Daily
“সোনার ফসল ফলায় যে তার/ দুই বেলা জোটে না আহার” আজ হীরক রাজ কোন ব্যক্তি নন, স্বয়ং প্রকৃতি। কৃষকের চোখে জমা হয়েছে ভয়, জমা হয়েছে অনিশ্চয়তা। যে পরিস্থিতির মুখোমুখি গরীব কৃষকের দল, তাঁদের ত্রাতা হয়ে আসবে কে? সরকার কি আসবে? এগিয়ে আসবে তাঁদের কৃষি ঋণ মকুব করে দিতে? কেন বলছি জানেন? তাহলে আমাদের সঙ্গে দেখে আসবেন চলুন পূর্ব বর্ধমান। সেখানেই আমাদের প্রতিনিধির ক্যামেরা পৌঁছে গিয়েছিল।
পূর্ব বর্ধমানের গলসির হরিপুর, রামপুর, গলিগ্রাম, ইরকোনা, বিরপুর, চান্দুল, ঝিংউটি, তালিত, আলমপুর এবং হেলদি মৌজার অধিকাংশ চাষি সর্বস্বান্ত। কারণ মাঠেই ঝরে গেছে গাছপাকা সোনার ফসল। খলনায়ক আচমকা আসা ঝড় এবং শিলাবৃষ্টি। জমিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে জল। আর তারপরেই কার্যত মাথায় হাত চাষিদের। মাঠ জুড়ে এখন শুধুই চলছে হাহাকার। এখন ধান জমিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে শুধু ধানবিহীন গাছ। যা দেখে গলসির চাষিরা হতাশ। কেউ করেছেন দশ বিঘা জমিতে চাষ, কেউ বা করেছেন বারো বিঘা জমিতে চাষ। বিঘের পর বিঘে ধান চাষ করেও দিনের শেষে লাভ শূন্য। বরং ক্ষতির বোঝা এমনই বাড়ছে যে আজ চারিদিক অন্ধকার। কৃষকরা কী করবেন, কিভাবে চলবে সংসার- তাঁরা নিজেরাও জানেন না।
এঁদের বাড়িতে কোন চাকুরীজীবী নেই। এদের বাড়িতে কোন ব্যবসায়ী নই। একেবারে প্রান্তিক খেটে খাওয়া কৃষকদের সংসার চলে এই ধান জমি চাষ করেই। চাষ করার জন্য তাঁরা লোন নেন। সেটা কখনো ব্যাঙ্ক থেকে, তো কখনো মহাজনের কাছ থেকে। এতো এতো টাকা লোন, এদিকে প্রকৃতির অকালমর্জির কারণে কি যে কী করবেন, সেই ভেবে কূল পাচ্ছেন না এলাকার চাষিরা। তাই সরকারকে পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা।
ধান গাছে শিষ ছিল ভালো। কয়েকবছর ক্ষতির পর এবারের বোরো চাষে ধানের ফলন দেখে মুখে হাসি ফুটেছিল গলসি এবং বর্ধমান উত্তর সহ বিভিন্ন এলাকার চাষিদের। সোনার ফসল তুলতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় সেই ধান কাটা শুরুও হয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। এঁরা প্রত্যেকেই প্রান্তিক চাষি। গরীব শ্রমজীবী কৃষক। গরিবের ভাগ্যে আজ বড়ই বিপদের কোপ। এখন তাঁরা কী করবেন? সরকারি বদান্যতা কি পাবেন তাঁরা? প্রশ্নটা রাখলাম আপনাদের কাছে। মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
বিক্রম লাহা
পূর্ব বর্ধমান