Daily

একের পর এক রেল দুর্ঘটনা। তারপরেও কী হুঁশ ফিরবে না রেলমন্ত্রীর? কুড়িটার বেশি ট্রেন অ্যাক্সিডেন্ট। আর কত মানুষ মেরে গদি ছারবেন তিনি? একটা রেল দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে আরও এক রেল দুর্ঘটনা। মৃত্যুমিছিল। রেলমন্ত্রীর অকর্মণ্যতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
সাতসকালে হাওড়া থেকে মুম্বইগামী সিএমএসটি রেল দুর্ঘটনায় ঘুম উড়েছে সাধারণ মানুষের। ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুরে বেলাইন হাওড়া-মুম্বইগামী ট্রেন। দুর্ঘটনাস্থলের ছবি দেখলে গা শিউড়ে উঠবে। যেন আস্ত ট্রেনের বগি নয়। সবটাই খেলনা। ১৮ টা কোচ ইতিউতি ছন্নছাড়া হয়ে আছে। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই তীব্র যে, লফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল। আর কত মৃত্যু দেখাবেন রেলমন্ত্রী? আর কত মানুষের প্রাণ নেওয়ার পর হুঁশ ফিরবে? নাকি এর পিছনেও কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে?
সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে রেলমন্ত্রীর শেয়ার করা রিলস দেখলে অবাক হতে হয়। গর্বের শেষ থাকে না। অমৃত ভারত প্রকল্পের আওতায় কত না রেলস্টেশনকে অন্তর্ভুক্ত করে সেখানে উন্নয়নের ঝড় তুলেছেন তিনি এবং তার টিম। বন্দে ভারত, অমৃত ভারত থেকে শুরু করে কবচ সিস্টেম চালু করে রেল দুর্ঘটনা আটকানোর কম প্রতিশ্রুতি তো তিনি দেন নি। তাহলে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কবচ সিস্টেমগুলো কাজ করছে না কেন?
২০১৯ থেকে ২০২৪- রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের আমলে ঘটা রেল অ্যাক্সিডেন্টের লিস্ট শুনলে মাথা ঘুরে যাবে আপনাদের।
২০২৩-এর রেল দুর্ঘটনা
২ জানুয়ারি রাজস্থানে সূর্যনগরী এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়।
২ জুন ওড়িশার বাহানগা বাজার এলাকায় করমন্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
৮ জুন মেট্টুয়াপালায়ামগামী নীলগিরি মাউন্টেন রেল দুর্ঘটনা
৯ জুন জনশতাব্দী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
২২ জুন মুম্বইগামী লোকমাণ্য তিলক এক্সপ্রেসে আগুন লেগে যায়
এবার আসা যাক ২০২৪-এর বড়ো রেল দুর্ঘটনার কথায়।
২০২৪-এর বড়ো রেল দুর্ঘটনা
১৭ জুন পশ্চিমবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
১৮ জুলাই উত্তরপ্রদেশে ডিব্রুগড়-চণ্ডীগড় এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
৩০ জুলাই হাওড়া-মুম্বইগামী সিএসএমটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
এই তো গেল ২০২৪ এবং ২০২৩ সালের হিসেব। তাও যাত্রীবাহী ট্রেনের দুর্ঘটনার হিসেব। এর বাইরেও একাধিকবার দুর্ঘটনার মুখে পড়েছে মালগাড়ী। ভেঙে তুবড়ে গিয়েছে মালগাড়ীর একাধিক কোচ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরপরেও কেন হুঁশ ফিরছে না রেলমন্ত্রকের? একাধিকবার রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবীও উঠেছে। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হচ্ছে কি? বরং ২০২৪-এও রেলমন্ত্রীর আসনে বসেছেন সেই অশ্বিনী বৈষ্ণব।
বারবার ঘটতে থাকা রেল দুর্ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে টুইট করে প্রধানমন্ত্রীর উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। রেলের চালকদের কারণে দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোন কারণ- সেটা এখনও খোলাসা হয়নি। তবে রেল দপ্তরে যে নিয়োগ নেই- সেটুকু ঠিক। এবং এত কিছুর পরেও একাধিক শুন্যপদ সেখানে বর্তমান। এমনকি এখনও নিয়োগ সংক্রান্ত কোন আপডেটও নেই।
মোদী সরকারী বা কী ভাবছেন? কি করছেন? রাজনৈতিক সিমানার বাইরে বেরিয়ে সাধারণ মানুষজনের ব্যাপারে কিছুই কি ভাবতে পারছেন না তিনি? নাকি বার বার রেলদুর্ঘটনার পিছনে রয়েছে অন্য কোন রাজনৈতিক অভিসন্ধি? এই যেমন বিভীষিকাময় রেল অ্যাক্সিডেন্ট ঘটলে ভারতীয় রেলের প্রতি আস্থা কমে যাবে। আর ওদিকে বেসরকারিকরণের রাস্তাটা চওড়া হবে। আর যদি সেটাই হয়ে, তাহলে প্রধানমন্ত্রী বা রেলমন্ত্রী দুজনেই চুপচাপ কেন? আর কেনই বা এই পরিস্থতির কোন পরিবর্তন হচ্ছে না?
কী মনে হয় আপনাদের? জানান কমেন্টবক্সে। সঙ্গে দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।