Trending
আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু পৌঁছতে চলেছে ১০ বিলিয়ন ডলারে। পৃথিবীর তাবড় স্পোর্টস লিগগুলোকে বলে বলে গোল দিচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। বলা যেতে পারে, আইপিএল শুরুর দিন থেকে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু শুধু বাড়াতেই পেরেছে। এখন যা অল টাইম রেকর্ড তৈরি করছে। দেশবাসীর মধ্যে আইপিএল নিয়ে যে প্রবল উন্মাদনা সেটা ধরা পড়ছে বিশ্বের প্রথম সারির সংস্থাগুলোর কৌতূহলী চোখে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে আইপিএল নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু এভাবে সেট করতে পারল। আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু কেন বছর বছর শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে? আজকের প্রতিবেদনে আলোচনা হোক এটা নিয়েই।
প্রিয় দর্শক, শেষ হল এই মরশুমের আইপিএল লিগ। টেনশন, টানা-পোড়েন এসবের মধ্যে এবারে আইপিএলের কাপ ছিনিয়ে নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। একটা তথ্য বলছে, জিও সিনেমা আইপিএলের সকল ম্যাচ বিনাপয়সায় দেখার সুযোগ করে দেওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ ভিউ এসেছে ফাইনাল ম্যাচ চলাকালীন। জানা গিয়েছে, ৩.২ কোটি মানুষ এই ফাইনাল দেখেছেন এক রাতে। যেখানে গত আইপিএলে সর্বোচ্চ দর্শক সংখ্যা ছিল ১.৮ কোটি। সুতরাং, বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে ব্র্যান্ড এক্সপার্টসরা আইপিএল নিয়ে মাতামাতি করবেন। আর সেই সূত্র ধরেই জানা গিয়েছে, আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু পৌঁছে যেতে চলেছে ১০ বিলিয়ন ডলারে। সেটা গত আইপিএলের থেকেও ১৯ শতাংশ বেশি। ২০২২ সালে কিন্তু আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু ছিল ৮.৪ বিলিয়ন ডলার মতন। ফিনান্স এক্সপার্টরা মনে করছেন, আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু দিনে দিনে বৃদ্ধি পাবার কারণ একটাই। ফ্যান এনগেজমেন্টের পাশাপাশি মিডিয়া রাইটসের জন্য বিপুল টাকা বিনিয়োগ। খেলতে নামানো হচ্ছে নতুন নতুন মুখদের। যাদের ট্যালেন্ট নিঃসন্দেহে আইপিএলের মাঠেই সবথেকে বেশি প্রকাশ পাচ্ছে। আর সেটা আরও বেশি করে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর জন্য কিছুটা ফুয়েলের কাজ করছে।
শুভমন গিল, রিঙ্কু সিং বা যশস্বী জয়সোয়ালের মতন নতুন মুখ আইপিএলের দর্শক বাড়ানোর জন্য অনেকটা সাহায্য করছে। ব্র্যান্ড এক্সপার্টদের মতামত, আজ আইপিএল এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে সাধারণ মানুষের কাছে আর কাজের দিন বা ছুটির দিন- ইত্যাদি কোন ম্যাটার করছে না। তাঁরা আসছেন, টাকা দিয়ে টিকিট কাটছেন এবং প্রবল উন্মাদনা নিয়ে আইপিএলের ম্যাচ দেখছেন। আইপিএল আজ শুধু খেলা নয়। আইপিএল আজ মাল্টিপল স্পেসে ছড়িয়ে পড়েছে। তার মধ্যে অবশ্যই যেমন রয়েছে এন্টারটেনমেন্ট বা বিনোদন। তেমনই রয়েছে এক সুবিশাল ব্যবসা। বিশ্বের প্রথম সারির সংস্থাগুলো যেমন অ্যাপল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফট, জিও নিজেদের জায়গায় আরও বেশি করে ব্র্যান্ড ভ্যালু ছড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। অনেকে তো বলছেন, আইপিএল খুব সহজেই গোটা ভারতকে এক সুতোয় বাঁধার কাজটা করতে পেরেছে। বিভিন্ন শহর থেকে ফ্যানেরা আসছেন। এটা যেমন দুই আলাদা আলাদা রাজ্যের সংস্কৃতিকে বাঁধতে পারছে, একইভাবে সুবিশাল ভারতে এটাই নাকি বিজ্ঞাপনদাতাদের মধ্যে প্রবল ইন্টারেস্ট গ্রো করাতে সাহায্য করছে। কারণ একটাই- এনগেজমেন্ট।
আপনাদের জন্য একটা তথ্য দিয়ে রাখি। ২০০৮ সালে আইপিএল নিজের জন্মলগ্ন থেকেই ব্র্যান্ড ভ্যালু কিভাবে দিন দিন বাড়ানো যায়, সেদিকে নজর দিয়েছে। ভেবে দেখুন, ২০০৯ সালে যেখানে আইপিএলের ব্র্যান্ড ভ্যালু ছিল ২ বিলিয়ন ডলার, সেখানে আজ ব্র্যান্ড ভ্যালুর অঙ্কটা কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে। টেলিভিশন রাইটস এবং ডিজিটাল রাইটসে আইপিএল ছাপিয়ে গিয়েছে ২০১৮-২০২২ এর মধ্যে এই চার বছরের পিরিয়ড। ২০২৩-২৭ সালের মধ্যে যে বিপুল অঙ্কের রাইটস আইপিএলের জন্য নেওয়া হচ্ছে, তাতে প্রমাণিত হচ্ছে যে নীল গ্রহে সেকেন্ড মোস্ট ভ্যালুয়েবল স্পোর্টস লিগ হচ্ছে আইপিএল। সামনে রয়েছে শুধু ন্যাশনাল ফুটবল লিগ। অন্তত এমনটাই জানাচ্ছে বিসিসিআই। আইপিএলে সবচেয়ে বেশি নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু ধরে রাখতে পেরেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (৮৩ মিলিয়ন ডলার), কলকাতা নাইট রাইডার্স (৭৬.৮ মিলিয়ন ডলার) এবং চেন্নাই সুপার কিংস (৭৩.৬ মিলিয়ন ডলার)।
আজ আইপিএল দেখেন না এমন মানুষ মনে হয় নেই। ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখা মানুষও হয়ত একবার না একবার আইপিএলের ম্যাচে চোখ আটকে রাখেন। তার কারণ প্রবল উন্মাদনা। এইটুকু উন্মাদনা কে না চায়? আর যত উন্মাদনা, তত এনগেজমেন্ট। যত এনগেজমেন্ট, তত ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি। আর যত বাড়বে ব্র্যান্ড ভ্যালু ততই ফুলেফেঁপে উঠবে আইপিএল।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ