর ভারতবাসীর মতন বিজনেস প্রাইম নিউজ। প্রতিবেদনটি শেয়ার করুন, লাইক করুন। আর চ্যানেলে নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করে নিন বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ