Daily
কখনও রোদ, কখনও বৃষ্টি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম ক্ষতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলার কৃষিক্ষেত্র। বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে প্রধান শস্য, ধানের উৎপাদনশীলতা। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ধানের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোই কৃষিবিজ্ঞানীদের মূল লক্ষ্য। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে যাতে ধানের উৎপাদনও অব্যাহত থাকে সেই উদ্দেশ্যেই এক কৃষক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আর এই শিবিরের মাধ্যমেই কৃষকবন্ধুদের কাছে নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ধান পৌঁছে দিল তারা।
সাউথ এশিয়া রিজিওনাল সেন্টার বারাণসি এবং বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন নদীয়া কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের হাতে গবেষণার জন্য ২৪ টি পরীক্ষালব্ধ উচ্চফলনশীল ধানের জাত তুলে দেয় আন্তর্জাতিক ধান্য গবেষণা কেন্দ্র ইরি। গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সাহায্যও করেন তারা। কোন জাতের ধান চাষিদের বিশেষভাবে উপযোগী হবে তার মূল্যায়ন করতে এদিন উপস্থিত ছিলেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি স্নাতক পর্যায়ের ৩০ জন ছাত্রছাত্রী এবং ২৫ জন প্রগতিশীল কৃষক। তারা নিজেরা এই উচ্চফলনশীল ধানের জাতের মূল্যায়ন করেন এবং মার্ক্স দেন।
কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়ে চাষিভাইদের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রসঙ্গত, নদীয়া জেলায় কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের গয়েশপুর খামারে এই ধানগুলির চাষ করা হয় এবং প্রদর্শনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে যাতে মাঠও শস্য শ্যামলা থাকে তাই এই নতুন প্রজাতির ধান তুলে দেওয়া হয় চাষিভাইদের হাতে। আগামীদিনে পুরনো ভ্যারাইটির ধানের রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রেও এই নতুন ভ্যারাইটির ধান বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার অধিকর্তা।
রোদ, বৃষ্টি, খরা-যাই হোক না কেন, ধানের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করবে এই নতুন প্রজাতি। কাজেই ধানের উৎপাদন বাড়লে, বাড়বে চাষিভাইদের আয়ও। আর কোন জমিতে কোন ধানের ফলন কতটা হবে সে বিষয়ে সবচেয়ে ভালো বলতে পারবেন চাষি ভাইরাই। তাই প্রগতিশীল চাষিদের মাধ্যমেই মূল্যায়ন করা হয় এই নতুন প্রজাতির ধানের। আগামীদিনে ভারতবর্ষের অন্যত্রও এই নতুন প্রজাতির ধানের প্রাধান্য যে বাড়তে পারে, সেই আশাই রাখছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা।
কেভিকের ডাকে সারা দিয়ে রীতিমত মাঠে নেমে ধানের নমুনা পর্যবেক্ষণ করেন প্রগতিশীল কৃষকরা। বেশ কয়েকটি ভ্যারাইটি সম্বন্ধে পজিটিভ কথাবার্তাই বললেন তারা।
ধানের উৎপাদনশীলতা অব্যাহত রাখতে লাগাতার পরীক্ষানিরিক্ষা করে চলে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এমনকি কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তির সম্প্রসারণ করা এবং চাষিভাইদের আয় বৃদ্ধিকে লক্ষ্য রেখেই এদিনের এই কৃষি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। আগামীদিনে যে এই ধরণের শিবিরের একটা ভালো প্রভাব পরহবে কৃষিক্ষেত্রে, তা বলাই যায়।
সুব্রত সরকার
নদীয়া