Daily
২০০১ থেকে ২০২১। দীর্ঘ কুড়ি বছর পর আবারও আফগানিস্থানে ক্ষমতা দখল করল তালিবান। তালিবানরা ক্ষমতা দখলের সঙ্গে সঙ্গেই উঠতে শুরু করল নানা মহলে নানান প্রশ্ন। বিশেষ করে মধ্য এশিয়ায় ও দক্ষিণ এশিয়ায় ভৌগোলিকভাবে সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে আফগানিস্তান। এই আফগানিস্তানের সঙ্গেই জুড়ে রয়েছে ভারতের আর্থিক ও সামরিক সম্পর্ক।
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কিংবা আমেরিকা এই দুটি দেশই আফগানিস্তানকে ব্যবহার করেছে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য। ফলে বারবার এই দুটি দেশের হাতে পড়ে ধ্বংস হয়েছে আফগানিস্তানের আর্থিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। অন্যদিকে ভারত বরাবরই দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে ও উন্নয়নে।
১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত তার আধিপত্য তুলে নিতেই পাকিস্তান আর আমেরিকার মদতে তালিবানরা সে দেশের সিংহভাগ প্রদেশ দখল করে নিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯৯৬ সালে তালিবান রাজত্ব কায়েম করে।
২০০১ সালে আমেরিকা ওয়ার অন টেরর অভিযান চালিয়ে তালিবানদের খতম করে। এরপর আফগান অর্থনীতি পুনর্গঠনে ভারত সড়ক, বিদ্যুৎ, পরিকাঠামো উন্নয়ন, টেলিযোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতে বিপুল বিনিয়োগ করে।
ভারত ২০০১ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ২৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে আফগানিস্তানে। যা ডলারের হিসাবে ৩ বিলিয়ন। ইরান সীমান্তে ২১৮ কিলোমিটার লম্বা সড়ক থেকে সালমা বাঁধ সহ বিভিন্ন প্রকল্পে। আফগানিস্তানে তালিবানদের ক্ষমতা দখলের আগে পর্যন্ত ৪০০ বেশি প্রকল্পে রয়েছে ভারতের বিনিয়োগ।
আফগানিস্তান ভৌগোলিকভাবে এমন একটি স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্টে রয়েছে যার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করছে ভারতের আর্থিক প্রগতি ও সামরিক স্থিতিশীলতা। পার্লামেন্ট ভবন থেকে, সালমা বাঁধ। আফগান ইরান সীমান্তে পাকা সড়কের মধ্যে দিয়ে ইরানের অন্যতম প্রধান বন্দর চাবহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে পাকিস্তানকে বাদ দিয়েও ভারত গড়ে তুলেছিল ১.২ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্দেশীয় বাণিজ্য।
২০১১ থেকে এখনো পর্যন্ত ভারত সচেতনভাবে আফগানিস্থানের পুনর্গঠনে যেভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়িয়েছে তাতে শিউরে উঠছে ভারতের দুই প্রতিবেশী চিন ও পাকিস্তান। এখন তালিবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ভারতের এই বিপুল বিনিয়োগের ভাগ্যে কি অপেক্ষা করছে সেটা সময় বলবে। তবে কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারত যে পাকিস্তান ও চিনকে পিছনে ফেলে তার বিপুল বিনিয়োগ সুরক্ষিত করার চেষ্টা করবে নিজেদের আভ্যন্তরীণ স্বার্থে সেটাই স্বাভাবিক।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ।