Daily
এ যেন শ্যাম রাখি না কুল রাখি গোছের দশা হয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকারের। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন নিয়ে আগেই নিজের ঘরে মুখ পুড়েছিল মোদি সরকারের। এবার ইতালিতে জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চে আবারো সেই কৃষি আইন নিয়েই মুখ পোড়ালেন মোদিজি।
ইতালির মাতেরায় জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিদেশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে খোদ আয়োজক দেশ ইতালি ভারতের কৃষকদের কথা তুলতেই বেকায়দায় পড়ে যান দেশের বিদেশ মন্ত্রী এস.জয়শংকর।
ইতালির প্রশ্নের জবাবে বলতে গিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রীকে একগুচ্ছ ফিরিস্তি দিতে হলো আন্তর্জাতিক মঞ্চে। তথ্য দিয়ে ঠারেঠোরে বোঝাতে হলো যে ভারত সরকার একান্তভাবেই কৃষকদের উন্নতিতে দায়বদ্ধ।
অর্থনীতিবিদেরা ঠিক এই জায়গাটাতেই প্রশ্ন করছেন। কি দরকার ছিল মোদিজির আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের মুখ পোড়ানোর? বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রশ্ন, ভারত সরকার তিন বিতর্কিত কৃষি আইন এখনও প্রত্যাহার করেনি। অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা সেই বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। ইতালির সভাতে বিদেশমন্ত্রী যে তথ্য দিলেন সেই তথ্যের সঙ্গে আদৌ বাস্তবের মিল আছে কি?
দিল্লি সীমান্তে আজ প্রায় সাত মাস হয়ে গেল এখনও কৃষকরা বাড়িতে ফেরেন নি। কৃষকদের অভিযোগ সরকার সর্বশক্তি দিয়ে তাদেরকে বাড়ি ফেরাতে কম চেষ্টা করেনি। সব চেষ্টায় জল ঢেলে এখনও কৃষকরা বসে রয়েছেন দিল্লির উপকণ্ঠে।
অথচ ইতালির মাতেরায় বিদেশ মন্ত্রী এমন প্রতিশ্রুতি দিলেন, তৈরি করলেন এমন পরিবেশ যাতে মনে হবে নরেন্দ্র মোদির সরকারই হলো একমাত্র কৃষক দরদী সরকার। এমনই তীব্র অভিযোগ করল কংগ্রেস, তৃণমূল সহ দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
অতিমারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউতে বেসামাল ভারতীয় অর্থনীতিতে এখনো বৃদ্ধি যেটুকু লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা রয়েছে এখনও কৃষিক্ষেত্রেই। দেশের আমজনতার ৭০ শতাংশ এখনও তাদের জীবন জীবিকার জন্য নির্ভরশীল কৃষির উপর।
সেই কৃষিনির্ভর ভারতে কৃষকরা সাত মাস ধরে বসে রয়েছেন রাস্তায়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে, মোদিজীর বিদেশ মন্ত্রী ঢাক পিটিয়ে চলেছেন কৃষক দরদী সরকার হিসেবে।
তৃণমূল কংগ্রেস তো রাখঢাক না রেখে পরিষ্কার করেই জানিয়ে দিয়েছে তাদের অবস্থান। তৃণমূলের অভিযোগ, মোদিজীর হাতে ভারত আর নিরোর হাতে রোম যেন একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ।
ব্যুরো রিপোর্ট