Trending
চিন- বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি। আমেরিকার পরেই যে বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম কাণ্ডারি। সেই চিনই নাকি ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে একটা সমস্যায়। আর সমস্যা আরও গভীর হচ্ছে কারণ চিনে ইকোনমিক কন্ডিশন ক্রমশ অবনতির পথে। ইউয়ানের ভ্যালু দিনে দিনে কমছে। এদিকে ডলার নির্ভরতা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে চিনের কাছে। তাই সময় এসেছে পাল্টা চাপ দেবার। মানে ডলারকে খোঁচা দেওয়া প্রয়োজন। খোঁচা দেওয়া মানে ডলারকে পিছনে ফেলে চিনের মুদ্রা ইউয়ানকে বিশ্ব বাণিজ্যে বড়সড় জায়গা করে দেওয়া। সেই লক্ষ্যেই কি এবার এগোতে চাইছে চিন? কি বলছেন চিনের সর্বময় কর্তা জিংপিং? আসুন আজকের প্রতিবেদন শুরু করা যাক এই নিয়েই।
ডলারের নিরিখে চিনের মুদ্রা ইউয়ানের ভ্যালু পৌঁছে যায় ৭.২৫-এ। ভারতের সঙ্গে এখানে তুলনা টেনে লজ্জা দেবেন না প্লিজ। কারণ, এখানে কথা বলছি চিন নিয়ে। সুতরাং ভারত কোনদিক থেকেই থাকবে না। তাই আজ কথা হবে চিন এবং আমেরিকা নিয়ে। বলা হচ্ছে যে, চিনের ভ্যালু ৭.২৫-এ চলে যাওয়ার পরেই সেটা চিন সরকারের নজর কেড়েছে। বিষয়টা একেবারেই মনের মতন করে দেখছে না বেজিং। কারণ তারা মনে করছে এভাবেই যদি চিনের মুদ্রা ইউয়ানের ভ্যালু কমে যায়, তাহলে বিশ্ববাণিজ্যে ভালোরকম ধাক্কা খাবে চিন। কারণ জিংপিং সরকার চাইছে বিশ্ববাণিজ্যে মুদ্রা হিসেবে পরিচিতি পাক ইউয়ান। এর ফলে ডলার নির্ভরতা অনেকটাই কমে যাবে। আর যে কারণে নিজের দেশের ইকোনমিকে ভালোরকম বুস্ট আপ করানোর জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জিংপিং। অর্থনীতি সামলানোর জন্য ইউয়ানের মূল্য কমানোর যে গতি সেটা আটকানোর চেষ্টা করছেন স্বয়ং চিনের কর্তা। সেটা একদিক থেকে ডলারের জন্য বেশ চাপের। কারণ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ বুঝে গেছে যে ডলারের ওপর নির্ভর করাটা ধীরে ধীরে অশনি সংকেতের মতনই। মানে বিপদের আভাস। আমেরিকার অর্থনীতি খুব একটা সুবিধেজনক পজিশনে নেই। আর যে কারণে ভারত যেমন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে টাকার মাধ্যমে লেনদেন করছে, তেমনই আফ্রিকার কয়েকটি দেশ ডলারের ওপর থেকে ডিপেন্ডেন্সি কমাতে চাইছে। এটা আমেরিকার জন্য বেশ খতরনাক হতে পারে ভবিষ্যতে।
বলা হচ্ছে, আমেরিকা নাকি মেঘনাদের মতন মেঘের আড়াল থেকে চিনা মুদ্রা ইউয়ানকে কোনঠাসা করতে চায়। আর কোনঠাসা করার এই প্রবৃত্তি শুরু হয়েছে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হাত ধরে। ফেডেরাল রিজার্ভ বেশ কয়েক মাস ধরে সুদের হার বৃদ্ধি করেই চলেছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত, চিনের অর্থনীতিকে নাকি টলিয়ে দেবার জন্য এই একটি পদক্ষেপ যথেষ্ট। তাই এবার চিন চাইছে আমেরিকাকে কোনঠাসা করতে। আর যে কারণে চিন নিজের অর্থনীতিকে চাগিয়ে তোলার জন্য এবার একটা দুর্দান্ত পদক্ষেপ নিল। তারা এবার বিক্রি করতে চাইছে ডলার। ডলার বিক্রি করলে তখন চিনের কোষাগারে কমে আসবে ডলারের পরিমাণ। স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে ইউয়ানের মূল্য। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ব বাজারে লেনদেন চালানোর জন্য ইউয়ানের প্রচলন আরও বাড়াতে চাইছে চিন। ফলে ইউয়ানের ব্যবহার বাড়াতে পারলেই, ডলারের নির্ভরতা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। দিনের শেষে কোথায় দাঁড়াবে অঙ্কটা? প্রয়োজনীয়তা যদি কমে যায়, তাহলে ডলারের দামও অনেকটা কমতে বাধ্য।
এমনিতেই বলা হয়, আমেরিকার পর যদি কোন স্টেবল অর্থনীতি থাকে তাহলে সেটা চিনের অর্থনীতি। কিন্তু করোনার ধাক্কা আসতে চিনের অর্থনীতি একটু টালমাটাল পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যায়। সেই সময় বৃদ্ধি পায় বেকারত্ব। কমে আসে বাণিজ্যিক লেনদেন। চিনের জনগণ এই নিয়ে ভালোরকম সরকার বিরোধী মনোভাব এবং স্ট্যান্ড নেয়। সাংহাই, ইউয়ানে সরকার বিরোধী দাবি বিক্ষোভ করতেও দেখা যায়। সেই প্রভাব পড়ে চিনের অর্থনীতিতে। তারপর যদি একতরফা ডলারের এই দাদাগিরি বজায় থাকে, অনেকেই মনে করছেন, তারপর কিন্তু ভালোরকম সমস্যায় পড়তে পারে চিনের অর্থনীতি। আর এই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতেই এবার আমেরিকার চাপকে পাশ কাটিয়ে বরং তীব্র ডলার বিরোধী একটা পদক্ষেপ ফেলল চিন। এখন ইউয়ান কি ডলারের ভবিষ্যৎ বিকল্প হয়ে উঠতে পারে? সেটা বলবে সময়। আর মতামত শেয়ার করবেন আপনারা। জানান আপনাদের মতামত কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে শেয়ার করুন আমাদের প্রতিবেদন। আর ভালো লাগলে লাইক করুন, সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ