Story
কথায় বলে, কিছুই যায়না বিফলে। প্রযুক্তি এবং সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবের জন্য আমন ধান চাষ করার পর সেই সকল জমিগুলো কৃষকরা কোন কাজে ব্যবহার করতে পারতেন না। কিন্তু বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় আজ সেই জমিতেই চাষ হচ্ছে ডালের। যা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা।
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের জেলা যেমন বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুরের মত জেলাগুলিতে আমন ধান চাষ করার পর ১৭ লক্ষ হেক্টর জমি পতিত হয়ে থাকে। চাষ করা যায়না কোন কিছুই। কিন্তু বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা চাষিদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে চাষ করিয়েছেন বিভিন্ন ডাল শস্যের। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুসুর, খেসারি, মুগ বা ছোলার মত বিভিন্ন ডাল। এই জমিতে ডাল চাষ করার জন্য যেমন জলের কোন প্রয়োজন পড়ছে না, তেমনই খরচ হচ্ছে ন্যূনতম।
জলসেচ ছাড়াই ১০০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যেই ডালের ফলন হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় কৃষকরা বিঘা প্রতি প্রায় ১৫০-২০০ কেজি ডালের ফলন পাচ্ছেন। একই জমিতে দ্বিতীয় ফসল উৎপন্ন হওয়ায় তা বিক্রি করার জন্য লাভের মুখও দেখছেন যথেষ্ট।
কম খরচে, জল না দিয়ে বা যখন চাষ করা সম্ভব নয়, ঠিক সেইসময় ডাল শস্য চাষ কৃষকদের মধ্যে যথেষ্ট উৎসাহ তৈরি করছে। এগিয়ে আসছেন অন্যান্য গ্রামের কৃষকরাও।
ধানের জমিতে ডাল চাষ করতে যে এখন কোন সমস্যা হবেনা সেটা প্রমাণ করে দেখিয়ে দিয়েছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। আর কোন সময়ে, কোন জায়গায় এই ডাল চাষের আরও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে? সেটাও জানালেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শস্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড: রাজীব নাথ।
অতিমারি পরিস্থিতিতে যখন প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সংকোচন হয়েছে, তখন কৃষিক্ষেত্রই মজবুত করেছে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড। পিছিয়ে নেই বাংলার কৃষকরাও। নিত্যনতুন প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলার কৃষকরা অতিমারির মধ্যেও খুঁজে পেয়েছেন অর্থ রোজগারের দিশা। আর কৃষকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
রনি চ্যাটার্জী, নদিয়া