Daily
জাওয়াদ বাংলায় ঢুকেছে শক্তিক্ষয় করেই। এটা কিছুটা নিশ্চিন্তের মনে হলেও আসলে দুর্যোগের মেঘ ঘনিয়েছে মেদিনীপুরের একটা বড় অংশের চাষিদের মাথায়। তাঁদের এখন সব হারিয়ে পথে বসার জোগাড়। সেই ছবি বিজনেস প্রাইম নিউজের ক্যামেরায় আমাদের প্রতিনিধি তুলে ধরলেন পূর্ব মেদিনীপুর থেকে।
জাওয়াদের বৃষ্টি গত দু’দিনে বেশ ভালোরকম ক্ষতির মুখে ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক ব্লকের কৃষকবন্ধুদের। শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মহিষগোট, বুড়ারি, ডিমারী, রামচন্দ্রপুর, হরশংকর, সাপুয়া, জঁফুলি সহ একাধিক গ্রামের কৃষকদের সংসারে বাড়ল চিন্তার পারদ। জাওয়াদ আসার খবর আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল কৃষি দফতর। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কৃষকরা বহু ধান তুলে নিলেও বেশ কিছু অংশ থেকে যায় জমিতেই। বৃষ্টির কারণে একদিকে যেমন দাঁড়িয়ে থাকা ধান শুয়ে পড়েছে। তেমনি কাটা ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে বৃষ্টির জলে। ক্ষতি হয়েছে আসন্ন বোরো ধানের বীজতলার। ক্ষতির পর ক্ষতি কৃষকদের মাথায় বাড়িয়ে দিল চিন্তার ভার।
চাষিরা এখন ক্ষেত থেকে জল বের করে দেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করছেন। এদিকে কৃষি দফতরও আসরে নেমে পড়েছে। কৃষকদের ক্ষতির অঙ্ক বুঝতে। মাঠের ফসল মাঠে পড়ে থাকার জন্য বৃষ্টি যেন খলনায়কের ভূমিকা একেবারে উতরে গেল। তবে কৃষকদের এই মুহূর্তে কী করা উচিৎ সেই বিষয়েও দেওয়া হয়েছে পরামর্শ।
এদিকে সব্জি চাষের যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনি ক্ষতি হয়েছে ফুল চাষিদের। জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পাঁশকুড়ায়। ৭৬ মিলিমিটার। ফুল চাষের ক্ষতির খবর এসেছে পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকায়। সর্বস্তরের কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দাবিও জানানো হচ্ছে। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত বললেন সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক।
গত দুদিনে জেলায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩৮.৫ মিলিমিটার। প্রকৃতির ঘনঘন চোখরাঙানি যেন কৃষকবন্ধুদের রেখে দিচ্ছে আতঙ্ক। কৃষি দফতরের পরামর্শ মেনেই এখন কৃষকরা চেষ্টা করছেন ক্ষতির অঙ্ক কমিয়ে আনার। তবে সোমবার সকাল থেকে মাঝেমধ্যেই দেখা পাওয়া গিয়েছে সূর্যের। যদিও আকাশের মুখ ভার এখনো যায়নি। তবে বৃষ্টিও হয়নি। তাই আপাতত কিছুটা হলেও স্বস্তিতে কৃষকরা।
প্রসূন ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর