Daily

বদলাচ্ছে জলবায়ু। বদল এসেছে পৃথিবীর মতিগতিতে। এই রোদ। এই বৃষ্টি। কখনও তো কথাবার্তা ছাড়াই ঝাঁপিয়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড়। বেশ কিছু বছর ধরেই জটিল অসুখে ভুগছে পৃথিবী। আর পৃথিবীর এই জটিল অসুখের এখন একটাই দাওয়াই। গাছ লাগানো। নদী ভাঙ্গন থেকে পরিবেশ দূষণ হ্রাস। বিশ্ব উষ্ণায়ন থেকে জলবায়ু পরিবর্তন। সবটা সামলাতে সে একাই একশো। তাই জন্যেই তো পরিবেশবিদরা পইপই করে বলে আসছেন, গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান।
গ্রামের নাম হরিণখোলা। নদীয়া জেলার হরিণঘাটার কাস্টডাঙার এই গ্রামে গেলেই আপনি পেয়ে যাবেন চারা গাছ। স্থানীয়ভাবে গ্রামটি চারা গাছের গ্রাম হিসেবেই পরিচিত। দেবদারু থেকে আকাশমণি, আম, জাম কিংবা পেয়ারা গাছ, যেটা চান, সেই গাছের চারাই আছে এখানে। আজ থেকে ৩০-৩৫ বছর আগে মাত্র এক বিঘা জমি নিয়ে এই চারা গাছের চাষ শুরু করেন রবিন বাবু। আজ সেটা বেড়ে ১০০-২০০ বিঘেতে দাঁড়িয়েছে। আর এই চারা গাছই এই গ্রামের সমৃদ্ধির প্রতীক।
গ্রামের ৮ থেকে ৮০ কেউই কিন্তু বেকার নন। এক্কেবারে ১০০ শতাংশ রোজগেরে নিয়ে, কেমন নিঃশব্দে সবুজ বিপ্লব করে চলেছেন তারা। প্যাকেটে মাটি ভরা থেকে গাড়ি লোড হয়ে চারা এক্সপোর্ট হওয়া, সমস্তটাই হয় সুষ্ঠুভাবে। গ্রামের মহিলারা সাধারণত এই প্যাকেটে মাটি ভরার কাজ করে থাকেন। রোজগারও হয় বেশ ভালোই।
প্রায় ৫৫-৬০ হাজার চারা গাছ লোড হয়ে গাড়ি বের হয় এখান থেকে। তা এখানকার চারাগাছ গাড়িতে লোড হয়ে কোথায় কোথায় যায়? খরচই বা কত হয়?
বছরভর চারা চর্চা এবং তোলার কাজে যুক্ত থাকেন প্রচুর মানুষ। কত টাকা রোজগার করেন তারা?
কাজেই এতক্ষনে আমাদের কাছে এটা এক্কেবারে ক্লিয়ার যে হরিণখোলার ব্যবসা বাণিজ্য সম্পূর্ণভাবেই এই চারাগাছ নির্ভরশীল। এবং এই চারাগাছের হাত ধরেই লক্ষ্মী বাস করেন হরিণখোলার ঘরে ঘরে। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, পৃথিবীর এই গভীর অসুখের দিনে দাঁড়িয়ে, হরিণখোলার মানুষজন গোটা পৃথিবীর কাছে একটা উদাহরণ তৈরি করেছে।
সুব্রত সরকার
নদীয়া