Daily
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের দিল্লি ফিরে যাওয়ার দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে রাজ্যে।
দায়িত্ব নিয়েই প্রথম দিন থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক গণ্ডি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আসছে শাসক তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এ রাজ্যে রাজভবনে বসে বিজেপির একজন দলীয় মুখপাত্র হিসেবে কাজ করে চলেছেন। অন্যদিকে, পদ্ম শিবিরের বক্তব্য, নিয়ম নাস্তি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে আইনের অনুশাসন ফিরিয়ে আনতে জগদীপ ধনকড় বদ্ধপরিকর বলেই শাসক তৃণমূলের সঙ্গে তার এত বিরোধ।
কেন্দ্রে ইন্দিরা গান্ধীর সময় থেকেই রাজ্যে রাজ্যে রাজ্যপাল পদটিকে ঘিরে বিতর্ক কিছু কম হয়নি। এমনকি ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, বেশকিছু সংবিধান বিশেষজ্ঞ রাজ্যপাল পদটিকে ‘সেন্ট্রাল এজেন্ট’ বলেও ব্যাখ্যা করেন। এক্ষেত্রে জগদীপ ধনকড় কোন ব্যতিক্রম নন। পশ্চিমবঙ্গে যুক্তফ্রন্টের আমল থেকেই রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ধরমভীরার সঙ্গে বামফ্রন্টের বিরোধ ছিল সংবাদমাধ্যমের বহুল চর্চিত বিষয়।
এতদিন রাজ্যে তৃণমূল যে দাবী তুলে এসেছিল এবার সেই দাবিতে সমর্থন জানালো বামফ্রন্ট। সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু অবিলম্বে এই রাজ্যপালকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছেন। একই দাবি তুলেছেন তৃণমূলের তরুণ তুর্কি সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মহুয়া টুইট করে বলেন, আঙ্কেল জি যেন আর রাজ্যে না ফিরে আসেন।
কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধের মধ্যেই দিল্লি সফরে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় তাঁর দিল্লির বসদের খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি বলেই সূত্রের খবর। দিল্লীর দরবারের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে আজ সাক্ষাৎ করলেও সেখান থেকে কোন সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসে কিনা সেটাই এখন দেখার।
রাজ্য সরকার রাজ্যপাল দ্বৈরথে যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি একটু একটু করে উত্তপ্ত হচ্ছে ঠিক তখনই রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করানোর চিন্তা করছে শাসক তৃণমূল। এদিকে রাজ্য বিজেপিও মরিয়া জগদীপ ধনকড়কে রাজ্যে রাখতে। কিন্তু জগদীপ ধনকড় রাজভবনের চাকরিতে আর কতদিন বহাল থাকবেন একান্তভাবে নির্ভর করছে তার দিল্লির বসদের উপর।
রাজ্যপাল সাংবিধানিক গন্ডি লঙ্ঘন করে যেভাবে রাজ্য সরকারের দৈনন্দিন কাজে হস্তক্ষেপ করছেন তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলেই সংবিধান বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
ব্যুরো রিপোর্ট, বিজনেস প্রাইম নিউজ।