Daily
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো যুদ্ধ। যা এখনও চলমান। রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধটি হলেও এর ফল ভোগ করছে সমগ্র বিশ্বই। বিশ্ব বাজারে ব্যপক মন্দা থেকে শুরু করে চড়া হারে মূল্যবৃদ্ধি। করোনা অতিমারির পর এই যুদ্ধের ধাক্কা কার্যত নাজেহাল করে দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। এমন সময় ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপে রাখতে আর রাশিয়ার আগ্রাসন রুখতে নিষেধাজ্ঞার জাল বুনেছিল আমেরিকা সহ পশ্চিমা মিত্র দেশগুলি। একই সময় আমেরিকা চেয়েছিল ভারতকে চাপে রেখে রাশিয়ার থেকে দূরত্ব তৈরি করাতে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত আঙুল দেখিয়ে স্বল্প মূল্যে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করে চলেছে ভারত।
অর্থনৈতিক অবরোধের কারণে জ্বালানির দামের বেশ ভালোরকম পতন হয়েছে রাশিয়ার। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাশিয়ার থেকে স্বল্প মূল্যে, জাহাজের পর জাহাজ তেল আমদানি করে চলেছে ভারত। আমেরিকা ও ইউরোপের বাতিল করা তেলের চুক্তির কারণে বাড়তি তেল গুলি ভারত স্বল্প মূল্যে কিনতে সক্ষম হচ্ছে। রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের এই সুযোগকে এক কথায় লুফে নিচ্ছে ভারত। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে যেটি শ্রেয়, সেটিই করবে সরকার। অর্থাৎ পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে পরোয়া করছে না দিল্লি। ভারত কোনোবারই এর আগে রাশিয়ার জ্বালানি তেলে এতটা আগ্রহ দেখায়নি। আর এর মূল কারণ হল পরিবহন ব্যয়। রাশিয়ার ইএসপিও কোজমিনো থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য ভারতকে পারি দিতে হয় এক দীর্ঘ পথ। আর ভারত সেই সূত্রে এত মোটা অঙ্কের পরিবহণ খরচ ব্যয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতো না। যাত্রা পথে দীর্ঘ হলেও যতদিন দাম আকর্ষণীয় থাকবে এবং বাণিজ্য অবরোধ আরোপিত না হবে ততদিন পর্যন্ত রাশিয়া থেকে ভারতের এই তেলের প্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, সৌদি আরব এবং ইরাক থেকেই সিংহভাগ তেল আমদানি করে থাকে ভারত। ইএসপিও ক্রুডের বেশিরভাগটাই কিনত চিন। ভারতও এখন পাল্লা দিয়ে ইএসপিও থেকে তেল কেনায় এক কথায় ভারত ও চিনের মধ্যে তেল কেনা নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতার মহল তৈরি হয়েছে। ইএসপিও এর তেলের দাম মধ্যপ্রাচ্যের তেলের দামের চাইতে অনেকটাই কম। আর তাই স্বাভাবিক ভাবেই সৌদি আরব এবং ইরাক থেকে ভারত আগে যা তেল ক্রয় করতো তার বেশির ভাগটাই এখন ক্রয় করছে রাশিয়ার থেকে।
বিজনেজ প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ