Trending
সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে সামনে ঠেলেও লাভের লাভ কিছু হয়নি। মিটিং, মিছিলে যে উদ্দীপনা ধরা পড়ে ভোট বাক্সে তার প্রতিফলন কোথায়? ফলে যে বাংলা একসময় লাল দুর্গ ছিল আজ সেখানেই চারিদিকে সবুজ আবির। কোনভাবেই করা যাচ্ছে না রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আর তাই প্রয়োজন রয়েছে এবার পিকের মত কাউকে। না হলে ভবিষ্যৎ খুব একটা রক্তিম হবার আশা নেই বামেদের। তাহলে প্রশ্নঃ বামেরা কি এবার নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য পিকের মত কারুর পরামর্শ নেবেন, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে?
বঙ্গ রাজনীতি দেখেছে কিভাবে এক পেশাদার সংস্থা তৃণমূলকে সাফল্যের শীর্ষে তুলে ধরেছে। ২০২১ সালে সেই কাজটা করেছে আইপ্যাক। আর নেপথ্যে তৃণমূলের এই জয় যিনি এনে দিয়েছেন তিনি প্রশান্ত কিশোর বা পিকে। এখন ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এমনই হয়েছে যে পেশাদার সংস্থার সঙ্গে হাতে হাত না মিলিয়ে কাজ করলে ভরাডুবি হতে পারে। সেটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। শুধু বঙ্গ রাজনীতিতে নয় বরং গোটা দেশেই। বিহারে তেজস্বী যাদব, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির জন্য অখিলেশ যাদব বা কংগ্রেস- প্রত্যেকটা দল নিজেদের ফুটো নৌকো মেরামত করার জন্য কোন না কোন পেশাদার সংস্থাকে বেছে নিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবেই। না-হলে এভাবেই ভরাডুবি বারবার খেতে হবে। তার প্রমাণ এবার লোকসভা নির্বাচনে আবারও পেল বামেরা। সৃজন, দীপ্সিতার মত বামেদের ইয়ং ব্লাড দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন। যে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছিল মিটিং, মিছিলের সময় সেই সময় সকলেই মনে করেছিলেন এবারে হয়ত বাংলায় নির্বাচনের লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি বনাম বাম-কংগ্রেস জোট হতে চলেছে। কিন্তু ফলাফল বেরনোর পর দেখা গেল, লড়াইটা হয়েছে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে। ২৩ জন সিপিএম প্রার্থীর মধ্যে সেলিম আর সুজন ছাড়া বাকি সকলের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। পাঁচ বারের সাংসদ অধীর চৌধুরী কার্যত সবুজ ঝড়ে হেরে গেছেন। স্বাভাবিকভাবেই দলের অন্দরে এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি সেই ক্লাসিকাল ওয়েতে বামেদের আসন জয়ের ট্র্যাডিশন শেষ হতে চলেছে?
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলকে বঙ্গ রাজনীতির শীর্ষে পৌঁছে দেবার কাজ দুর্দান্ত করেছেন। আবার একই সঙ্গে অভিষেক সাহায্য নিয়েছিলেন পিকের। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে যে বিপর্যয় তাঁরা দেখেছিলেন ২০২১ সালে তার একেবারে উলটপুরান হতে দেখা গেল। বিধানসভা নির্বাচনে ঘরে ঘরে ঘাসফুল গজাল। কারণ তাঁরা মোটা টাকার বিনিময়ে কাজ করেছেন। ফলে পুরোটাই হয়েছে কর্পোরেট সংস্থার মত। একেবারে আতশকাচের নিচে সকলকে রেখে তুল্যমূল্য বিচার করা হয়েছে, দেখা হয়েছে কাজের খতিয়ান। সাফল্যও এসেছে হাতেনাতে। তাই বামেদের অন্দরে সওয়াল উঠতে শুরু করেছে। বামেরা কি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে এমন কোন পেশাদার সংস্থার সঙ্গে হাত মেলাতে পারে না? নাহলে দিনের পর দিন বামেরা যদি এভাবেই বঙ্গ রাজনীতিতে একেবারে বিপর্যয়ের খাতায় চলে যায়, তাহলে তো গুরুত্ব হারাবেই। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অফিস কি পেশাদার সংস্থা নিতে প্রস্তুত? বাম কর্মী সমর্থকরা কি তার সঙ্গে একমত? জানান কমেন্ট বক্সে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ