Daily
বন্যরা বনে সুন্দর। কিন্তু সেই বন যদি না থাকে, বন্যরা খাবেই বা কী আর থাকবেই বা কোথায়? আর সেই কারণেই ঝাড়গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলোতে মাঝেমধ্যেই খাবারের সন্ধানে হানা দিচ্ছে হাতির দল। গ্রামবাসীরা আতঙ্কিত। কিন্তু একদল গ্রাম্য মহিলার জঙ্গল বাঁচানোর কোন তাগিদই লক্ষ্য করা গেল না। সবার অলক্ষ্যে একের পর এক গাছ কেটে জঙ্গল সাফ করছে তো বটেই। একইসঙ্গে বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে কাঠ। সেই ছবিই ধরা পড়ল বিজনেস প্রাইম নিউজের ক্যামেরায়। দেখুন কিভাবে জঙ্গলের গাছ কেটে মহিলারা সেই কাঠ বোঝাই করে চলেছেন
আমাদের রিপোর্টার তাদের ধাওয়া করে জবাব চাইতে গেলে কাঠ ফেলে সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়।
শুধু এরাই নন। মনে করা হচ্ছে রাতের অন্ধকারে জঙ্গল সাফ করার এই দায়িত্ব নিয়েছে একদল অসাধু ব্যবসায়ী। যাদের অঙ্গুলিহেলনে চলছে এই গাছ কাটার ব্যবসা। এর ফলে সাঁকরাইলের বিঘের পর বিঘে জঙ্গল সাফ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ প্রশাসন উদাসীন। বনদপ্তরের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোনরকম পদক্ষেপ।
কিন্তু প্রশাসনিক উদাসীনতা কেন? যখন পরিকল্পিতভাবে জঙ্গল লোপাটের অভিযোগ জমা পড়ছে।এমনকি সাঁকরাইল থানা থেকে কুলটিকরি যাওয়ার পথে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ওষধি গাছ লাগানো হয়েছিল। আজ সেই গাছগুলোও পড়েছে চরম বিপদে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যখন শোনা যাচ্ছে অসাধু চক্র শাল, সেগুনের জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে কোটি কোটি টাকার গাছগুলোকে ঝলসে দিয়ে লোপাট করে দিচ্ছে, তখন প্রশাসনের নজরদারি কতটা? সেটাও জানতে পারলাম আমরা।
শুধু শাল, সেগুন নয়। এই জঙ্গলে রয়েছে এমন বহু গাছ যা শহুরে মানুষদের কাছে অজানা। এই গাছগুলো এত নিবিড়ভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে যে মাইলের পর মাইল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা গভীর জঙ্গলে নিশ্চিন্তে বন্যপ্রাণী বাস করার কথা। কিন্তু তারা আর শান্তি পাচ্ছে কই? অসাধু কিছু মানুষের উপদ্রবে আজ বন এবং বন্যপ্রাণ দুয়েরই শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছে বিপদ। একদিকে যখন গোটা বিশ্ব জুড়ে চলছে পরিবেশ বাঁচানোর লড়াই, তখন অন্যদিকে গাছ কাটার মত অপরাধ কেন প্রশাসনিক নজরদারি এড়িয়ে যাচ্ছে? কবে পাওয়া যাবে এর স্থায়ী সমাধান?
অরূপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম