Trending
পৃথিবীর বুকে গভীর গর্ত খুঁড়ছে চিন। লুট করে নেবে পৃথিবীর সম্পদ।
কেন? চিনা প্রধান জিংপিং-এর এটা নতুন কোন ষড়যন্ত্র নয় তো?
গর্ত খোঁড়া হচ্ছে ১০ হাজার মিটার গভীরে।
এখন প্রশ্ন সুবিশাল এই কুয়ো খননের কারণ কী?
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চিন এই প্রোজেক্ট থেকে কতটা লাভবান হবে?
জানতে হলে স্কিপ না করে প্রতিবেদনটি দেখুন একেবারে শেষ পর্যন্ত।
প্রদেশের নাম জিংজিয়াং। জায়গাটা উইঘুরদের স্বায়ত্ত্বশাসিত। আর এখানেই গর্ত খোঁড়ার কাজটি করছে চিন। যার গভীরতা প্রায় ৩২ হাজার ৮০৮ ফুট। অর্থাৎ কূপের গভীরতা মাটি থেকে আরও ১০টি স্তর নিচে নামবে। তারপর পৃথিবীর এমন একটি জায়গায় পৌঁছবে যে স্তরের বয়স প্রায় ১৪৫ মিলিয়ন থেকে ৬৬ মিলিয়ন। এই গর্তের গভীরতা কত জানেন? হিমালয়ের উচ্চতার থেকে বেশি। এই সুগভীর কূপের মধ্যে ঢুকে যাবে ১০-টি বুর্জ খালিফা। কিন্তু কেন এই গভীর গর্ত খুঁড়ছে ড্রাগনল্যান্ড? কেনই বা বেছে নেওয়া হল জিংজিয়াংকে? বলা হয়, চিনের জিংজিয়াং প্রদেশটি সবদিক থেকেই যেন আসলে খনি। এখানেই রয়েছে চিনের সর্ববৃহৎ রিজার্ভ। বলা হচ্ছে, তিন ভাগের এক ভাগ ন্যাচারাল গ্যাস এবং তেল মজুদ রয়েছে এখানেই। চিনের মোট কয়লার ৩০ শতাংশ রয়েছে এই জিংজিয়াং প্রদেশেই। এমনকি এখানেই রয়েছে ২৫ বিলিয়ন কিউবিক মিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার। রয়েছে ৭৩০ মিলিয়ন মতন লৌহ আকরিক। এরপরেও কি আরও কিছু বলতে হবে যে কেন চিন এভাবেই গভীর গর্ত খোঁড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে? রিচ মিনারেল আর এনার্জি রিসোর্সেস- এগুলোর জন্যই আপাতত জিংজিয়াং প্রদেশে এই সুবিশাল গর্ত খুঁড়ছে চিন।
তবে চিনের বক্তব্য একটু অন্যরকম। চিন সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের রিস্ক কতটা সেটা জানার জন্যই নাকি উতলা হয়েছে জিংপিং সরকার। ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্নুৎপাত এসবের ব্যপার-স্যপার জানতেই নাকি চিনের এই গর্ত খোঁড়ার তাড়া। সত্যিই মাঝেমধ্যে ভাবি, এই সুমহান উদ্দ্যেশ্য যদি ভারত বাস্তবায়িত করতে পারত? কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, চিন কি এতটাই মানবদরদী হয়ে উঠল নাকি এর পিছনেও রয়েছে অন্য কোন উদ্দ্যেশ্য? দেখুন, সম্প্রতি চিনে গ্যাস সংকট ধীরে ধীরে চওড়া হচ্ছে। ফলে ক্রমশই বাড়ছে দাম। এই সংকট বেশ বড় আকারে ছড়িয়েছে হেবেই প্রদেশে। স্পেশ্যালি পেট্রোল আর জেট ফুয়েলের দাম বেশ ওপরের দিকে। রয়টার্সের রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, বেজিং এই বছরে সবথেকে বেশি ক্রুড অয়েল আমদানির চেষ্টা চালাচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, সুগভীর এই কুয়ো খনন করতে পারলেই চিনকে আর ইমপোর্ট করার ঝামেলা পোহাতে হবে না। কিন্তু কতদিন ধরে চিন এই গর্ত খুঁড়বে? আপাতত যা জানা গিয়েছে, এই গোটা প্রোজেক্টটা সাকসেসফুল হতে সময় লাগবে ৪৫৭ দিন মতন। মানে ঐ দেড় বছরের আশেপাশে। খেয়াল রাখবেন, এই জায়গাটা এমনই আর প্রোজেক্ট-টাও এতটাই কঠিন যে, সাকসেসফুল করার জন্য আপাতত চিনকে ভারি ভারি যন্ত্রপাতির সাহায্য নিতে হয়েছে। ২ হাজার টনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছে চিন। মাটি থেকে ১০-টি স্তর নিচ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে এই গর্ত। যেখানে পাথরের বয়স ১৪৫ মিলিয়ন মতন। আর এই গোটা কর্মকান্ড দারুণভাবে করছে চিনের ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। জানানো হয়েছে, চিনের সর্বময় কর্তা শি জিংপিং-এর ইচ্ছেতেই নাকি এই কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছে তারা। জিংপিং-এর বক্তব্য নাকি, পৃথিবীর গভীরে পৌঁছে আমাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য ভালোরকম কাজ করার প্রয়োজন রয়েছে।
তবে এখানেই জানিয়ে রাখি, চিন বর্তমানে এই যে গভীর গর্তটি খুঁড়ছে সেটাই কিন্তু বিশ্বে মানুষের তৈরি সবচেয়ে গভীর নয়। কারণ সেই রেকর্ড ইতিমধ্যেই ধরে রেখেছে রাশিয়া। সত্তর-আশির দশকে রাশিয়া একটা পরীক্ষা করেছিল। সেই সময় তারা একটা সুপার ডিপ ড্রিলিং প্রোজেক্ট করেছিল। বলা হচ্ছে, তার গভীরতা নাকি চিনের এই সুগভীর গর্তের থেকেও অনেক বেশি। প্রায় ১২ হাজার ২৬২ মিটার মতন। যাই হোক, চিন যেভাবে গর্ত খুঁড়ে চলেছে পৃথিবীর বুকে তারপর একটাই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিশ্ববাজারে। চিনের এই গভীর খনন যদি সত্যিই সাফল্য পায় এবং চিন যদি সত্যিই এই ন্যাচারাল রিসোর্সকে কাজে লাগাতে শুরু করে তাহলে আর মার্কিন মুলুক তো বটেই। এমনকি বিশ্ব বাজারে নিজের জমি আরও শক্ত করে ফেলবে দেশটা। চিনের ইকোনমিক গ্রোথ নিয়ে তখন আর সন্দেহ কারুর থাকবে না। খেয়াল রাখবেন, চিন এমন একটা সময়ে এই কাজটি শুরু করল যখন গোটা বিশ্বে প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান নতুন একটি অধ্যায় রচনা করছে। আর গ্লোবাল পলিটিক্সে এই অধ্যায় রচনার কাজটি হাতে নিয়েছে ভারত। সুতরাং চিনের দাদাগিরি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। তখন সেটা ভারতের জন্য উল্টো বিপদ হবে না তো? মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। সঙ্গে লাইক করুন, শেয়ার করুন আমাদের প্রতিবেদন। আর নতুন হলে সাবস্ক্রাইব করে নিন আমাদের চ্যানেল বিজনেস প্রাইম নিউজ।
জীবন হোক অর্থবহ