Story
বি পি এন ডেস্কঃ গুড় বাংলা ও বাঙালির জীবনে বেশ পরিচিত। গুড়ের নাম শোনেন নি এমন বাঙালি বোধহয় দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হবে। বাংলা ও বাঙালির জীবনে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে হরেক কিসিমের গুড়। আখের গুড়, খেজুরের গুড়, তালপাটালি, ঠিলে গুড়, চিটে গুড় আরও কত কিছু। এমন কোন বাঙালি রসনা পাওয়া যাবে না যে কোন না কোনভাবে গুড় চেখে দেখে নি। বলা যেতে পারে, বাঙালির বর্ণময় জীবনে রসালো দিকটাকে মিঠে করেছে গুড়ই। তবে আজ এমন এক ওষধি গুড়ের কথা শোনাব, যা এই বাংলার বাঙালিদের কাছে বেশ অপরিচিত। হলফ করে বলাই যায় এ বঙ্গের প্রায় একশো শতাংশ বাঙালি নামই শোনেন নি গোলের গুড়ের। বাংলাদেশের পটুয়াখালি সহ সুন্দরবন অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় ও অর্থকারী হয়ে উঠেছে এই গোলের গুড়। অথচ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে আছে গোলপাতার জঙ্গল। এখানে মানুষ থেকে সরকার কারোরই হেলদোল নেই এই বিষয়ে। ডায়াবেটিস থেকে সোডিয়াম পটাশিয়ামের রুগি সকলেরই জন্য বেশ উপকারি এই গুড়। এতো গেল এর ওষধি গুণের কথা। এছাড়া নদী ভাঙ্গন রোধেও বেশ কার্যকরী গোলগাছ। পরিবেশবিদদের মতে, নদীবাঁধের নিচে সারি দিয়ে গোল গাছ লাগালে বাঁধের কার্যকারিতাও অনেকগুণ বেড়ে যায়। সর্বোপরি, এদেশে বহু আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় গোলের গুড় যা কিনা আমদানি করা হয় বাংলাদেশ থেকে। কিন্তু এখানকার সুন্দরবন থেকে ১ কেজি গুড়ও এদের ওষুধ শিল্পে ব্যবহার করা হয় না। অথচ এখানকার বনজীবি গরীব মানুষেরা যদি জীবন বাজি রেখে বনে না গিয়ে শুধুমাত্র নদীর ধারে গোলের গুড় উৎপাদনে ব্যস্ত থাকত তাহলে বদলে যেত এলাকার অর্থনৈতিক চিত্রটা। গোলগাছের কাণ্ড কাটলেই বের হয় গোলের রস। আর সেই রস মাটির কিংবা অ্যালুমিনিয়ামের কলসিতে ধরে বাড়িতে জ্বাল দিলেই তৈরি হয় গোলের গুড়। এই গাছের ফলের শাঁসও খেতে অনেকটাই তালশাঁসের মত। গোলপাতা ঘরের ছাউনির পাশাপাশি জ্বালানীর কাজেও ব্যবহার করা হয়।