Daily
বাঙালি যেখানে, সেখানেই উৎসব। তা সে এই রাজ্য হোক অথবা ভিন রাজ্য। কিংবা দেশ পেরিয়ে বিদেশ। আর এখন তো দ্য গ্রেট ফেস্টিভ্যাল, দুর্গাপুজো। ঢাক ছাড়া দুর্গাপুজো জাস্ট ইনকমপ্লিট। ঢাক, ঢাকের শব্দ সবটাই পুজোর আনন্দে বাড়তি ফ্লেভর অ্যাড করে। তাই বাংলার এই ঢাকিদের কদর সর্বত্র। বাংলার সেই ঢাকিদের কথা তুলে ধরতে বিজনেস প্রাইম নিউজ পৌঁছে গিয়েছিল নদীয়া জেলার চাকদহের কাঁঠালপল্লীর দাসপাড়ায়। চলুন দেখে আসা যাক, কেমন আছে ঢাকি পাড়া।
দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে বেজায় ব্যস্ত থাকে ঢাকি পাড়া। মণ্ডপে মণ্ডপে বায়না ধরার কাজ আগেভাগেই হয়ে গিয়েছে। বাংলার ঢাকিরা ইতিমধ্যেই পারি দিয়েছেন ভিন রাজ্যে। হায়েদ্রাবাদ, ছত্তিশগর, কটক, আসাম আরও কত কত জায়গায়। আর্থিক অনটন, সাংসারিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও দুপয়সা বেশি রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়ার জন্য এক্কেবারে প্রস্তুত ঢাকিরা।
বছরভর অপেক্ষা করেন পুজো আসার। কারণ পুজো আসলেই যে তাদের মনে করে সাধারণ মানুষ থেকে পুজো কমিটির লোকেরা। গত দুবছর অতিমারির কারণে ভিন রাজ্যে বায়না নিতে পারেননি ঢাকিরা। পয়সা কম দিলেও স্থানীয় মণ্ডপেই ঢাক বাজিয়েছেন তারা। কিন্তু এবছর সেসব সীমাবদ্ধতা নেই। তাই দিল্লি, বম্বে সহ আরও অন্যান্য জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছেন এখানকার প্রায় শতাধিক ঢাকি।
পুজোর আগে ঠিক যতটা ব্যস্ত থাকেন ঢাকিরা, ঠিক তততাই ব্যস্ত থাকেন বাদ্যযন্ত্র নির্মাণের শিল্পিরাও। ঢাক তৈরি থেকে চেকিং, ভাড়া দেওয়া, ঢাক বিক্রি সবটা মিলিয়ে একটা রে রে ব্যাপার। দূরদূরান্ত থেকে ঢাক কেনার জন্য এই ঢাকি পাড়ায় ছুটে আসেন অনেকেই। এবছর এরাজ্যেও ঢাকের ডিম্যান্ড বেশি। তাই ব্যস্ততাও ডবল।
এত গেল পুজোর সময়ের গল্প। বাকি বছরটা কীভাবে কাটে তাদের? কি করেন তারা তখন?
পুজো তো শুধু আর ঠাকুর দেখা, খাওয়া দাওয়া এটুকুই নয়। পুজো হচ্ছে সেই গোল্ডেন সময়টা যখন প্রতিটা মানুষ দুটো বাড়তি পয়সা রোজগারের আসা রাখে। আর এই প্রান্তিক মানুষগুলোর কাছে পুজোই হচ্ছে সহায় সম্বল। একটু ভালো থাকার রসদ। বাকি বছরটা সংসারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রসদ।
সুব্রত সরকার
নদীয়া