Daily
বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাও আবার জাতির উদ্দ্যশ্যে ভাষণ দিয়ে। শুরু হয়েছে ক্যাবিনেটে কৃষি আইন প্রত্যাহারের আইনি প্রক্রিয়া। তাতেও কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের ঘরে ফিরে যেতে বললেও কৃষকরা কিন্তু এখনি বাড়িমুখো হতে নারাজ।
করোনা অতিমারিতে ভারতীয় অর্থনীতি যখন সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল তখন অর্থব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল একমাত্র এই কৃষিক্ষেত্র। বলা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রী যতই ট্রিলিয়ন অর্থনীতির কথা মুখে বলুন না কেন, ভারতীয় অর্থনীতিতে এখনো চালিকা শক্তি হিসেবে রয়ে গিয়েছে ভারতীয় কৃষিক্ষেত্র। সেই কৃষিক্ষেত্রের অসন্তোষকে বাইপাস করে ভারতীয় অর্থনীতি কিছুতেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। এমনটাই অভিমত কৃষি অর্থনীতিবিদদের। একদিকে যখন কৃষি অর্থনীতির চালিকাশক্তির মূল দাবি, অন্যদিকে তখন রয়েছে ভোট রাজনীতির বড় বালাই। এই দুয়ের টানাপোড়েনে প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হলেন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে। কিন্তু কিছু অমীমাংসিত প্রশ্ন থেকেই গেল।
বিতর্কিত তিন কৃষি আইন এখনো ক্যাবিনেটের অনুমোদন পায়নি। এখনো পার্লামেন্টে শুরু হয়নি প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া। তাই কৃষকরা ঘরে ফিরে যাবেন কী নিয়ে?
কৃষকরা ইমেলে প্রধানমন্ত্রীকে বেশ কয়েকটি দাবির কথা জানিয়েছেন। সেই মেলের উত্তর এখনো পাননি আন্দোলনরত ভারতীয় কৃষকরা। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থেকে সিংঘু সীমান্তে কৃষকদের শহীদ বেদি নির্মাণ। সবই রয়েছে তার মধ্যে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলাকালীন আন্দোলনে মারা গিয়েছেন কমপক্ষে ৭০০-রও বেশি কৃষক। ক্ষতিপূরণ বাবদ কেন্দ্র এখনো একটি পয়সাও ঘোষণা করেননি। কে দেবে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ? দায়িত্ব কার? প্রশ্ন তুলছেন কৃষকরাই।
করোনায় মৃত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যপারে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে আসন্ন পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট মিটে গেলে সরকার যে কৃষকদের উপর বুলডোজার চালিয়ে আবার এই আইন প্রণয়ন করবেন না, তার গ্যারান্টি কোথায়?
কৃষি আইন প্রত্যাহারের পরপরই প্রধানমন্ত্রীর লখনউ সফরে রয়েছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি সফর হলেও যোগী-মোদী একান্ত আলাপচারিতায় বিধানসভা ভোটের কথা যে উঠবেই, এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। সেক্ষেত্রে কৃষকরা দাবি তুলেছেন, যোগী রাজ্যে লখিমপুর খেরিতে অভিযুক্ত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এখনো মন্ত্রীসভায় থেকেই গিয়েছেন। এতো কিছুর মধ্যে এতোগুলো প্রশ্ন যখন রয়েই গিয়েছে তখন কৃষকরা যে যার রাজ্যে বাড়ি ফিরে যাবেন কী হাতে করে?
ব্যুরো রিপোর্ট