Science & Technology

তৈরি হচ্ছে দেশের প্রথম এআই শহর। রামরাজ্যের কানঘেঁষে থাকা শহরটাই এবার সেজে উঠছে নতুন সাজে। আইটি হাব, প্রযুক্তির শহর ইত্যাদি ইত্যাদি তো অনেক রয়েছে এই দেশে। কিন্তু এআই শহর কিন্তু ভারতে এই প্রথম। যেখানে গেলেই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকবেন আপনি।
রাজ্যের নাম উত্তরপ্রদেশ। শহরের নাম, লখনউ। আর কিছুদিন বাদে সেই শহরে পা রাখলেই আপনি চমকে উঠবেন। বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে চর্চিত প্রযুক্তির নাম, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর সেই প্রযুক্তির অপর ভর করেই গড়ে উঠতে চলেছে ভারতের প্রথম এআই শহর। কল্পবিজ্ঞানকে একেবারে সত্যি করার পথে ভারত। কারণ গড়ে উঠতে চলেছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের শহর। যে শহরের কোণায় কোণায় থাকবে প্রযুক্তির ছোঁয়া।
লখনউ শহরের প্রতিটা ইটে গাঁথা দগদগে ইতিহাস। আর সেই শহরেই এবার তৈরি হতে চলেছে আরও এক ইতিহাস। শুধু ভারত বলে নয়। এশিয়া তথা গোটা বিশ্বের মধ্যে সম্ভবত এই প্রথম কোন শহরের গায়ে লাগতে চলেছে এআই হাবের তকমা। জানেন, কারা বানাচ্ছে এই শহর? উত্তরপ্রদেশের ইলেক্ট্রনিক্স কর্পোরেশন লিমিটেড। ইতিমধ্যেই একাধিক রিয়েল এস্টেট সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। ভারতের তথা এশিয়ার প্রথম এআই শহর তৈরি করার জন্য ঠিক কী কী পরিকাঠামো প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখছে সংস্থা।
এআই এখন ভবিষ্যৎ। ২০২৩ থেকে ২০৩০-এর মধ্যে রীতিমতো ছড়ি ঘোরাবে এই নতুন প্রযুক্তি। আর সেই দৌড়ে পিছিয়ে থাকা না-পসন্দ ভারতের। ২০২৩-২০৩০-এর মধ্যে এআই-এর বাজার বাড়বে ৩৭%। আর সেখানে ভারতের এই শহর হয়ে উঠতে পারে দ্য গেমচেঞ্জার এআই হাব। প্রযুক্তির অ্যাডভান্সমেন্টের পাশাপাশি আর্থিক বৃদ্ধিকে বুস্ট আপ করতে এই শহরের ভূমিকা থাকতে পারে চোখে পড়ার মতো।
বিশ্বজুড়ে যেভাবে এআই-এর দাপট বাড়ছে, তাতে করে এটাই যে ভবিষ্যৎ, সেটা নিশ্চিত। কারণ ২০২২ সালে এআই-এর বাজার ছিল প্রায় ১১ লক্ষ কোটি টাকা। যা ২০২৩ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৭.৩ শতাংশ হারে বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই প্রযুক্তির হাত ধরেই উত্তর প্রদেশের লখনউ-কে গড়ে তোলা হবে এআই হাব হিসেবে। কি কি সুবিধা থাকবে এই এআই শহরে, সেটা কী জানেন?
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, রিসার্চ সেন্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সস্তা এবং লাক্সারি অ্যাপার্টমেন্ট- কী থাকছে না সেখানে? হাত বাড়ালেই সমস্ত সুবিধা পাবেন একেবারে নাগালের মধ্যে। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট সংস্থাগুলোকে তাদের এক্সপার্টাইজ শো করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ এবং জায়গাও দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। শহরের বাস, ট্যাক্সি, গাড়ি- এই সমস্তটাই চলবে এআই-এর অপর ভিত্তি করে।
উত্তরপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা চলছে। টায়ার টুই সিটি হিসেবে লখনউকে নিয়ে এমন ভবনাচিন্তার ফল কি হতে পারে জানেন? সেই রাজ্যের অর্থনীতি নাকি ১ ট্রিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করতে পারে এই এআই-এর হাত ধরে। ভাবতে পারেন? সরকারী এবং বেসরকারি উদ্যোগে একেবারে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করবে লখনউ। কল্পবিজ্ঞানকে একবারে বাস্তব করার পথে ভারত।
আচ্ছা! রামরাজ্য বলেই কিই বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে লখনউ? এইরকম ডেভেলপমেন্ট তো আমাদের বাংলাতেও হতে পারত। এই কোলকাতাতেই রয়েছে আইটি হাব। একেবারে প্ল্যানডভাবে তৈরি হয়েছে কোলকাতা শহরের সল্টলেক সিটি। নিউটাউনকেও গড়ে তোলা হচ্ছে স্মার্ট সিটি হিসেবে। অদূর ভবিষ্যতে কি আমরা কোলকাতার বুকেও দেখতে পাব এমন চমক? যদিও এক্ষেত্রে শাসক দলের ভূমিকাটাও একেবারে অস্বীকার করা যায় না।
বঙ্গে শিল্প টানতে একাধিক বাণিজ্য সম্মেলন হলেও সেভাবে বিনিয়োগ হয়নি। নতুন শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার কথা উঠলেও তা এখনও পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তাহলে কি বিনিয়োগকারীরা বাংলায় বিনিয়োগের প্রতি উদাসীন? আচ্ছে এক্ষেত্রে কী রাজ্য সরকারের কিছুই করণীয় থাকে না? প্রশ্ন রাখলাম আপনাদের কাছে। আপনাদের মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে থাকুন দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।