Daily
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো। এই পুজোর কটাদিনের অপেক্ষাতেই যেন বাঙালি প্রহর গোনে সারাটা বছর। পুজো মানেই যে কেবল আনন্দ, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে প্রতিমা দর্শন, নতুন জামাকাপড় এমনটা কিন্তু নয়। পুজোকে ঘিরেই আবার অনেকের রুজি রোজকার। আর এই পূজোকে কেন্দ্র করেই এবার রমরমিয়ে বেড়েছে ফাইবারের প্রতিমার ব্যবসা। আর এতেই মুখের হাসি কিছুটা চওড়া হয়েছে দত্তপুকুর এক নম্বর ব্লকের ফাইবার গ্লাসের কারিগর এবং কর্মরত শিল্পীদের।
অতীতে সাবেকি পুজোয় বাঙালি সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন বারোয়ারি পুজো মন্ডপ গুলোতে সাধারণ মানুষের মনে ধীরে ধীরে জায়গা করে নিয়েছে থিমের পুজো। আর সেই থিমের পুজোর সাথে তাল মিলিয়ে এবার মাটির প্রতিমার সাথে সাথে চাহিদা বেড়েছে ফাইবার গ্লাসের প্রতিমারও। এবং শুধু তাই নয়, অন্য মেটেরিয়ালের চাইতে এই ফাইবারের ভাস্কর্যগুলি টেকসইও হয় অনেক বেশি।
গত দুই বছর করোনা আবহে অন্যান্য শিল্পের মতনই বেশ ভালোরকম ধাক্কা খেয়েছিল এই শিল্পও। কিন্তু এবছর দুর্গা উৎসবকে ইউনেস্কো ওয়াল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করায়, সকল দুর্গোৎসব কমিটির সদস্যরা তাদের পুজোকে আরও সুন্দর ও নিখুঁত দেখাতে ফাইবার ক্লাসের মাতৃ প্রতিমাকে বেছে নিয়েছে। যার ফলে বেশ ভালোরকম চাহিদা বেড়েছে এই শিল্পের।
দত্তপুকুর এলাকায় এই ধরনের কারখানা রয়েছে প্রায় ৫০ টা মত। এবং প্রতিটি কারখানায় কমবেশি পুজোর কাজ চলছে। সব মিলিয়ে মোট ২০০-৩০০ জন বর্তমানে এই শিল্পের সাথে জড়িয়ে। ২০২১-এর চাইতে এইবছর শ্রমিক সংখ্যা অনেক বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কারখানার মালিকরা। এবং ২০২৩-এ এই শিল্পের চাহিদার সাথে সাথে শ্রমিকও আরও বাড়বে বলে অনুমান করছেন তারা।
করোনার রেষ কাটিয়ে ধীরে ধীরে সেরে উঠছে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পের গায়ের ক্ষত। আসতে আসতে ফের নতুন করে জীবন পাচ্ছে সকল শিল্প। এমন সময় দাঁড়িয়ে বেশ কিছুটা স্বাচ্ছন্দে ফিরছে এই সমস্ত ফাইবার গ্লাসের শিল্পী ও কর্মীরা । গত দুই বছর পর স্বাভাবিক ছন্দে পুজোর আয়োজনে কার্যত চওড়া হাসি নিয়েই দিন কাটাচ্ছে দত্তপুকুর অঞ্চলের এই শিল্পী ও কর্মীবৃন্দরা ।
বিক্রম লাহা
উত্তর চব্বিশ পরগণা