Market
ভারতের পণ্য ও পরিষেবা কর জিএসটি দেখতে দেখতে চার বছর পূর্ণ করল। স্বাধীনতার পর ২০১৭ সালে ৩০ জুন মধ্যরাতে পার্লামেন্টের দুই কক্ষে যৌথ অধিবেশনে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে পাশ হয় জিএসটি। স্বাধীন ভারতে মধ্যরাত্রে স্বাধীনতার ঘোষণা আর জিএসটি বাদে কখনই সেন্ট্রাল হলে অধিবেশন ডাকা হয়নি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে, ভারতের মত জনবহুল দেশে জিএসটি বিল পাশ করানোটা ছিল নিঃসন্দেহে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা।
সেই ২০১৭ থেকে এখনও পর্যন্ত জিএসটি পরিষদের বিভিন্ন বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা প্রায় কয়েকশো সংশোধন এনেছেন। কিন্তু এত বড় দেশে পরোক্ষ করকাঠামোয় রাতারাতি পরিবর্তনকে আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশ রীতিমত সারজিকাল স্ট্রাইকের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কেউ কেউ তো আবার একে কেন্দ্রের গব্বর সিং ট্যাক্স বলেও উল্লেখ করছেন।
অথচ জিএসটি’র ইতিহাস বলছে আজকে যেটা পণ্যপরিষেবা কর তার সূচনা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। রাজীব গান্ধী যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন অর্থমন্ত্রী বিশ্বনাথপ্রতাপ সিং ভারতীয় পরোক্ষ করকাঠামোয় সংশোধনের চেষ্টা করেন। এরপর দিল্লির পার্লামেন্ট স্ট্রিটে একের পর এক সরকার এসেছে। সরকার গিয়েছে। জিএসটিও সঙ্গে সঙ্গে চলেছে কখনও দ্রুত গতিতে কখনও ধীর গতিতে। এরপর অটল বিহারি বাজপেয়ির জমানায়, পিভি নরসিংহ রাওয়ের জমানায়, মনমোহন সিংয়ের জমানায় একটু একটু করে এগোতে থাকে ভারতের প্রস্তাবিত পণ্য পরিষেবা কর আইন। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সংসদে পাশ হয় এই পণ্য পরিষেবা আইন। বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোথাও ০ শতাংশ, কোথাও ৫ শতাংশ, কোথাও ১২ শতাংশ, কোথাও ১৮ শতাংশ, কোথাও আবার ২৮ শতাংশ হারে এই কর চাপানো হয়।
ভাবা হয়েছিল, এই আইন ভারতীয় পরোক্ষ কর কাঠামোকে আমূল বদলে দেবে। বদলে দেবে রাজ্যগুলির রাজকোষে ঘাটতির পুরনো ঐতিহ্যটাকেও। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যগুলি তাদের বকেয়া পাওনা চেয়ে রোজই কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লিখছে। কেন্দ্রও রাজ্যগুলিকে তাদের প্রাপ্য বকেয়া মেটাতে পারছেনা। পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা সরব হয়েছেন করের ভাগে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে। অভিযোগ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৩ সালে যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি এই জিএসটির বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন।
ব্যুরো রিপোর্ট