Daily
হাত বাড়ালেই মেঘের বাড়ি। ধূসর পাহাড়ের গা ঘেঁষে অলক্ষ্য কোন গন্তব্যে এগিয়ে চলেছে পাহাড়ি পথ। ওদিকে সফেদ চাদর গায়ে মুড়িয়ে নিদ্রারত স্লিপিং বুদ্ধা। অন্যদিকে বাতাসিয়া লুপে একপাক দিয়ে ভোঁ বাজিয়ে পাহাড়ের বুক চিঁরে এগিয়ে চলেছে টয় ট্রেন। পাহাড়ের গায়ে হেলান দেওয়া হাজার হাজার বাড়ি। বাড়ি নয়, যেন খেলনা বাড়ি। ছোট্ট, অথচ কি সুন্দর একটা শহর। দার্জিলিং। দেখুন দার্জিলিঙের সৌন্দর্য নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই, এত সুন্দর যে এর পাশে কোন বিশেষণই মানানসই নয়। আমরা পর্যটকেরা সাধারণত সকালের দার্জিলিঙের সৌন্দর্য দেখতেই অভ্যস্ত, আর তাতেই প্রায় মূর্ছা যাওয়ার মতো অবস্থা। আচ্ছা, রাতের দার্জিলিং দেখতে ইচ্ছে করে না? চারিদিকে নিস্তব্ধ অন্ধকার, কনকনে ঠাণ্ডা, পাহাড়ের গায়ে খেলনাবাড়িতে আলো জ্বলছে। যেন একঝাঁক জোনাকির মেলা। কি? লোভ হচ্ছে কি না? সত্যি করে বলুন? কেমন হয় যদি রাতের দার্জিলিং দেখার সুযোগ পান? তাও আবার টয় ট্রেনে চেপে!
পাহাড়ে চলছে ঘুম উৎসব। এবার নাকি তার দ্বিতীয় বছর। গত ১২ তারিখ শুরু হয়েছে। চলবে ডিসেম্বরের ৫ অবধি। আর এই উৎসবের প্রমোশনের জন্যই পর্যটকদের রাতের দার্জিলিং দেখানোর আয়োজন করেছে দার্জিলিং-হিমালয়ান রেলওয়ে।
পাক্কা দেড় ঘণ্টার নাইট জয়রাইড। শার্প সন্ধ্যে ছটায় পৌঁছে যেতে হবে দার্জিলিং স্টেশনে। এরপর টয়ট্রেনে চেপে বাতাসিয়া লুপ হয়ে ঘুম স্টেশন ঘুরে ফিরে আসা। পাহাড়সুন্দরীর সৌন্দর্যের কাছে এই দেড় ঘণ্টা সময় কথা দিয়ে যে চলে যাবে, বুঝতেও পারছেন না। ভাড়া থাকছে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে।
ডিএইচআরের তরফে নেওয়া এমন উদ্যোগ বেশ ভালোরকমের সারা ফেলেছে পাহাড়প্রেমীদের মধ্যে। প্রতিদিন প্রচুর প্রচুর প্রচুর মানুষ বুকিং করছেন।
দেখুন, রাতের দার্জিলিং দেখার সুযোগ পেলে কে আর মিস করে বলুন? আপনি করতেন কি? তাও আবার যেমনতেমন ভাবে নয়। এক্কেবারে টয়ট্রেনে চেপে, পাহাড়ের গা বেয়ে। নাহ, অনেক ভেবে দেখলাম। এ চান্স মিস করা যায় না, বুঝলেন তো। আপনারাও মিস করবেন না যেন। ঝটপট ঘুরে আসুন আর উপভোগ করুন রাতের দার্জিলিং। আরও সুন্দর। আরও মোহময়ী।
অরূপ পোদ্দার
শিলিগুড়ি