Daily
চাষাবাদ বলতে যে কেবল জমিতে উৎপাদিত বিভিন্ন ফসল বা শস্যের কথাই বোঝায়, এমনটা কিন্তু মোটেই নয়। ধান, গম ও ভুট্টার মতো অধিক উৎপাদিত ফসলের পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রানির চাষও। এবং এইসকল চাষ করা মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়ার মতো জলজ প্রানিগুলি বিদেশে রপ্তানি করে বেশ বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রাও আমদানি করা হয় দেশে। সম্প্রতি এই বাণিজ্যিক মাছ , চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা আয়োজিত করা হয় নন্দীগ্রামে। নন্দীগ্রাম ব্লক মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে, নন্দীগ্রাম একুয়া ফার্মার্স ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির ব্যবস্থাপনায় ও সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানি উন্নয়ন সংস্থার সহযোগীতায় আয়োজিত হয়েছিল এই সভাটি।
এইদিন সভায় উপস্থিত ছিলেন, নন্দীগ্রাম ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুমিতা সেনগুপ্ত, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মৌসুমি পানি ও ব্লকের মৎস্যচাষ সম্প্রসারণ আধিকারিক সুমন কুমার সাহু। আলোচনা সভার শেষে বিস্তীর্ণ নন্দীগ্রাম এলাকার বিভিন্ন বাণিজ্যিক জলজ চাষের ক্ষেত্রগুলি ঘুরে দেখার পাশাপাশি মাছ চাষিদের সাথে চাষের উন্নয়নের বিষয়ে মতবিনিময়ও করেন তারা। এছাড়াও পুকুর বা ভেড়িতে মাছ ও চিংড়ির সাথে সাথে কিভাবে অভিনব বক্স-ক্রাব পদ্ধতিতে কাঁকড়া চাষের পরিমাণ আরও বাড়ানো যেতে পারে সেই নিয়েও আলোচনা করেন তারা।
এইদিন কেরালার জনপ্রিয় ক্যারিমীন মাছের চাষ সংক্রান্ত বেশ কিছু মন্তব্য জানান নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মৌসুমি পানি। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই এই ক্যারিমীন মাছের চাষ পরীক্ষামূলক পর্যায়ে শুরু হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়। এই মাছ উৎপাদনের জন্য একটি বিশেষ গোষ্ঠীও তৈরি করা হচ্ছে। আগামীতে এই মাছ চাষে ব্লক মৎস্য বিভাগের তত্বাবধানে আরো নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’। এই ভাবনা কে কাজে লাগিয়েই বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মাছ চাষিদের এক ছাদের তলায় এনে প্রযুক্তিগত সহায়তা, সরকারি প্রকল্প রূপায়ন এবং সঠিক সরকারি নজরদারির দ্বারা সুষ্ঠু জলজ চাষের মাধ্যমে এলাকার আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়নই এখন তাঁদের মূল লক্ষ্য। এমনটাই জানান মৎস্য আধিকারিক সুমন কুমার সাহু। ব্লক মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে একেবারে ফিল্ডে এসে সরাসরি চাষিদের সাথে কথা বলা ও চাষের ক্ষেত্র গুলি একেবারে সরজমিন দেখায় নন্দীগ্রাম এলাকার মাছ চাষিরা উৎসাহিত ও আনন্দিত।
প্রসূণ ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর