Story
ফেলে দেওয়া সুপারি গাছের পাতার খোলকে কাজে লাগিয়ে উপার্জনের দুয়ার রাজ্যের বেকার যুবকদের সামনে তুলে ধরলেন ফালাকাটার এই যুবক। তৈরি করলেন পরিবেশ বান্ধব সুপারির থালা গ্লাস। অরুণাচল মডেল পশ্চিমবঙ্গে প্রয়োগ করে দেখালেন তিনি। তৈরি করলেন রাজ্যে অনন্য নজির। আর এই প্রথম কোন মিডিয়ায় সেই খবর সম্প্রচারিত করছে বিজনেস প্রাইম নিউজ।
অরুণাচল প্রদেশে একবার ঘুরতে গিয়েছিলেন ফালাকাটার দেবাশীষ পাল। সেখানেই প্রথম নজর পড়ে এই সুপারির খোলের থালা, ডিশ ইত্যাদি। মাথার মধ্যে গেঁথে যায় এই আইডিয়া। অবশেষে ২০১৫ সালে তিনি সুপারির খোল দিয়ে প্লেট, ডিশ তৈরি করতে শুরু করেন। তারপর অবশ্য আর দেবাশীষবাবুকে ঘুরে তাকাতে হয়নি। দিনে দিনে শ্রীবৃদ্ধি হয়েছে তাঁর।
তবে এই সুপারির খোলের জন্য দেবাশীষবাবুকে কোন গাছ কাটতে হয়না। বরং তাঁর তৈরি সুপারির খোলের প্লেট, ডিশ বা অন্যান্য সামগ্রী সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। একদিকে যেখানে থার্মোকল বা প্লাস্টিকের ব্যবহার রীতিমত পরিবেশের জন্য দূষণ ছড়িয়ে দিচ্ছে তখন অন্যদিকে দেবাশীষ বাবুর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমী থেকে সমাজসেবীরা।
ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তিনি এই প্লেট তৈরির কাঁচামাল সুপারির খোল সংগ্রহ করেন। কিন্তু সুপারির খোল শুরুর দিকে জোগাড় করা খুব একটা সহজ ছিল না। প্রথম দিকে সুপারির খোল সংগ্রহ করতে গিয়ে তাকে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কারণ কেউ ভাবতেই পারেননি ফেলে দেওয়া খোল এমন ব্যবহারে আসতে পারে। পরে অবশ্য সুপুরির খোল দিয়ে তৈরি এই সামগ্রীর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পাচ্ছে। চাহিদা মতো জোগান দিতে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আগে খাবার পরিবেশনের জন্য ব্যবহার করা হত কলাপাতা বা শালপাতা। ক্রমশ সেই জায়গা দখল করে নিল পরিবেশের শত্রু প্লাস্টিক এবং থার্মোকল। ক্রমশ তাদের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবেশের দূষণের পরিমাণও বাড়ছে প্রতিদিন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার বাসিন্দা দেবাশীষ পালের এই অভিনব উদ্যোগ কিছুটা হলেও রক্ষা করবে পরিবেশকে। যত সুপুরির খোলের মত পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর ব্যবহার বাড়বে ততই আবার নিজের ক্ষত সারিয়ে তুলবে পৃথিবী।
অভিজিত চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার