Trending
পার্থক্যটা এখানেই। কেউ রকেট সায়েন্স ব্যবহার করে অজানাকে খোঁজে। আর কেউ সেটার অপব্যবহার করে শুধু ধ্বংস করে। তারপরেও শুধুমাত্র ভারতকে চ্যালেঞ্জ জানাবে বলে ধারের টাকায় ৫০ ফুট উঁচু পতাকা লাগায়, আর সেটা নিয়ে বড় বড় কথা বলে। এটা হাস্যকর! পাকিস্তানের জন্য এর চেয়ে ভালো কোন বিশেষণ আর হতেই পারে না। ভারতের সমালোচনা আর ধারের টাকায় ফুটানি- এসব করে আর কতদিন? নিজের দেশের মানুষই তো বিপক্ষে গিয়ে কথা বলছে- সেই হুঁশ কি আছে পাকিস্তানের?
পাকিস্তান সায়েন্স মিনিস্টারের টুইটঃ
আপাতত, পাকিস্তানের জ্বলবে। ভারতের তাতেই চলবে। ভারতের এহেন সাফল্য পাকিস্তানের ইমোশনাল ড্যামেজে যে সুড়সুড়ি দেবে, সেটা ভালোই বোঝা গিয়েছিল। তাই চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ নিয়ে ভারতে যত না হইই হচ্ছে। পাকিস্তানে তার চার ডবল হচ্ছে। যন্ত্রণায় ছটফট করছে চিনও।
একটা মারাত্বক অর্থনৈতিক দোলাচলের পরিবেশ চলছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- যে কিনা ডিসাইড করে গ্লোবাল ইকোনমির হাওয়া কোন খাতে বইবে, সে পর্যন্ত বিপর্যস্ত। চিন থেকে মুখ ফেরাচ্ছে একাধিক ইউনিকর্ন, যুদ্ধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বিদ্বেষ যে পৃথিবীর কাছে একটা দম বন্ধ করা পরিবেশ তৈরি করেছে। আর এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ইসরোর সাফল্য যেন এক পশলা বৃষ্টির জল। তাও আবার মাত্র ৬১৫ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে।
টুইটের স্ক্রিন শট (লাল আন্ডারলাইন করা থাকবে ৯০০ কোটি টাকার নীচে) স্ক্রিনে লেখা থাকবে ‘অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী’
রাশিয়া, চিন বা আমেরিকা- স্পেস রিসার্চের বিষয়ে গোটা বিশ্ব যাদেরকে উদাহরণ হিসেবে দেখে, আজ তাদের চোখের সামনে দিয়েই ড্যাং ড্যাং করে ভারত যদি চাঁদে যায়, সেটা হজম করতে তো সমস্যা হবেই। আর প্রভু চিনের ব্যর্থতায় পাকিস্তান গলা মেলাবে না? যাহ্! এমনটা আবার হয় নাকি?
দেখুন, চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পৌঁছলে গ্লোবাল স্পেস রিসার্চ ইন্ডাস্ট্রির হিস্ট্রি বা জিওগ্রাফিতে যে একটা বড় রকম ছাপ পড়বে, এসব তো সবাই জানে। এবার এই ঐতিহাসিক বা ভৌগলিক মাইলফলক তৈরি করার বিষয়টাকে এক পাশে সরিয়ে রাখুন। মিশন সফল হল কি অসফল হল, এসব তো সময় বলবে। তার আগে আপনারা নিজেরা ভেবে বলুন তো, এই দুর্দিনে দাঁড়িয়ে এই চ্যালেঞ্জটা অ্যাক্সেপ্ট করার স্পর্ধা আর কোন দেশ দেখিয়েছে? মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব, সামাজিক অস্থিরতা ইত্যাদি নানান প্রতিবন্ধকতা রয়েছে ভারতের। তার পরেও তো ইসরোতে এতগুলো টাকা ইনভেস্ট করা হয়েছে। সেটা তো এমনি এমনি নয়।
সারাভাইয়ের কমেন্ট (নেহেরু ভার্সেস সারাভাই)
স্পেস রিসার্চ ইন্ডাস্ট্রিতে ইনভেস্টমেন্ট করা নিয়ে নেহেরু যখন সারাভাইকে বলেছিলেন যে, ভারত একটা গরীব রাষ্ট্র। ভারতের আরও অনেক সোশ্যাল প্রবলেম রয়েছে। যার সমাধান করা অনেক বেশি জরুরী। তাই একটা স্পেস প্রোগ্রামে ইনভেস্টমেন্ট করার মতো সামর্থ্য নেই আমাদের। উত্তরে স্যার সারাভাই বলেছিলেন, আমরা একটা গরীব দেশ। আমাদের অনেক সোশ্যাল প্রবলেম রয়েছে। সেগুলো সমাধান করা জরুরী। আর ঠিক সেই কারণে একটা স্পেস প্রোগ্রামে ইনভেস্টমেন্ট করাটা জরুরী।
তার এই ভিশনই আজ ইসরোকে সাহস যোগাচ্ছে ইতিহাস তৈরি করার। স্যার সারাভাই জানতেন একটা না একটা সময় ইসরোর বাজেট নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই যখন ইসরোর চিফ হিসেবে নিজের কাঁধে তিনি দায়িত্ব তুলে নিলেন সেদিন থেকে নিজের পারিশ্রমিক হিসেবে মাত্র ১ টাকা নিতেন। সেদিনের সেই একটা সিদ্ধান্ত, একটা স্যাক্রিফাইস- আজ ছড়ি ঘোরাচ্ছে মহাকাশবিদ্যায়। স্তম্ভিত হয়ে দেখছে গোটা বিশ্ব। ভারতকে তেল দিয়ে চলছে আমেরিকা এবং জাপানও।
২০ বছর ধরে লাগাতার স্পেস রিসার্চের বাজেট বাড়াচ্ছে ভারত সরকার।
কেন Social Obstacle উপেক্ষা করে Space Research Industry-তে বাজেট বাড়াচ্ছে ভারত? ইসরোতে ইনভেস্টমেন্ট ঠিক কতটা important? (লেখা থাকবে)
সমীক্ষা বলছে, আগামী ৫ বছরে ১৩ বিলিয়ন ডলার থেকে ২৪ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ছোঁবে গ্লোবাল স্পেস ইন্ডাস্ট্রি। একবার যদি এই গ্লোবাল মার্কেটের ২০% এরিয়া ভারত ক্যাপচার করতে পারে, তাহলে স্পেস ইন্ডাস্ট্রির জন্য বরাদ্দ বাজেটের থেকেও ১০ গুণ টাকা আদায় করতে পারবে ভারত। এটা স্যার বিক্রম সারাভাই জানতেন।
চন্দ্রযান কেন ভারতের জন্য ইম্পরট্যান্ট? (Written on screen)
প্রথমত, চাঁদ শুধু একটা উপগ্রহ নয়। জিওপলিটিক্যাল মাইলস্টোনও বটে। চিন রাশিয়া আমেরিকা- গোটা বিশ্বের মাত্র তিনটে দেশই চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করতে পেরেছে। এবার যদি একবার ভারতও সেই দলে নাম লিখিয়ে ফেলে তাহলে ভবিষ্যতে আরও অনেক ইম্পরট্যান্ট স্পেস ইন্টারন্যাশনাল প্রোজেক্টের প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে ভারত।
দ্বিতীয়ত, পৃথিবীকে প্রপারলি স্টাডি করার জন্য চাঁদের থেকে ভালো জায়গা আর হতে পারে না। ওয়েদার আপডেট বলুন বা চায়নার জবরদখল করার কথাই বলুন- ভারত আপ টু ডেট থাকবে সবসময়। খবর দেবে স্যাটেলাইট। ইনফ্যাক্ট মহাকাশে কোন বসবাসযোগ্য প্ল্যানেট আছে কি না সেটা খোঁজ করতেও চন্দ্রযান-৩-এ বসেছে নয়া ইন্সট্রুমেন্ট। নাম- স্পেক্ট্রোপোলারিমেট্রি অফ হ্যাবিটেবল প্ল্যানেট আর্থ।
তৃতীয়ত, সময়ের সঠিক ব্যবহার করে গোটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দেওয়া এত সহজে দমানো যায়না ভারতকে। একটা সময় ভারতের মঙ্গলযান নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছিল নিউ ইয়র্ক টাইমস। ভারত কিন্তু কোন রেসপন্স করেনি। শুধু বেশ কয়েকটা হলিউড সিনেমার বাজেটের থেকে কম বাজেটে চন্দ্রযান-৩ লঞ্চ করে দেখিয়েছে।
স্পর্ধা দেখাতে কলজের জোড় লাগে। যেটা ভারতের আছে। মানতেই হবে। ভারতের বাজারে স্পেস স্টার্টআপ এখন বিশাল হাইপে। ইসরোর গাইডেন্সে সেটা আরও মজবুত হচ্ছে। মাল্টি বিলিয়ন ডলার স্পেস ইন্ডাস্ট্রিতে যার কন্ট্রিবিউশন নিয়ে এখন আর কেউ প্রশ্ন তোলে না। আর যারা সমালচনার জন্য প্রশ্ন তোলেন বা টুইট করেন, তাদের জন্য সমবেদনা। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ। জীবন হোক অর্থবহ।