Trending
‘অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম’ ডারউইনের এই মতবাদটা আজও কতটা প্রাসঙ্গিক। পার্সোনাল লাইফ থেকে প্রফেশনাল লাইফ- শুধু সংগ্রাম আর সংগ্রাম। কথায় আছে, Evolving times demand different kinds of skill sets and the adoption of new methods for better productivity and overall, a better living. কিন্তু এই বেটারমেন্টের দৌড়ে ভারতের জায়গা কোথায়? উত্তর খুঁজতে, খুব বেশিদূর যেতে হবে না। জাস্ট ২০২০ সালের শুরুর দিকে তাকান। অতিমারি পরিস্থিতিকে সামলাতে রীতিমত কালঘাম ছুটেছে। এদিকে ইন্ডিয়াকে সুপারপাওয়ার করে তোলার বুলি, আর দিকে গোড়ায় গলদ। এডুকেশন সিস্টেম- যা জীবন গঠনের বেসিক উপাদান। অতিমারি ঝড়ে যেটা সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তা ফেস করেছে। কেন জানেন?
আজ গোটা বিশ্ব যখন স্কিল বেসড এডুকেশন সিস্টেমকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, সেখানে ভারত আজও পড়ে আছে মান্ধাতার আমলে। কেউ ছুটছে মার্কসের পেছনে, কেউ আবার কম্পিটিটিভ এগজামে ব্যাস্ত। কিন্তু এতে করে তো গুটিকয়েক পড়ুয়ার একটা হিল্লে হল। বাকিরা? আজ দক্ষতার যুগ মশাই। মার্কসের নিরিখে রিক্রুটমেন্ট এখন ইতিহাস। সবাই এক্সপার্টকে খোঁজে। যে যত বেশি দক্ষ, সে তত বেশি সফল। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামও এই একই কথা বলছে। তাই একটা ডিগ্রি পাওয়ার থেকে সবাই এখন স্কিলড হওয়ার দৌড়ে সামিল হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্কিল বেসড এডুকেশন শুরু করা ভীষণ ইম্পরট্যান্ট। এই সময়ে দুটো জিনিস গেম চেঞ্জার হিসেবে কাজ করতে পারে-এক ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি ২০২০ ফলো করা, অথবা ডিজিটাল লারনিং অ্যাডপ্ট করা।
২০২০ সাল আমদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে ডিজিটাল লারনিং-এর গুরুত্বটা। আর ডিজিটাল লারনিং শিখিয়েছে গোটা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় আনতে। হ্যাঁ আপনি এক্ষেত্রে বলতেই পারেন, যে ডিজিটাল লারনিং টিচার এবং স্টুডেন্টদের মধ্যে দুরত্ব তৈরি করেছে, প্রচুর স্টুডেন্ট রয়েছেন যাদের কনসেপ্ট ক্লিয়ার হয়নি। স্টুডেন্টদের মধ্যে ওয়েব সিরিজ দেখার, সোশ্যাল মিডিয়া ইউজ করার প্রবণতা বেড়েছে, আননেসেসারিলি অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। কিন্তু উল্টোদিকটাও তো সত্যি। এই ডিজিটাল লার্নিঙের হাত ধরেই ‘ আর্নিং হোয়াইল লার্নিং’ কনসেপ্টটা এসেছে, যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি ২০২০। যাতায়াতের সময় এবং খরচ, দুইই বেচেছে। সাথে ইন্টারনেট তোলপাড় করে কেউ প্রোডাক্টিভ কাজে ইনভল্ভড হয়েছে। কেউ বিদেশী ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টার্নশিপ করেছে, কেউ নিজের হবিকে নারিশ করার সময় পেয়েছে। শুধু স্টুডেন্টরাই নন। অতিমারি সময়কে অনেক একজিকিউটিভ বা হোমমেকাররাও দারুণভাবে ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন অনলাইন কোর্স, ওয়েবিনার, কনফারেন্স অ্যাটেন্ড করা, যেটা হয়তো স্বশরীরে কখনও সম্ভব হতো না। ডিজিটাল দুনিয়া তা করে দেখিয়েছে।
বেশি মার্কসের থেকে বেশি দক্ষ লোকের কদর করছে কাজের বাজার। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম জানিয়েছে যে আগামী ৫-৭ বছরের মধ্যে চাকরি বাজারে এমন কিছু সুযোগ আসতে চলেছে, যার জন্য দক্ষ লোকের চাহিদা থাকবে অনেক বেশি। কিন্তু সেই ট্রেনিং কতটা দিচ্ছে আমাদের দেশের স্কুল, কলেজগুলো? খোঁজ নিয়েছেন? যেখানে ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি ২০২০ বলছে শিক্ষা মাধ্যমকে আরও স্কিল ফ্রেন্ডলি করে তুলতে, উন্নত ল্যাব পরিকাঠামো গড়ে তুলতে, স্টার্ট আপ গাইড নিয়ে সঠিক রাস্তা দেখাতে, পড়ুয়াদের সঠিক রাস্তা দেখাতে শিল্প এবং শিক্ষার মধ্যে একটা সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে- সেখানে সরকার সেই সুবিধে দিতে ব্যর্থ। কাজেই ঘুরে ফিরে ভালো মার্কস পাওয়াটাই পড়ুয়াদের টার্গেট হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কিন্তু এইভাবে বেশিদিন চলতে থাকলে আমরা কি আমাদের ফিউচার জেনারেশনের জন্য স্কিল বেসড সোসাইটি রেখে যেতে পারবো? আগামীতে যা দিন আসছে, তাতে দক্ষতাই শেষ কথা বলবে। সেটা আপনি মানুন আর নাই মানুন। তার মানে কি ডিগ্রীর কোন প্রয়োজন পড়বে না? না ব্যাপারটা একেবারেই সেরকম নয়। বরং যতদিন দক্ষ মানুষের কদর থাকবে, ততদিন ডিগ্রীর গুরুত্ব থাকবে। আর আগামীদিনে সেটা আরও বাড়বে। ভারতের ৬৫% মানুষ হচ্ছে ইয়াং জেনারেশন, মানে কর্মোপযোগী। তাই সঠিক প্ল্যানিং করে, এডুকেশন সিস্টেমকে আরও একটু নারাচারা করে, যদি ভারতের জনগন এবং ভারত সরকার এই ব্রহ্মাস্ত্রকে কাজে লাগায়, তাহলে আগামীদিনে অর্থনৈতিক গ্রাউন্ড বা প্রোডাক্টিভিটি গ্রাউন্ড যেখানেই বলুন না কেন, ভারতই লিড করতে পারে গোটা বিশ্বকে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ