একা রামে রক্ষা নেই, সুগ্রীব তার দোসর। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্তের জোড়া ফলায় আবারও বানভাসি হতে পারে বাংলা। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে নেমে আসতে পারে ব্যাপক দুর্যোগ। এমনই পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর। সূত্রের খবর, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি গভীর নিম্নচাপ। শক্তি বাড়িয়ে যা অতি গভীর নিম্নচাপের চেহারা নিয়ে ক্রমশ এগিয়ে যাবে ওড়িশা উপকূলের দিকে। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে সতর্কতা।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে আরেকটি ঘূর্ণাবর্ত। যার অভিমুখ রয়েছে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের দিকে। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্তের এই সাঁড়াশি আক্রমণে উত্তাল হবে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

রবিবার থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাবে। বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। রবিবার থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সোমবার ভারী বৃষ্টির কবলে পড়বে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর সহ ঝাড়গ্রাম। বজ্রবিদ্যুৎসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই।

দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ইতিমধ্যেই নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন কোস্টাল থানার পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজনকে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।

উপকূলবর্তী এলাকায় জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। সুন্দরবনে যে সকল নদীবাঁধ খারাপ অবস্থায় আছে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে চলছে নজরদারি। সরকারি ছুটি বাতিল করে মহকুমা জুড়ে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপে এনডিআরএফের ২৫ জন জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। সকাল থেকেই শুরু হয়েছে মক ড্রিল। আজ বিকেলের মধ্যে এনডিআরএফের আরও একটি দল এসে পৌঁছবে কাকদ্বীপে। পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগরদ্বীপ নামখানা, সহ সমস্ত উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ছড়িয়ে পড়বে এই এনডিআরএফ এর টিম। খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির। আগাম মজুদ করে হয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী।

এদিকে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পেয়ে কোমর বেঁধে নামছে নবান্ন। লালবাজারে খোলা হয়েছে ইউনিফায়েড কমান্ড সেন্টার। সেখানে বিপর্যয় সামাল দেবার জন্য একসঙ্গে কাজ করবে দমকল, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, কলকাতা পুরসভা এবং সিইএসসি।

গত নিম্নচাপের অতিবৃষ্টিতে নাজেহাল হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গ। কলকাতা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা এখনও জলের তলায়। এরই মধ্যে আবারও আশঙ্কার বার্তা উঠে আসায় কার্যত অশনি সঙ্কেত দেখছেন গাঙ্গেয় উপকূলবর্তীর মানুষরা।

দীপান্বিতা দাস, প্রসূণ ব্যানার্জী, বিক্রম লাহা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর