Trending
আমেরিকা ঘুরে এসেছেন তিনি। কানাডা, ফ্রান্স কত জায়গায় না তিনি ঘুরছেন। সঙ্গে জোর কদমে চলে মোদী বন্দনা। দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে যতই মোদী বিরুদ্ধ স্বর বেজে উঠছে, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে মোদী বন্দনা থাকবেই। কেউ কাঁদছেন, কেউ হাসতে হাসতে বিগলিত করুণায় মাথা নত করছেন। আর কেউ কেউ তো সেলফি, হ্যান্ডশেক…মোদী নিজেও বুঝতে পারেন না কী করবেন না করবেন। এতো ফ্যান ফলোয়ারস…সত্যিই মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। কিন্তু এবার যেন দৃশ্যপটে আমরা কিছু পরিবর্তন দেখছি। এই পরিবর্তন দেশের মাটিতে নয়। খোদ বিদেশের মাটিতেই। কয়েকদিনের মধ্যে। এবার হঠাৎ দেখা গেল স্ক্রিপ্টে বদল এলো যেন। প্রবাসী ভারতীয়রা মোদীর ওপর বিরক্ত হচ্ছেন। তারা রেগে যাচ্ছেন। মোদী আসছেন থেকে ডিরেক্ট চোপ, এটা সরকার চলছে? গোছের একটা ধ্যানধারণা তৈরি হচ্ছে। কেন এসব কথা বললাম বলুন তো? জানতে হলে শেষ পর্যন্ত অ্যাটলিস্ট ভিডিও-টা দেখুন।
মূল্যবৃদ্ধি দেশের একটা খুব বড় ইস্যু। এই ইস্যু ধীরে ধীরে মোদী সরকারকে নাগপাশের মতন জাপ্টে ধরছে। মুশকিল হচ্ছে, এই বিজেপি সরকার তো কাউকেই, কোন কিছুকেই বিশেষ পাত্তা-টাত্তা দেয় না। সুতরাং সরকার দেশের মাটিতে কী পদক্ষেপ নিল, সেটা নিয়ে তেমন একটা তাঁরা ভাবিত থাকেন না। কারণ বিদেশের মাটিতে মোদীর খুঁটি শক্ত। এবার মুশকিল হচ্ছে, মোদী সরকার বুঝতেও পারেনি যে দেশের ইস্যু নিয়ে বড় পদক্ষেপ নিলে সেটা বিদেশের মাটিতে ভালোরকম সমস্যায় ফেলে দেবে। সেটা কী জানেন? চাল। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। চাল নিয়ে মোদী সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন। মোদী সরকার সেই নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য এখন থেকেই বিভিন্ন ইস্যু সমাধানের চেষ্টা করছেন। যদিও মণিপুর- আপাতত, দক্ষ কর্মীর অভাব- আপাতত…এই আপাতত বিষয়টা কেন? এগুলো ফিউচার টেন্সে। আর বর্তমান ইস্যু কী? দেশের আর্থিক গতিবৃদ্ধি। এমন একটা সময়ে দাঁড়িয়ে অকস্মাৎ মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের মানুষকে বেশি টাকা দিয়ে চাল কিনতে হচ্ছে। সুতরাং বাসমতী বাদ দিয়ে সব চালের রফতানি বন্ধ করা হোক। ব্যস, ঘি পড়ল প্রবাসীদের মুডে।
প্রবাসী মানেই যে তারা সকাল, বিকেল বাসমতী চালের ভাত রেঁধে খাবেন এটা যেন মোদী সরকার ভেবেই নিয়েছিলেন। ট্যাঁকে টাকা থাকলেই সেটা সম্ভব নয়। তাদেরকেও সাধারণ চাল, ডাল ফুটিয়ে রান্না করতে হয়। অতএব, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে বেশ বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। কিরকম? আমেরিকায় থাকেন প্রায় ৪০ লক্ষ ভারতীয়। কানাডায় থাকেন ১৮ লক্ষের বেশি ভারতীয়। মার্কিন মুলুক বা কানাডার নিজের দেশের নাগরিকদের মতন প্রবাসীদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। অতএব চাল নিয়ে চালবাজি! তাঁরাও আর পছন্দ করছেন না। সুতরাং ঘোরালো হচ্ছে পরিণতি। অতএব, এখন যা অবস্থা হচ্ছে, আমেরিকায় যে মুদির দোকানগুলো রয়েছে সেখানে নাকি লাইন পড়েছে। পুরনো স্টক যা আছে সবাই তুলে নিচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়া বলছে, এই সুযোগে চালের দাম নাকি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে মুদির দোকানগুলো। আগে গম নিয়ে যখন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তখনো খুব ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। এবারেও নাকি চালের রফতানি বেঁধে দেওয়ায় সেই অসুবিধা ভালোরকম পোয়াতে হচ্ছে তাদের। শুনে অবাক লাগবে, কানাডার ভারতীয়রা বলছেন, তাঁরা ভারতের গম নয়। কানাডার গম খান। সুতরাং অসুবিধা কোথায়? ভারতের মানুষ ভারতের চাল, গমের জায়গায় যদি কানাডার গম খান তাহলে তো সত্যিই রাগ হবে। কারণ মার্কিন মুলুক তো আর ডলার ডলার স্যালারি বাড়ায়নি। এমনিই ডলারের দাম কমছে। তারাও চিন্তায়। সুতরাং বাসমতী চাল ফুটিয়ে ভাত খাবেন সেটা ভাবাটাও একটু কঠিন। অতএব…কামাল করতে হো মোদীজি।
তবে দেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই পরিস্থিতি খুব একটা স্থায়ী হবে না। দেশের বাজারে চালের দাম কমে গেলেই আর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। তবে প্রবাসী ভারতীয়দের কোনভাবেই রাগাতে চান না মোদী সরকার। এমনিই দেশে গাদা ইস্যু নিয়ে বিজেপিকে ঝড়ঝাপ্টা সহ্য করতে হচ্ছে। এরপর যদি চাল নিয়ে চালাকি করেন তাহলে তো প্রবাসীরা ফোঁস করবেনই। সবসময় কি আর নির্বাচন দেখে সমাধানের পথে হাঁটা উচিৎ? তাহলে এই অবস্থাই হবে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ