Trending
হীরক রাজার দেশের বৈজ্ঞানিকের সেই ফুলের কথা মনে পড়ে? যে ফুল একটানা ৬ মাস একেবারে তাজা থাকত? সেই ফুল ঝরেও না- পরেও না। রং যেন তার হাতে আঁকা। একেবারে পাকা- খাঁটি। তেমনই এক ফুল সত্যিই চাষ হচ্ছে শিলিগুড়িতে। চোখ ধাঁধানো রং। ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখলে, ৬ মাস না হোক, মাসখানেক দিব্যি টিকে থাকবে। নাম, জারবেরা। ঘর সাজানো হোক বা আনন্দ অনুষ্ঠান। সাজসজ্জায় জুড়ি মেলা ভার জারবেরার। বিয়ে, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন- হুজুগে বাঙালির অনুষ্ঠান লেগে থাকে বছরভর। তাই জারবেরার চাহিদাও সারাবছরেরই। বিদেশ বলুন বা ভিন রাজ্য, জারবেরার চাষ এবং জনপ্রিয়তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এই বাংলায় জারবেরার এই জনপ্রিয়তা যে বাড়ছে, তার নেপথ্যে কে?
নাম উৎপল ব্যানার্জি। বাড়ি, শিলিগুড়ি। উত্তরবঙ্গে তিনিই প্রথম এই জারবেরা চাষ করার সাহস দেখান। শুধু চাষ নয়, ভিন রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণে রপ্তানি করেও তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উৎপল বাবু। ২০০৪ সাল ১০০০ বর্গমিটার জমিতে চাষ শুরু করেন তিনি। পলি হাউস পদ্ধতিতে। কারণ জারবেরা চাষের সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে পলিহাউস। আর সেটা বানাতেই যা খরচ। বাকি গল্পটা বরং তাঁর মুখ থেকেই শোনা যাক।
মূল উদ্দেশ্য চাষিভাইদের রোজগার বাড়ানো। যাতে চাষিভাইরা ডিরেক্ট ব্যবসায়ীদের কাছে ফুল বিক্রি করতে পারেন, এবং বেশি টাকা উপার্জন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন উৎপলবাবু। এছাড়াও ক্রেতারা যাতে ন্যায্য মূল্যে ফুল পান, সেটা সুনিশ্চিত করতে নিজস্ব ফুলের আউটলেটও খুলেছেন তিনি।
শুধু চাষিদের উপার্জন বাড়ানোই নয়। উত্তরবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের ফুল ব্যবসায় ভ্যালু অ্যাডিশনের ব্যাপারেও দারুন ভাবনাচিন্তা করেছেন তিনি।
ফুলের চাহিদা কোনোদিন কমার নয়। যতদিন আমরা আছি, ততদিন ফুলের চাহিদা থাকবে এবং বাড়বে। তাই জারবেরার মতো বাণিজ্যিক ফুল চাষ নিঃসন্দেহে একটা লাভজনক চাষ। তবে সত্যি বলতে কি, ফুল চাষ অনেকেই করেন। হয়তো লাভবানও হন। কিন্তু ফুলের কারেন্ট মার্কেট স্টেটাস এবং ফিউচার অ্যানালিসিস করে, মার্কেট গ্যাপ বুঝে ফুল চাষ খুব কম মানুষই করেন। আর তাদের মধ্যে একজন হলেন শিলিগুড়ির এই উৎপল ব্যানার্জি। যার ছাতার তলায় থেকে চাষিভাইরা অ্যাটলিস্ট রোজগারের দিক থেকে নিশ্চিন্ত হতে পারেন।
অরূপ পোদ্দার
শিলিগুড়ি