Market

পৃথিবীর শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে আমেরিকা বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আজ বলে নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই আমেরিকা নিজের প্রভাব, ক্ষমতা গোটা পৃথিবীতে ছড়াতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমেরিকা এখন গোটা বিশ্ব অর্থনীতির মূল চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার প্রশাসন থেকে শুরু করে মার্কিন মুলুকের যে কোন সরকারি নীতিই এখন বিশ্বমঞ্চে ভালোরকম প্রভাব ফেলেছে। তাই আমেরিকার সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখতে চায় সকলেই। মার্কিন মুলুকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি করে এক মজবুত অর্থনীতি গড়ে তুলতে চায় প্রতিটি দেশ। সেদিক থেকে বঞ্চিত নয় ভারত।
–
ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সু-সম্পর্ক অনেকদিনের। কিন্তু কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পর ভারত বিশ্বমঞ্চে নিজের জায়গা অনেকটাই পাকা করে নিয়েছে। বিদেশের সঙ্গে কূটনৈতিকগত অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি ভারত ঝোপ বুঝে যেভাবে নিজেকে তুলে ধরতে চাইছে তাতে বাহবা কুড়োতেই পারেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও একের পর এক দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও পোক্ত করার চেষ্টা করছেন। খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বর্তমানে গ্লোবালি ভারত এমনই একটা নাম হয়ে উঠেছে যেখানে বিদেশের একাধিক প্রথম সারির সংস্থা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম এলন মাস্ক। বিশ্বের ধনীতম এই ব্যক্তিটি কিন্তু বহুদিন থেকেই ভারতের বাজারকে ধরার টার্গেট নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে মার্কিন মুলুকের বাণিজ্যিক সম্পর্ক একটা ভালো জায়গায় পৌঁছচ্ছে। এবার সেই ছবিটাই আর স্পষ্ট হল সাম্প্রতিক একটি তথ্যে।
২০২১-এ ভারত এবং আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক এক ধাক্কায় ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছে গিয়েছে ১১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বিভিন্ন ধরণের পেট্রোলিয়াম প্রোডাক্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং গুডস, জেমস, জুয়েলারি, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে সামুদ্রিক পণ্যের মত বেশ কিছু জিনিসের আমদানি-রফতানি এখন অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে। গেল বছর ভারত আমেরিকাকে রফতানি করে লাভ করেছে প্রায় ৭১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে আমেরিকা ভারতে রফতানি করে আয় করেছে ৪১.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
আমেরিকা এমনই একটি রাষ্ট্র। যার সঙ্গে ভারত সু-সম্পর্ক বজায় রাখলে ভারতের বাজারই গোটা বিশ্বে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। থিতু হবে ভারতের বাজার। অন্যান্য দেশও তখন ভারতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেখাবে। ফলে ভারতের সঙ্গে মার্কিন মুলুকের সম্পর্কটা ভালো হওয়াই প্রয়োজন। তাতে করে ভারত এবং আমেরিকা- বাণিজ্যিক সম্পর্কের দিক থেকে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠবে। আর মনে করা হচ্ছে, অতিমারি আবহে ভারত এবং আমেরিকার অবস্থা যেভাবে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে প্রায় চার বছর পর জো বাইডেনের সরকার মোদী সরকারের সঙ্গে বাণিজ্যের চাকাটিকে ভালোভাবে ঘোরাতে ইচ্ছুক। আর ভারত যদি মার্কিন মুলুকের ডাকে সাড়া দেয় তবে বিশ্বমঞ্চে ভারতের বাজার নিঃসন্দেহে উল্কার গতিতে ছুটবে। বলুন তো, সেই সুযোগ কোন সরকার মিস করতে চায়? সেটাই বুলস আই হয়েছে ভারতের। অন্যদিকে চিনের সরকারও চাইছে ভারতের বাজারকে ভালোভাবে ধরতে। বিশ্ব বাজারে রীতিমত আগ্রাসী মনোভাব বজায় রেখেছে চিন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, ভারত আমেরিকা এবং চিনের সঙ্গে একইতালে হাঁটতে চাইছে কিনা সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।
তবে যত যাই হোক ভারতের সঙ্গে মার্কিন মুলুকের সম্পর্ক তো শুধু একটি প্রতিবেদনেই ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তাই একে একে অনেকগুলি প্রতিবেদনের মাধ্যমে ভারত এবং মার্কিন মুলুকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব আমরা। তার জন্য কিন্তু আপনাদের নজর রাখতে হবে বিজনেস প্রাইম নিউজে।
ব্যুরো রিপোর্ট