Market
অর্থনীতির অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে বাংলাদেশে। বাড়ছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সংকট। খাদ্য সংকটের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জলের মত খরচ হয়ে যাচ্ছে ডলার। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের কপালে পড়ছে একের পর এক ফাঁড়া। কী বলছে হাসিনা সরকার? বাংলাদেশকে আর্থিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে আর কোন দাওয়াই কি রয়েছে? আসুন, এই বিষয়েই আলোচনা সেরে নেব আমরা।
বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ এক বছরে কমেছে প্রায় ১,২১৫ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কে বৈদেশিক মুদ্রার এই হার নেমেছে ২৬% মতন। ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ৭৫৫ কোটি ডলার বাণিজ্যের ঘাটতি আলাদা করে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে কার্যত ভেঙে দিচ্ছে। এদিকে সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা। কারণ, মূল্যস্ফীতি বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে মানুষের আয় কমছে। অন্যদিকে বেড়েছে বাজারহাটের খরচ। ফলে হেঁশেল সামলাতে গিয়ে নাকানিচোবানি খাচ্ছেন বাংলাদেশের আমআদমি। স্বাভাবিকভাবেই, বাংলাদেশের মানুষ এখন তাকিয়ে রয়েছেন হাসিনা সরকারের দিকে। অর্থকষ্ট থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য কী পদক্ষেপ তাঁরা নিতে পারেন?
হাসিনা সরকার অবশ্য বাংলাদেশের এই সকল দুশ্চিন্তা থেকে বেরনোর জন্য ভালোরকম যুক্তি খাড়া করেছে। তাঁদের বক্তব্য, যত যাই হোক বাংলাদেশের অবস্থা এখনো পর্যন্ত গভীর খাদে নামে নি। তবে তাঁরা মেনে নিয়েছেন যে বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ চাপেই রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশবাসীকে অযথা আতঙ্কিত হতে বারণ করা হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ যদি স্বাভাবিক হয়ে যায়, তাহলেই শিল্প, কলকারখানার অবস্থা বেশ স্বাভাবিক হবে। তখন উৎপাদনেও আর নতুন করে কোন বাধা আসবে না। আর ডলার সংকট যে দেখা দিয়েছে সেই সংকট অচিরেই কেটে যাবে যদি আইএমএফ পাশে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু এখানেই একটা প্রশ্ন। আইএমএফ বিশ্ব অর্থনীতির যে পূর্বাভাস দিয়েছে, সেটা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার। এর জন্য অবশ্য দায়ি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের বারবার সুদ বৃদ্ধির ট্র্যাডিশন। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড জানিয়ে দিয়েছে, আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরও ভয়াবহ সময় ডেকে আনছে। যে কারণে, ২০২৩ সালে ভালোরকম ধাক্কা খেতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কি আদৌ আইএমএফের সাহায্য পাবে হাসিনা সরকার? সেই প্রশ্নের উত্তরও এখনো পর্যন্ত অধরা। তবে, খাদ্য সংকট নিয়ে যে আশঙ্কার কথা বলা হচ্ছে, সেই বক্তব্য একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হাসিনা সরকারের তরফ থেকে। সরকারের বক্তব্য, আমন থেকে বোরো ধানের ফলন আশানুরূপ ভালোই হয়েছে। কৃষিকাজ যা কিনা বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ, সেটিও আপাতত ঠিক আছে কৃষিক্ষেত্রে কোনরকম বিরূপ অবস্থা তৈরি না-হওয়ার জন্য। কিন্তু সরকারের কোন কথাই আপাতত স্বস্তি দিতে পারছে না বাংলাদেশবাসীকে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতি যেভাবে ভয়াবহ মন্দার দিকে এগোচ্ছে, সেটা কার্যত পঙ্গু করে দিতে পারে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বাজারকে। চাহিদা মতন উৎপাদন না-হতে পারায় বাণিজ্য ঘাটতির আশঙ্কাও তীব্র হচ্ছে। ফলে সবমিলিয়ে বাংলাদেশ এখন দাঁড়িয়ে রয়েছে বিপদসীমায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে হাসিনা সরকারের সাফাই তেমন একটা কাজে আসবে না বলে মনে করা হচ্ছে। বাইরে থেকে দেখলে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার যেন দিশাহীন। আপনার কি মনে হয়? মতামত জানান, আমাদের কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ