Agriculture news
শীত পড়ছে। এই সময় খেজুর রসের চাহিদা বাড়ে অনেকটাই। খেজুর গাছে উঠে এই রস সংগ্রহ করা বেশ পরিশ্রমের ব্যপার। রস সংগ্রহ করে রাখা হয় মাটির হাঁড়িতে। কিন্তু মাটির হাঁড়ি ভেঙে যাবার সম্ভাবনা সবসময় থাকে। তখন দিনের শেষে পরিশ্রমটাই মাঠে মারা যায়। তাই মাটির হাঁড়ি ব্যবহার না-করে যদি প্লাস্টিকের হাঁড়ি ব্যবহার করা হয়, তাহলে আর পরিশ্রম পণ্ড হবার কোন জায়গা থাকে না। আর যে কারণে প্লাস্টিকের হাঁড়ি ব্যবহার করতে দেখা গেল খেজুর রস সংগ্রহকারীদের মধ্যে। কেন সেটাই বলছি।
বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়ার জঙ্গলে খেজুর বাগান লিজ নিয়ে খেজুর রসের ব্যবসা অনেকেই করেন। কিন্তু শীতের মরশুমে এই খেজুর রসের টানে মাঝেমধ্যেই চলে আসে হাতি। হাতির উৎপাতে ভেঙে যায় মাটির হাঁড়ি। এছাড়াও গাছ থেকে যদি মাটির হাঁড়ি পড়ে যায়, সেক্ষেত্রে হাঁড়ি ভেঙে যাবার একটা সম্ভাবনা থাকে। অগত্যা উপায়? রস সংগ্রাহকরাই মাথা খাটিয়ে ঠিক করলেন, মাটির হাঁড়ি তাহলে আর ব্যবহার করবেন না। পরিবর্তে ব্যবহার করবেন প্লাস্টিকের হাঁড়ি। তার জন্য যে কম টাকা পড়ে, এমন কিন্তু নয়। মাটির পরিবর্তে প্লাস্টিকের হাঁড়ি ব্যবহার করার জন্য বরং দু-পাঁচ টাকা একটু বেশিই খরচা হয়। কিন্তু সংগ্রহকারীরা বলছেন, লাগুক সেই বাড়তি টাকা। দিনের শেষে পরিশ্রমটা তো আর মাঠে মারা যায় না।
প্রায় বারো থেকে তেরো বছর হয়ে গেল হাসিবুল মোল্লা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। এই গোটা জায়গায় প্রায় ৩০০ খেজুর গাছ রয়েছে। এক সিজনের জন্য এই গাছগুলি লিজ নিয়ে নেন হাসিবুল। তারপর খেজুর রস সংগ্রহ করতে শুরু করেন তিনি। মাটির হাঁড়িতে যে ভয় থাকত, প্লাস্টিকের হাঁড়ি ব্যবহার করলে সেই ভয় আর থাকে না। এক সিজনের জন্য প্লাস্টিকের হাঁড়িতে খেজুর রস সংগ্রহ করলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকেন তিনি। তারপর শুরু হয় খেজুর গুড় বানানোর কাজ দুশ্চিন্তা ছাড়াই।
বিক্রম লাহা
বাঁকুড়া