Daily
বি পি এন ডেস্ক: প্রত্যাবর্তনের হ্যাটট্রিক না আসল পরিবর্তন? দুই স্লোগানকে সামনে রেখেই আগামীকাল শুরু হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোটদান পর্ব। আদিবাসী অধ্যুষিত পাঁচ জেলার ৩০টি আসনেই পাখির চোখ যুযুধান দুই পক্ষের। কমিশনও বদ্ধপরিকর নির্বিঘ্নে ভোট করাতে। প্রথম দফার এই ভোটে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার মধ্যেই মোট ৭৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। এর মধ্যে শুধু জঙ্গলমহলেই থাকছে ১৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। যথারীতি কমিশনের বজ্র আঁটুনিকে স্বভাবসিদ্ধ ঢংয়ে আক্রমণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগে আমল না দিয়ে ভোটের কয়েক ঘণ্টা আগে কমিশনও তৎপর হয়ে গতকালই রাজ্য প্রশাসনের ব্যপক রদবদল করে বুঝিয়ে দিয়েছে নিজেদের মনোভাব। প্রথম পর্যায়ে ১৯১ জন প্রার্থীর ভাগ্যপরীক্ষা হবে জঙ্গলমহলের ভোটারদের হাতে। এর মধ্যে তারকা বিধানসভা পশ্চিম মেদিনীপুর। প্রার্থী জুন মালিয়া।
সকাল থেকেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটকর্মীরা আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার মধ্যেই শুরু করেছেন বুথে পৌঁছনর কাজ। চলছে বিভিন্ন ডিসিআরসিতে ইভিএম নেওয়ার তোড়জোড়।
প্রথম পর্যায়ের এই ভোটে উঠে এসেছে বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ তথ্য। অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী ১৯১ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪৮ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারির মামলা রয়েছে। ৪২ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর ফৌজদারির অভিযোগ। এই ১৯১ জনের মধ্যে ১৯ জন আবার কোটিপতি প্রার্থী। ৪ জনের কোন সম্পত্তিই নেই।
প্রত্যাবর্তনের হ্যাটট্রিক আর আসল পরিবর্তনের দ্বৈরথের মধ্যেই দু’পক্ষই পাখির চোখ করছে এই প্রথম পর্যায়ের ভোটকে। যতটা পারা যায় আসন ঝুলিতে পোরাটাই দুই পক্ষের মূল লক্ষ্য। আসুন দেখে নেওয়া যাক ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই ৩০টি আসনের ঘোষিত ফলাফলঃ
রাজনৈতিক দল আসন সংখ্যা ভোটের হার
এআইটিসি ২৭ ৫০.৩৯%
কংগ্রেস ০২ ৬.০১%
আরএসপি ০১ ১.২৯%
বিজেপি ০ ৮.৬%
সিপিআইএম ০ ১৯.১%
(সূত্রঃ ভারতের নির্বাচন কমিশন, ২০১৬)
প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনে ৩০টি আসনের মধ্যে অবশ্যই নজরকাড়া কেন্দ্র পুরুলিয়া। ২০১৬-তে এই আসনে কংগ্রেসের বিজয়ী প্রার্থী সুদীপ মুখার্জী বর্তমানে পদ্মচিহ্নে দাঁড়ানোয় বেশ জমজমাট হবে এখানকার লড়াই। একই রকমভাবে এই পর্যায়ের ভোটে লড়াই হবে বাঘমুন্ডি, খড়গপুর, মেদিনীপুর আসনেও। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া আসনটি দখল করে গেরুয়া শিবির। এখানকার বিধানসভাগুলোতে বিশেষত বাঘমুন্ডিতে বিজেপির ভোটের হার ছিল ৫০% আর তৃণমূলের শতাংশের বিচারে ছিল ২৪.১২।
প্রথম পর্যায়ের ভোটে হিংসা রুখতে তৎপর কমিশন ইতিমধ্যেই ঝাড়খণ্ড, হুগলী ও পূর্ব বর্ধমানের সীমান্তগুলি সিল করে দিয়ে শুরু করেছে ব্যপক নাকা চেকিং। প্রায় অধিকাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় গণ্ডগোল কমবে না বাড়বে তা এখনই বলার সময় আসেনি। তবে পুলিশি বন্দোবস্ত যে এই পর্যায়ে বেনজির তা স্বীকার করেছেন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরাও।
সব মিলিয়ে নির্বাচনকে রক্তপাতহীন করাটাকেই পাখির চোখ করতে চাইছে কমিশন।