Daily
হাসপাতালের দরজা খোলাই থাকে এটাই দস্তুর। এবার সেই হাসপাতালই বন্ধ করা হল নোটিশ ঝুলিয়ে।
হাতে লেখা নোটিশে জ্বলজ্বল করছে কয়েকটি লাইন। দুজন চিকিৎসক, পাঁচ জন নার্স ও কয়েকজন হাসপাতাল কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হল পুরুলিয়া জেলার ঝালদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভর্তিকালীন পরিষেবা।
ঝালদা এক নম্বর ব্লকের এই হাসপাতালের উপরেই নির্ভর করে কয়েক লক্ষ মানুষের চিকিৎসা। সেখানে ইনডোর পরিষেবা বন্ধ থাকায় বেশ বেকায়দায় পড়েছেন এলাকার হাজার হাজার মানুষ। যদিও সময় বেঁধে চালু রয়েছে আউটডোর পরিষেবা।
রাজ্যে যখন করোনার পাশাপাশি সাধারণ চিকিৎসায় হাসপাতালে শয্যা না পাওয়া মানুষের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে প্রতিদিন, ঠিক তখনই অনগ্রসর এই ঝালদা ব্লকের একমাত্র হাসপাতালে ইনডোর পরিষেবা বন্ধ থাকায় মানুষের ভোগান্তি উঠেছে চরমে।
শুনশান হাসপাতালে কাকপক্ষীর দেখা মেলাও ভার। মানুষ অগত্যা চিকিৎসা না পেয়ে ৮ কিলোমিটার পারি দিয়ে চিকিৎসার আশায় যাচ্ছেন পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্যে।
গত মঙ্গলবার থেকেই হাসপাতালের একাধিক কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায় রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়। অন্যান্য জেলার মত পুরুলিয়া জেলাতেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুব একটা কম নয়। জেলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২,২৩৯ জন। এর মধ্যে শুধু ঝালদা ১ নং ব্লকেই আক্রান্তের সংখ্যা পার করেছে ১৩০। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল কুমার দত্ত জানিয়েছেন, দ্রুত হাসপাতাল খোলার ব্যবস্থা করা হবে। তবে আউটডোর যথারীতি চলবে। যে আউটডোরে গুটিকয়েক রোগীর লাইন দেখা যাচ্ছে সেই আউটডোরেও আক্রান্ত হলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। যথারীতি স্থানীয় বাসিন্দারা খুবই উদ্বিগ্ন হাসপাতালের অবস্থা নিয়ে।
হাসপাতালকে ঘিরে থাকা ১০টি পঞ্চায়েত ও একটি পুরসভার মানুষদের একমাত্র শিবরাত্রির সলতে এই হাসপাতাল। সেই হাসপাতালই এখন শাট ডাউন মোডে।
এদিন সকাল থেকে হাসপাতাল চললেও দুপুর গড়াতেই হাসপাতালে নেমে আসে বন্ধের চেহারা। আর সেই চেহারাই জানিয়ে দিচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কী হাল।
জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া