Trending
মোদী জমানায় কি প্রাণ হাতে নিয়ে ঘুরতে হবে সাধারণ মানুষদের? বৃষ্টি হয়েছে বলেই কি পরিকাঠামোর লজঝরে অবস্থাটা নজরে এলো। কিন্তু তার খেসারত দিতে হল সাধারণ মানুষদের। ভেঙে পড়েছে দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১ এর ছাদের একাংশ। আহত কমপক্ষে ৬ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। তারপরই মোদী সরকারের দিকে তীব্র কটাক্ষ এবং আক্রমণ শুরু হল বিরোধীদের। এবার সেই কাটা ঘায়ে আরও কিছুটা নুন ছড়িয়ে দিলেন সাকেত গোখলে। তৃণমূল সাংসদ এক বিস্ফোরক দাবি করে বসলেন। তিনি বললেন একজন নয়, আসলে মারা গিয়েছেন ৩ জন। আর এই দুর্ঘটনার জন্য সাকেত গোখলে সরাসরি দায় চাপিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপরে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলেন ছাদের যে অংশ ভেঙে পড়েছে তার ছবি, ভিডিও।
এখানেই জানিয়ে রাখি, দিল্লি বিমানবন্দরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন অসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী কিঞ্জারাপু রামমোহন নাইডু। তাঁর দাবি আহত হয়েছেন পাঁচ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। যদিও এই বিষয়টা বিরোধীদের বক্তব্যের সঙ্গে কোনভাবেই মিলছে না। এরপর অবশ্য তিনি বলেছেন মৃতের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে এবং আহতদের মাথা পিছু ৩ লাখ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে। একইসঙ্গে তিনি বিরোধীদের- স্পেশ্যালি সাকেত গোখলের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন যে, নরেন্দ্র মোদী যে বিল্ডিংটা উদ্বোধন করেছেন সেটা অন্য দিকে। আর ছাদের যে অংশ ভেঙে পড়েছে সেটা তৈরি করা হয়েছে ২০০৯ সালে।
অবশ্য তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে এতো কথার ধার ধারেন নি। তিনি এই ঘটনার দায় সরাসরি চাপিয়েছেন নরেন্দ্র মোদীর উপরে। দিল্লি বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই তড়িঘড়ি দিল্লি বিমানবন্দরের সম্প্রসারিত অংশের উদ্বোধন করেছিলেন মোদী। তাই এই আবহে সব দায় নেওয়া উচিৎ নরেন্দ্র মোদীর, বলে তিনি বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রীকে। সাকেত গোখলে সরাসরি এও বলেছেন যে, প্রচার সারতে মরিয়া মোদীই নাকি তিনজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী!
এবার গোখলের কথার রেশ কাটার আগে আরও চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি বললেন, মার্চের ১১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১৫টি এয়ারপোর্ট প্রোজেক্টের শিলান্যাস করেছিলেন। বরাদ্দ হয়েছিল ৯ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। তার মধ্যে ছিল দিল্লির বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১-এর সম্প্রসারণের বিষয়টাও। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে গোখলের করা অভিযোগের সুরে দুষেছেন। তাঁর বক্তব্য নির্মীয়মাণ টানেলটি সময়ের আগেই উদ্বোধন করা হয়েছিল। কারণ মোদী নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই সব কাজ করেছেন। অন্যদিকে আবার ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট লাগু হবার আগেই নাকি এই নির্মীয়মাণ টার্মিনালটি জোর করে উদ্বোধন করানো হয়।
এখানেই জানিয়ে রাখি, শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দিল্লিতে ব্যপক বৃষ্টির কারণে ভেঙে পড়ে দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১-এর একাংশ। সেই সময় টার্মিনালের নিচে দাঁড়িয়েছিল কিছু গাড়ি, এবং ট্যাক্সি। ভেঙে পড়া ছাদের তলায় চাপা পড়ে যায় সেগুলো। দেখা গিয়েছে, ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক জনের এবং আহত হয়েছেন পাঁচ জন। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন, মোদী তৃতীয়বার টার্মে বসার পর থেকেই একের পর এক ফাঁড়া যেন বিজেপির মাথা ছুঁয়ে চলে যাচ্ছে। রাম মন্দিরে ফুটো, অটল সেতুতে ফাটল, নিট কেলেঙ্কারি, ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা এখন আবার বিমানবন্দরের ভেঙে পড়া অংশ। সব মিলিয়ে যেন কার্যত মোদীর অস্বস্তি যত দিন যাচ্ছে ক্রমশ বাড়ছে। তবে হ্যাঁ, পরিকাঠামো যদি ঠিকঠাকভাবে না রক্ষিত হয় তাহলে যে প্রাণ হাতে করে ঘুরতে হবে আম নাগরিকদের।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ