বিধানসভা নির্বাচনের আগে বেশ কিছু প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মা-বোনেদের জন্য ঘোষণা করেছিলেন প্রকল্পের। আর মানুষের রায়ে বিপুল ভোটে ফের একবার বাংলার মসনদে ফিরেই ভোটের সময়ে দেওয়া একের পর এক কথা রাখছেন তিনি। আর সেগুলির মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ হোলো মহিলাদের হাত খরচের বিষয়টি। সেই মতো গত কয়েকদিন আগে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলার গৃহবধূদের আর্থিক ভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতোই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প শুরু করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

জানা গিয়েছে প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্প শুরু হলেও ধীরে ধীরে রাজ্যের সমস্ত মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, সমস্ত মানুষের কাছে এই প্রকল্পের সুবিধা তুলে ধরতে হবে।

জানা যাচ্ছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প শুরু হতে চলেছে এই রাজ্যে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ১.৬ কোটি গৃহস্থ পরিবার উপকৃত হবেন। এমনটাই সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে। শুহদু তাই নয়, প্রত্যেক মাসে বাড়ির মহিলাদের একটা অর্থের সংস্থান হবে বলেও দাবি করা হয়েছে সরকারের তরফে। এই স্কিমের মাধ্যমে সাধারণ ঘরের মহিলারা প্রত্যেকমাসে ৫০০ টাকা করে পাবেন। অর্থাত্‍ বছরে ছয় হাজার টাকা পাবেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, তফশিলি জাতি/ উপজাতির শ্রেণির পরিবারের বধুরা প্রত্যেকমাসে ১০০০ টাকা পাবেন। বছরে যা দাঁড়াচ্ছে ১২ হাজার টাকা।

লক্ষ্মী ভান্ডার স্কিমে কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে জেনে নিন বিস্তারিত :

এই স্কিমের মূল লক্ষ হচ্ছে গরীব পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। তফশিলি জাতি/ উপজাতি সহ প্রায় ১.৬ কোটি গৃহস্থ পরিবারে পাশে দাঁড়াতে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আর সেই কারণে এই স্কিম।

এই স্কিমে বাজেট ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

লক্ষ্মীভান্ডার প্রকল্পে আবেদনের ক্ষেত্রে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি মনে রাখতে হবে :

নবান্ন সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে ১.৬ কোটি পরিবারকে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে রাজ্যের সমস্ত মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে এই প্রকল্পে আবেদনের নুন্যতম বয়স হতে হবে ২৫ বছর। শুধু তাই নয়, সর্বোচ্চ ৬৫ বছর পর্যন্ত এই টাকা পাওয়ার জন্যে আবেদন করা যাবে।

তথ্য অনুযায়ী চুক্তি ভিত্তিক কর্মীরাও এই প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। তবে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে অবশ্যই ওই মহিলাকে বাংলার বাসিন্দা হতে হবে। ভিন রাজ্যের কোনও মহিলা এই প্রকল্পের জন্যে আবেদন করতে পারবেননা।

প্রথমদিন থেকে এই প্রকল্পকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট উদ্যোগী। আর সেই কারণে তাঁর রাজ্য প্রশাসনকেও এই প্রকল্পকে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকেও এই বিষয়ে গতি আনতে বলা হয়েছে। সূত্রে খবর, এলাকা ভিত্তিক নামের তালিকা হাতে পাওয়ার পরেই তা খতিয়ে দেখে প্রকল্প রূপায়নের কাজ শুরু করা হবে।

কীভাবে আবেদন করবেন এই প্রকল্পে?

আগামী ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্প চলবে। ‘দুয়ারে সরকার’-এর ক্যাম্পে উপযুক্ত পরিচয়পত্র ও অন্যান্য নথি-সহ লিখিত দরখাস্ত করতে হবে। আপাতত দুয়ারে সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ্মীভান্ডারে আবেদন জানানো যাবে। তবে খুব শীঘ্রই অনলাইনের মাধ্যমেও এই প্রকল্পের জন্যে মহিলারা আবেদন জানাতে পারবেন। যদিও ওয়েবসাইটের বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি। খুব শীঘ্র রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান ওয়েবসাইটটির ঘোষণা করতে পারেন বলে খবর।

লক্ষ্মীভান্ডার প্রকল্পে আবেদনের জন্য যা নথি লাগবে :

পাসপোর্ট সাইজ ফটোগ্রাফ, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, রেশন কার্ড, যে জায়গাতে থাকেন সেই জায়গার প্রামাণ্য নথি। (তবে এক্ষেত্রে বাড়ির ঠিকানার যাবতীয় তথ্য দিলেই হবে), সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির আধার কার্ড থাকাটা প্রয়োজন। রেশন কার্ড, বয়সের প্রমান্য নথি, ব্যাঙ্কের পাসবুকের কপিও জমা দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে পাসবুকের প্রথম পেজটি কপি জমা দিতে হবে। পাশাপাশি একটি বাতিল চেকও জমা দিতে হবে। তবে আপনি যদি SC/ST হিসাবে এই প্রকল্পের জন্যে টাকা পেতে চান তাহলে প্রমান্য নথি হিসাবে আপনাকে দিতে হবে SC/ST সার্টিফিকেট।

ব্যুরো রিপোর্ট