Agriculture news
যত কমবে গরম, তত বাড়বে ফলন। কিন্তু গরমে চাষ যদি আশানুরূপ হয়, তাহলে লাভের অঙ্ক বেশি আসে এই গরমেই। কথা হচ্ছে ধনে পাতা চাষ নিয়ে। যা সাধারণত চাষিরা করে থাকেন জমিতে ছোট আকারে। কিন্তু গ্রীষ্মকালে এক বিঘা জমিতে ধনে পাতা চাষ! আপাতত সেটাই করে বেশ হুলুস্থুলু ফেলে দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ব্লকের ইড়পালা গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়কুণ্ডু গ্রামের কৃষক অসিত পাখিরা। আর যে কারণে, বছরভর পাখিরার ক্ষেতে দেখা পাওয়া যায় ধনে পাতার। কিভাবে সম্ভব হল সেটা বলব এই প্রতিবেদনে।
কৃষকবন্ধু অসিত পাখিরা ধনে পাতা চাষ করছেন বেশ কয়েক বছর হল। এক বিঘা জমিতে ধনেপাতা চাষ করছেন তিনি। যাতে বছরভর বাজারজাত করতে কোনরকম অসুবিধা না-হয়। আর যে কারণে তিনদিন অন্তর ধনে বীজ বপন করেন তিনি। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, এক বিঘা জমিতে সারা বছর চাষ করে বছরে কমপক্ষে আড়াই লক্ষ টাকা মুনাফা করেন তিনি। আর এই গোটা কর্মকাণ্ডে অসিত পাখিরাকে সাহায্য করেছে কৃষি দফতর। কৃষি দফতরের আত্মা প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বীজ থেকে সেডনেট, পলিথিন এবং ভার্মিকম্পোস্ট দিয়ে সহায়তা করা হয়। এখানেই জানিয়ে রাখি একটা বিষয়। মূলত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই সেডনেট ব্যবহার করেছিলেন অসিত পাখিরা। তারপর অবশ্য ঝড়ঝঞ্ঝার জন্য ক্ষেতে খড় দিয়ে ধনে গাছ চাষ করেছেন কৃষকবন্ধু।
কাঠা প্রতি তিনি ৫০০ গ্রাম করে বীজ বপন করেছেন। প্রখর এই গ্রীষ্মে বাজারে গড়ে ৫০ কেজি করে বাজারজাত করেন এবং সহজেই ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি প্রতি দাম পান। সত্যি বলতে কী, কৃষকবন্ধু অসিত পাখিরা যেভাবে ১ বিঘে জমির পুরোটাতেই ধনে পাতা চাষ করছেন, সেভাবে আর অন্য কোন কৃষক করেন না। কারণ অন্যান্য চাষের সঙ্গে সামান্য জমিতে ধনে পাতা চাষ করাই ট্র্যডিশন। কিন্তু ধনে গাছ একাই যে কোন কৃষকের আয়ের রাস্তা তৈরি করবে সেটা কিছুটা অবাক করে দিয়েছিল গ্রামের অন্যান্য কৃষকদের। আপাতত অসিত পাখিরার পরিশ্রম সফল। আর তাঁর সাফল্য দেখে গ্রামের অন্যান্য কৃষকরাও আজ ধনে পাতা চাষ করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
প্রসূন ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর