Story
‘মায়ের পায়ের জবা হয়ে উঠল ফুটে মন’। কালীপুজো এলে বিখ্যাত এই শ্যামা সঙ্গীতটি শুনতে পাওয়া যায় সব জায়গায়। আসলে, এই গানের সঙ্গে যেমন জড়িয়ে রয়েছে পুজোর মাহাত্ম্য তেমন পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ফুলের মাহাত্ম্য। জবা ছাড়া অসম্পূর্ণ কালীর পুজো। তাই দীপাবলির সময় গোটা রাজ্য জুড়েই জবা ফুলের চাহিদা ওঠে তুঙ্গে। ফলে এই সময়টায় ফুল ব্যবসায়ী থেকে ফুল চাষিরা থাকেন শান্তিতে, স্বস্তিতে।
রাজ্যে ফুল উৎপাদনে যে সকল জেলাগুলি এগিয়ে থাকে, তাদের মধ্যে অন্যতম পূর্ব মেদিনীপুর। সারা বছর এই জেলায় কোন না কোন ফুলের চাষ হয়েই থাকে। গোলাপ, রজনীগন্ধা, বেল, জুঁই, গাঁদা, মুরগাই, অ্যাষ্টার, দোপাটি বা গ্ল্যাডিওলাসের মতো লাভজনক ফুল যেমন চাষ করা হয় তেমনি সময় বিশেষে চাষ করা হয় জবা, অপরাজিতা বা পদ্মের মত ফুল। গোটা বছর ফুল চাষিরা মোটের উপর একটা লাভ করলেও কালী পুজোয় কিন্তু জবা চাষিরা ভালো টাকা উপার্জন করতে পারেন। তার কারণ জবা ফুলের বাজার এই সময়েই সবথেকে বেশি চাঙ্গা থাকে। বিক্রিও হয় একটু বেশি দামেই। ফলে তাঁরাও নিশ্চিন্তে কাটাতে পারেন পুজো।
তবে অতিবৃষ্টির কারণে ফুল চাষিদের অবস্থা এবারে বেশ সঙ্গিন। নষ্ট হয়েছে গাছ। নষ্ট হয়েছে ফুল। যে কারণে এই বছর জবা ফুলের জোগান ধাক্কা খেতে পারে। কিন্তু চাহিদায় ভাটা নেই। ফলে দাম বাড়ার প্রবণতা থেকেই যাচ্ছে।
অতিবৃষ্টির কারণে ফুল চাষিরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সে কথা স্পষ্ট হল হাওড়ার এক ফুলচাষির কথায়। যিনি কোলাঘাটে এসেছেন ফুল বিক্রি করতে। তিনিও জানালেন, ফুল বিক্রিতে লাভক্ষতির অঙ্ক ঠিক কেমন থাকছে।
একদিকে হাওড়া, অন্যদিকে দুই মেদিনীপুর থেকে ফুল চাষিরা এসে এই কোলাঘাট বাজারে ফুল বিক্রি করেন। যা পৌঁছে যায় বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যে। ঝাড়খণ্ড, রাঁচি, উড়িষ্যা সহ বিভিন্ন জায়গায় ফুল চলে যাচ্ছে এই কোলাঘাট থেকেই। চাহিদায় ভাটা নেই। জোগান ধাক্কা খেলেও ভালো দাম পেতে পারেন ফুলচাষিরা। তাই আসন্ন কালী পুজোয় জবা ফুলচাষিরা তাঁদের ফুল বিক্রি নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী।
প্রসূন ব্যানার্জী
পূর্ব মেদিনীপুর