Trending
Why would anyone help India if it had trouble with china after it did not helped Ukraine?
এস জয়সঙ্করঃ ইউরোপের প্রবলেম গোটা বিশ্বের প্রবলেম নয়। বাট গোটা বিশ্বের প্রবলেম ইউরোপের প্রবলেম
অন্তর্দেশীয় কলহ এবং গরিবিয়ানার হিসেব আর কষতে হয়না তাকে নিয়ে। বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশের সঙ্গে চোখে চোখ রাখতে ভয় পায় না দেশটা। যার কাঁধে জি-২০-র সভাপতিত্বের দায়িত্ব সঁপা যায় নির্দ্বিধায়- আজ সেই দেশটার গল্প হোক।
বিশ্বের সামনে ভারতের বর্তমান অবস্থান স্পষ্ট করতে শুরুর এই ক্লিপিংটুকুই যথেষ্ট। সাহসী, স্ব-নিশ্চিত এবং স্বাধীন। ভারতের বিদেশনীতি। সোশ্যাল মিডিয়াতে একটা ট্রেন্ড খুব ভাইরাল হয়েছে, জানেন তো? হাউ ইট স্টারটেড অ্যান্ড হাউ ইটস গোয়িং। সোশ্যাল মিডিয়া স্যাভিরা এই বিষয়ে নিশ্চয়ই অবগত। মিমস বা ভিডিও নিশ্চয়ই দেখেছেন। আজকের ভিডিওটা ওই ট্রেন্ডকে ফলো করেই। তবে, এক্ষেত্রে বিষয়টা ভারতের কূটনীতি। কেমন ভাবে শুরু হয়েছিল আর কীভাবে চলছে?
আজাদি কা অমৃত মহৎসবের ৭৬ বছর পার। মানে দেশভাগেরও ৭৬ বছর পার। সে কাহিনী বড় রক্তাক্ত করে। ভারত যখন স্বাধীন হয়, তখন ভারতের ভাঁড়ারে না ছিল সামরিক স্ট্রেন্থ, না ছিল শক্তপক্ত অর্থনৈতিক ভিত্তি। তবে, অনেককিছু না থাকার মধ্যে যেটুকু ছিল সেটা হচ্ছে দেশের মানুষ এবং তাদের মূল্যবোধ। ভারতের কাছে যা অ্যাসেট। যার উপর নির্ভর করে ভারত এগিয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে। আজ সাত দশক পেরিয়ে আমরা সেই ডিপ্লোম্যাসির অমৃতকালে দাঁড়িয়ে। সাক্ষী রয়েছি ভারতের ডিপ্লোম্যাসির এক সোনালি মুহূর্তে। যেখানে অপরচ্যুনিটি এবং চ্যালেঞ্জ মিলেমিশে একাকার।
জি-২০, ২০২৩-এর সভাপতি ভারত। বছরভর ফরেন ডেলিগেটসদের আসা-যাওয়া লেগেই রয়েছে। হিসেব কষে বলতে গেলে, প্রায় ৪০টা দেশের শীর্ষস্থানীয় কর্তারা ইতিমধ্যেই ভারত ভিজিট করেছেন। তবে এতগুলো দেশের মধ্যে চিন, রাশিয়া এবং আমেরিকার ফরেন মিনিস্টারদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলব আমরা। কারণ বিশ্বের সিংহভাগ মানুষ এই দেশগুলকেই ওয়ার্ল্ড পাওয়ার বলে মনে করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এই তিন দেশের ফরেন মিনিস্টাররা একইসঙ্গে ভারত ভিজিট করেছিলেন।
প্রথমেই শুরু করা যাক, চিন প্রসঙ্গে কিছু কথা বলে। ভারত হচ্ছে বিশ্বের প্রথম রাষ্ট্র যারা চিনের স্বরূপ দেখেছিল। স্বাধীনতার আগে অন্তত দুবার চিন ভিজিট করেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রাইম মিনিস্টার জহরলাল নেহেরু। তাঁর আমলেই, বেজিং যাতে ইউনাটেড নেশন সিকিউরিটি কাউন্সিলের পার্মানেন্ট মেম্বারশিপ পায়, সেটা নিশ্চিত করেছিল দিল্লি। চিন সেই উপকারের দাম কীভাবে দিয়েছিল মনে আছে? ১৯৬২-র যুদ্ধ তার উত্তর। চিনের তরফে বহু কটু কথাও শুনতে হয়েছে ভারতকে। আর পাকিস্তানকে নিয়ে ভারতকে শিক্ষা দেওয়ার যে ব্যর্থ ছক কষা হয়েছিল, সেটা তো আপানারা সকলেই জানেন। ফলফলও জানেন। তবে এতকিছুর পরেও চিনের ফরেন মিনিস্টার কিন্তু ভারতে জামাই-আদর পেয়েছেন। কেন জানেন? কারণ, অনেকসময় সুষ্ঠু আলোচনা এমন অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলতে পারে, যা কিনা যুদ্ধের মাধ্যমে ছিনিয়ে নেওয়া যায় না। আর এটাই সত্যিকারের সাহসীকতা। ভারতের বীরত্ব।
চলে আসি আমেরিকার কাছে। ভারতের সঙ্গে যার সম্পর্কই শুরু হয় অবিশ্বাস নিয়ে। ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময় ভারত আমেরিকার তেলা মাথায় তেল দেয়নি। আর সেই বিষয়টাই হজম হয়নি তৎকালীন মার্কিন সরকারের। প্রতিশোধ নিতেও পিছু পা হয়নি তারা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত যখন বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল তখনও পাকিস্তানকে লাগাতার সাপোর্ট করে ভারতকে ভয় দেখিয়েছে তারা। স্বাধীন বিদেশনীতি থাকার অপরাধে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে লোণ পাওয়া ক্যান্সেল করানো থেকে শুরু করে, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণকে প্রশ্রয় দেওয়া এমনকি ভারতীয় সৈন্যদের প্রাণনাশের হুমকি- কী করেনি দেশটা? ভারতকে কোণঠাসা করতে, পঙ্গু করে ফেলতে, শেষ করে ফেলতে পাকিস্তানের মতো দেশের পক্ষপাতিত্ব করে গেছে ওয়াশিংটন। কিন্তু ভারত যে বেপরোয়া। ভয় পেয়ে পিছু হটার মতো কাপুরুষতা ভারতের নেই। তাই আজ পাশা বদলে গেছে। খোদ আমেরিকার মুখে এখন ভারতের জয়জয়কার। তাদের স্ট্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে ভারতের নাম উচ্চারন করে তারা। পরিস্থিতি বদলাতে সময় লেগেছে। হ্যাঁ, গ্লোবাল ডেভলপমেন্ট এখানে ক্যাটালিস্টের কাজ করেছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু ভারতের সেই একরোখা ডিপ্লমেসিতে ভরসা রাখার ফল আজকে আপনাদের চোখের সামনে। [মোদী আর আমেরিকার ফরেন মিনিস্টারের ছবি/ভিডিও ভারত ভিজিটের সময়। সম্ভবত মার্চ মাস নাগাদ]
সবশেষে, আসি রাশিয়ার কথায়। ভারতের সবচেয়ে পুরনো বন্ধু। নিজের দেশে হাজার একটা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও যারা যেকোনো পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারতের। ১৯৭১-এ যখন ইউএস, ইউকে এবং চিন সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানকে সাপোর্ট করেছে। একটা সময় যখন যুদ্ধে বিধ্বস্ত হয়ে হতাশ হয়েছে ভারত, ঠিক তখনই বন্ধুর মত পাশে দাঁড়িয়েছে মস্কো। সাবমেরিন ও অনান্য সামগ্রী এগিয়ে দিয়েছে তারা। গোটা বিশ্ব ভারতকে রকেট টেকনোলজি নিয়ে তথ্য শেয়ার করতে বিরত থাকলেও, পাশে থেকেছে রাশিয়া। জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে পশ্চিমাদের শায়েস্তা করতেও ভারতের ভরসা জুগিয়েছে দেশটা। তাই আজ সে ভারতের আত্মীয়। রাশিয়া থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল কিনছে ভারত। হয়ত ঋণ চুকিয়ে দিচ্ছে এভাবেই। এবং বাকী দেশের মতই একইসঙ্গে আপ্যায়ন করছে বহুদিনের এই বন্ধুদেশকে।
এভাবেই, একে অপরের সাথে যুদ্ধরত দেশগুলোকে এক ছাতার তলায় আনে ভারত। এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ। এককথায় একতার বার্তা। আর এখানেই জিতে গিয়েছে ভারতের কূটনীতি। স্বাধীনতার পর থেকে এতগুলো বছর পেরিয়ে ভারতের এই অস্তিত্ব প্রমাণ এবং লিডারস্বরূপ ব্যবহার – এটা কম বড় অ্যাচিভমেন্ট? প্রশ্ন একটাই, ভারত কী গোটা বিশ্বকে শান্তির পথ দেখাতে পারবে? ঐক্যের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে? সেটা হয়তো সময়ই বলবে, তবে জি-২০-তে ভারতের প্রতিনিধিত্ব সাফল্যের আলো তো বটেই। প্রতিবেদনটি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।