Trending
ফ্রি ক্যাফেটেরিয়া, ফ্রি মাসাজ, ফ্রি জিম, আনলিমিটেড ওয়ার্ক ফ্রম হোম- মনোপলি মডেলে গুগলের চিল-পিল বেশ ভালোই চলছিল। ২৪ বছর ধরে টেক টেরিটোরিতে একচ্ছত্র রাজ করার পর এটুকু রিলাক্সেশন করাই যায়! কী বলেন? কিন্তু ওই, কপাল খারাপ হলে যা হয়। নইলে কচ্ছপ খরগোশের দৌড়ে কচ্ছপ কোনোদিন জিততে পারে?
মাত্র এক রাতের ব্যবধান। আর সেই এক রাতের মধ্যেই খেলা ঘুরে গেল। গুগলের ২৪ বছরের একাধিপত্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল চ্যাটজিপিটি। না, শুধু চ্যাটজিপিটি বললে যুদ্ধের গুরুত্বটা বোঝানো যাবে না। বলা ভালো মাইক্রোসফটের ইনভেস্টেড ওপেনএআই-এর লঞ্চ করা চ্যাটজিপিটি। চ্যাটজিপিটি বাজারে আসা মাত্রই গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই কোড রেড ইস্যু করেন। ডাক পরে গুগল ফাউন্ডারদের। মিটিঙের পর মিটিং চলতে থাকে অফিসে। existential crisis-এ শোরগোল পরে যায় গুগলের অফিসে। হবে নাই বা কেন বলুন?
বাজারে আসার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ১ মিলিয়নের চেয়েও বেশি ফ্যানবেস তৈরি করে চ্যাটজিপিটি। আজ ১০০ মিলিয়নের বেশি ইউজার রয়েছে তার। ২৪ বছর ধরে শাসন করার পর গুগলের ইউজার কত? ১ বিলিয়ন। বেসিক্যালি সমস্যাটা শুরু হয় মাইক্রোসফটের ইনভেস্টমেন্ট থেকে। টেক জায়েন্ট গুগলকে একহাত নেওয়ার অস্ত্র একমাত্র টেক টাইটান মাইক্রোসফটেরই রয়েছে। Bing, Fourth largest ad revenue generator.
ধরুন আপনার এক দিকে রয়েছে গুগল। আর অন্যদিকে রয়েছে মাইক্রোসফটের বিং যার সঙ্গে আবার চ্যাটজিপিটি অ্যাসসিয়েটেড। আপনি কোনটা চুজ করবেন? সেকন্ড অপশন রাইট? এটাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা প্রত্যেকে জানি যে চ্যাটজিপিটি একটা রেভলিউশনারি প্রোডাক্ট। কিন্তু গুগল পিছু হাঁটার পাবলিক নয়। গুগল যুদ্ধ করবে, আর গুগলের এই যুদ্ধের সেনাপতি হচ্ছে বার্ড। এই মুহূর্তে গুগলের কাছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে। কিন্তু এই অ্যাসেটই তো যথেষ্ট নয়। কারণ গুগলের টার্গেট হচ্ছে আমেরিকার সিলিকন ভ্যালির ম্যাজিককে ফিরিয়ে আনা। আর সিলিকন ভ্যালির ম্যাজিক শুধু সম্পত্তি নয়। সিলিকন ভ্যালির ম্যাজিক হচ্ছে, কিছু করে দেখানোর স্পিরিট। দু’বছর আগে গুগল ল্যামডা প্রজেক্টের বিষয়ে কথাবার্তা শুরু করে। ল্যামডা একটা সিক্রেট প্রোজেক্ট, আর এটা রটেছিল যে ল্যামডা নাকি চ্যাটজিপিটির থেকেও বেশি কার্যকরী। আপনারা নিশ্চয়ই ভাবছেন, এতকিছুর পরেও গুগল কেন ল্যামডাকে ডিসক্লোজ করলো না?
যখনই কোন কোম্পানি অনেক বড় হয়ে যায়, তখন তার তার প্রোডাক্ট শিপমেন্টের প্রসেস অনেক স্লো হয়ে যায়। প্রত্যেক ম্যানেজার তাদের ডিফারেন্ট ডিফারেন্ট লেভেলে নিজেদের ভ্যালু এস্টাব্লিশ করার অজুহাতে প্রোডাক্ট শিপমেন্টের প্রসেস সাফার করে। গুগলের ক্ষেত্রে যেটা ভীষণভাবে রিলাটেবল। অন্যদিকে চ্যাটজিপিটির টিম মেম্বার কত? মাত্র ৩৭৫ জন। সো ডিসিশন মেকিং প্রসিডিওর থেকে শুরু করে প্রোডাক্ট শিপমেন্ট, এই এন্টায়ার প্রসেস অনেকটা স্মুদ এবং ফাস্ট। তবে, গুগলের ক্ষেত্রে এই সমস্ত কিছু বার্ডের সঙ্গে বদলাচ্ছে। কারণ চ্যাটজিপিটির থ্রেট গুগলের শেয়ার প্রাইসকে মারাত্বকভাবে এফেক্ট করেছে। তাই গুগল তার বাকি সমস্ত প্রোজেক্ট পজ করে রেখে এখন শুধু ল্যামডার ডেভলপমেন্টেই ফোকাস করেছে।
বিজনেস ওনারর্সদের জন্য এখানে একটা important insight share করাটা জরুরী। এখন যেকোনো গুগল সার্চ করলে আপনার কাছে ১০ টা ওয়েবসাইটের অপশন পাচ্ছেন। মানে যেকোনো ফিল্ডে ১০ জন করে উইনার থাকতে পারছে। কিন্তু নতুন ফরম্যাটে প্রতিটা ফিল্ডে মাত্র একজনই উইনার হবে। মানে সার্চ ইঞ্জিন আপনাকে মাত্র একটিই অপশন দেবে, আর সেটা হচ্ছে, যে গুগল বা মাইক্রোসফটকে সবচেয়ে বেশি পয়সা দেবে। future is basically a monopoly of things. যেখানে Google এবং Microsoft পুরো দমে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে।
এতকিছুর পর এটুকু ক্লিয়ার যে লড়াইটা চ্যাটজিপিটি ভার্সেস বার্ডের নয়। লড়াইটা গুগল ভার্সেস মাইক্রোসফটের। আপনি যদি আমার মতামত চান, তাহলে আমার মনে হয়, এই যুদ্ধের উইনার সেই হবে, যার সেন্সর বোর্ড কম রেস্ট্রিক্টেড হবে। আমাদের ব্রেনে থাকা লিম্বিক সিস্টেম এবং প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স একজ্যাক্টলি এইভাবেই কাজ করে। আমাদের লিম্বিক সিস্টেম প্রত্যাশা করে আর প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স সেইসমস্ত এক্সাইটমেন্টকে কন্ট্রোল করে। একজ্যাক্টলি যেভাবে জেলার চ্যাটজিপিটির মতো টুলকে কন্ট্রোল করে এবং ইনোভেট করে। আর যার এই কন্ট্রোল করার এবিলিটি যত বেশি, সেই হাসবে শেষ হাসি।
বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ।