Market
নমস্কার বন্ধুরা। আজ আমরা কথা বলব, এমনি একটি বিষয় নিয়ে যা শুনলে বা দেখলে আপনার রাতের ঘুম উড়ে যাবে। না, না। বিজনেস প্রাইম নিউজ কোনরকম নেগেটিভ খবর আপনাদের সামনে তুলে ধরে না। আজকের প্রতিবেদনটিও কোনরকম নেতিবাচক ইঙ্গিত পেশ করবে না। বরং আজ যে বিষয় বা বলা ভালো জায়গাটি নিয়ে কথা বলব সেই জায়গাটি যদি আমাদের রাজ্য সরকার ঠিকঠাকভাবে তার বাণিজ্যিক অ্যাঙ্গেলটি ধরতে পারে তবে তা বাংলার ব্যবসা বাণিজ্যের অঙ্কটাকে একেবারে বদলে দেবে। বলা ভালো, গ্লোবালি বাংলা হয়ে উঠবে বাণিজ্যের মুখ। তাই প্রতিবেদনটি পুরোটা দেখার অনুরোধ রইল। সঙ্গে ভালো লাগলে দেরি না করে শেয়ার অপশনে ক্লিক করতে ভুলবেন না যেন।
বীরভূম জেলার মহম্মদবাজারের দেউচা-পাচামি। বাইরে থেকে দেখলে একে রুক্ষ মনে হলেও আসল সোনা কিন্তু রয়েছে ভূগর্ভে। আর তাকে নিয়েই দিন বদলের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে বাংলা। হ্যাঁ। ঠিকই ধরেছেন। এখানেই ২২ কোটি বছর ধরে মজুত রয়েছে কালো সোনা বা কয়লা। পরিমাণটা কত জানেন? প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এখানে মজুত রয়েছে ২১০ কোটি টনের বেশি কয়লা। ৩৪০০ একর জমির এই কোল ব্লকটি হতে চলেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। আর এশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লাখনি। আর যদি এই কয়লা খনির কাজ পুরোপুরিভাবে শুরু হয়, তাহলে কর্মসংস্থান হবে ১ লক্ষ মানুষের। ফলে আগামী কয়েক দশক রাজ্যে কয়লার অভাব তো হবেই না। বরং বাণিজ্যের চাকাটা আরো জোরে ঘুরতে শুরু করবে। একইসঙ্গে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি।
প্রথমদিকে দেউচা-পাচামির কোল ব্লক নিয়ে ইন্টারেস্ট দেখিয়েছিল বাংলার পাশাপাশি আরো কয়েকটি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা। ২০১৫ সালে তৈরি করা হয় একটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বডি। এই বডির নাম দেওয়া হয় বেঙ্গল বীরভূম কোল ফিল্ড লিমিটেড। যদিও তারপর রাজ্য সরকার গোটা প্রকল্পটি নিজের কাঁধে তুলে নেয়। জানা গিয়েছে, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বিনিয়োগ করতে পারে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু টাকা দিলেই তো হল না। কারণ এখানে রয়েছে অন্য আরেকটি বাধা। বিভিন্ন আর্টিকল থেকে যেটুকু জানা গিয়েছে, তা হল দেউচা পাচামির এই কোল ব্লকটির মাইনিংয়ের কাজ শুরু করতে গেলে প্রয়োজন পড়তে পারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির। কারণ কয়লাটি রয়েছে মাটি থেকে প্রায় ২০০ মিটার গভীরে। আর কয়লার উপরে রয়েছে ব্যাসল্ট রকস। ১৪০ কোটি কিউবিক মিটারের এই ব্যাসল্ট রকস ভেঙ্গে সরাতে পারলেই তবে পাওয়া যাবে এই কয়লার খোঁজ। আর এখানেই রয়েছে মুশকিল। কারণ ব্যাসল্ট রকস ভেঙ্গে কয়লা তোলার মত প্রযুক্তি বাংলা তো দূর। ভারতেও নেই। অগত্যা ভরসা করতে হবে বিদেশি সংস্থার উপরে। আর যে কারণে বিশাল অঙ্ক বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে এখানে। তার সঙ্গে অবশ্য রয়েছে আরো একটি সমস্যা। সেটা হল পুনর্বাসন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই এলাকাতে বসবাস করেন ৩০১০টি পরিবার। যাদের মধ্যে অনেকেই আবার আদিবাসী। সুতরাং তাঁদের ঠিকঠাক পুনর্বাসনের কথা ভেবেই তারপর কালো সোনার খোঁজে আসরে নামবে রাজ্য সরকার। বলা ভালো, ইতিমধ্যে সেই পুনর্বাসনের কাজ কিছুটা শুরুও হয়ে গিয়েছে।
এখানে বলে রাখি, দেউচা পাচামিতে মাইনিং শুরু হয়ে গেলে যে কয়লা পাওয়া যাবে সেই ধরণের কয়লা পাওয়া যায় অস্ট্রেলিয়াতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই এলাকার কয়লা হবে অত্যন্ত গুণমান সমৃদ্ধ। ফলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন কাজে এই কয়লার ব্যবহার এক ধাক্কায় বেড়ে যাবে। আর রাজ্যে ব্যবসা বাণিজ্যে ব্যাপক গতি আসবে। তার অন্যতম কারণ বৈদেশিক বিভিন্ন সংস্থাগুলি তখন হাঁ করে থাকবে দেউচা-পাচামির কয়লার দিকে তাকিয়ে। ফলে যত সময় যাবে ততই দেশি, বিদেশি সংস্থাগুলির পা পড়বে আমাদের বাংলায়। একইসঙ্গে বাড়বে বাংলার ব্যবসা বাণিজ্য।
কথায় বলে শুভস্য শীঘ্রম। যত তাড়াতাড়ি এই গোটা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে শুরু করবে রাজ্য সরকার। ততই ব্যবসা বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে আমাদের বাংলায়। এখন কতদিনে এবং কিভাবে দেউচা-পাচামির মাইনিংয়ের কাজে হাত দেয় আমাদের সরকার সেটাই দেখার। ততদিন পর্যন্ত আর অনেক প্রতিবেদন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবে বিজনেস প্রাইম নিউজ। ভালো প্রতিবেদন দেখার জন্য তাই নজর রাখতেই হবে আমাদের চ্যানেলে। আর নতুন কেউ আমাদের চ্যানেলে এই ভিডিওটি দেখলে অবশ্যই সাবস্ক্রাইব করে নিন। যাতে নতুন প্রতিবেদনের নোটিফিকেশন আপনার কাছেও গিয়ে পৌঁছয়। ভালো থাকুন। দেখতে থাকুন বিজনেস প্রাইম নিউজ।