Daily
রাত পোহালেই রাজ্যে পঞ্চম দফার বিধানসভা নির্বাচন। ৬টি জেলার ৪৫টি আসনে ভোটযুদ্ধে শাসক-বিরোধীরা। শীতলখুচির অভিজ্ঞতা নিয়ে আবারও কাল অগ্নিপরীক্ষায় নির্বাচন কমিশন। কালিম্পং, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, উত্তর ২৪ পরগণা, নদিয়া এবং পূর্ব বর্ধমানে হতে চলেছে দলগুলির ভাগ্য পরীক্ষা। সেইমত প্রস্তুতি পর্বও এখন চরমে।
এই আসনগুলির মধ্যে ২০১৬’র নির্বাচনে তৃণমূলের দখলে ছিল ৩২ টি। পাহাড়ের ৩টি আসন ছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাতে। বাকি পাঁচটি ছিল বাম এবং কংগ্রেসের ঝুলিতে। বিজেপির ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে নি সেই বছর। কিন্তু বিজেপির উত্থান যে রকেট গতিতে হয়েছিল, তার রেজাল্ট পাওয়া গেল ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের মার্কশিটে। একদিকে যখন তৃণমূলের আসন আটকাল ২২-এ তখন বিজেপি তাড়া করে ঝুলিতে পুরল ১৮টি আসন। ওদিকে বাম এবং কংগ্রেসকে থাকতে হল খালি হাতেই। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা অবশ্য ২০১৯ এর নির্বাচনী যুদ্ধে নামেই নি।
প্রস্তুতি ব্যস্ততার ছবি এখন সবকটি জায়গায়। ইতিমধ্যেই সুন্দরবন লাগোয়া দুটি বিধানসভা হিঙ্গলগঞ্জ এবং সন্দেশখালিতে বৃহস্পতিবার পৌঁছে গেছেন বুথকর্মীরা। বসিরহাট, মিনাখাঁর বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে ভোটকর্মীরা ইভিএম ভিভিপ্যাট নিয়ে আজ সকালবেলা রওনা দিলেন বিভিন্ন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে। ভোটগ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে বারাসাত গভর্নমেন্ট কলেজে। সকাল থেকে বিভিন্ন ভোট প্রক্রিয়া কেন্দ্র থেকে ইভিএম মেশিন নিয়ে বুথকর্মীরা পৌঁছে গেছেন। একইভাবে গুরু নানক ডেন্টাল হসপিটাল থেকে কামারহাটি, বরানগর, পানিহাটি সহ সমস্ত বুথে ইভিএম মেশিন পৌঁছে দেবার প্রস্তুতিও এখন তুঙ্গে। রাজ্যের উত্তরেও ব্যস্ততার খামতি নেই। শিলিগুড়ি কলেজ ময়দান থেকে দার্জিলিং জেলার তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র শিলিগুড়ি বিধানসভা, মাটিগাড়া নকশালবাড়ি বিধানসভা এবং ফাঁসিদেওয়া বিধানসভায় পৌঁছে যাচ্ছেন সকল বুথকর্মীরা।
নির্বাচন কমিশনের কাছে রক্তপাতহীন ভোটের পাশাপাশি আরেকটা চ্যালেঞ্জ করোনা মুক্ত নির্বাচন। তাই ব্যবস্থায় কোনরকম ঢিলেমি দিতে চাইছে না তারা। কমিশনের তৎপরতাও নজর কাড়ল। মাস্ক, স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে ভোট দেবার কথা বলা হচ্ছে কমিশনের পক্ষ থেকে। বারবার দেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক বার্তা।
একদিকে নির্বাচনী উত্তাপ অন্যদিকে করোনার বাড়াবাড়ি। একদিকে হিংসা অন্যদিকে সংক্রমণ। আগামীকাল কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে করোনামুক্ত, হিংসামুক্ত নির্বাচন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো কি আদৌ বিবাদ সরিয়ে ভোট ময়দানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে দেবে সাধারণ মানুষকে? তার জন্য অপেক্ষা আর কয়েক ঘণ্টার।
শিলিগুড়ি থেকে উৎপল পোদ্দারের সঙ্গে, অঙ্কিত মুখার্জী, দেবস্মিতা মণ্ডল এবং মানস চৌধুরির রিপোর্ট