Market
ইউক্রেনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার কারণে পশ্চিমী দেশ সহ আমেরিকা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পাইপলাইন ভেঙে ফেলার জন্য একজোট হয়। এশিয়া সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলিকেও রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কে ইতি টানার অনুরোধ জানান জো বাইডেন। কিন্তু সেই অনুরোধ কি আদৌ রাখতে পারল চিন? মনে হয় না। কারণ, রাশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনছে শিংপিংয়ের সরকার। শুধু সমুদ্রপথেই প্রতিদিন গড়ে ১১ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করছে চিন।
সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার পর যখন রাশিয়া গ্লোবাল ইকনমির মানচিত্রে ক্রমশ কোনঠাসা হতে শুরু করে, তখন নিজেদের অর্থনীতিতে জ্বালানি দিতে রাশিয়া ঘোষণা করে কম দামে অপরিশোধিত তেল বিক্রি করবে তারা। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগায় বেজিং। যদিও যুদ্ধ শুরুর পরেই রাশিয়ার থেকে জ্বালানি আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিংপিংয়ের সরকার। কিন্তু দেখা যায়, আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে চিন। বরং বিশ্ব বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধি ফের যদি মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, তার জন্য আগেভাগেই নিজের ভাণ্ডার পূর্ণ করতে চাইছে বেজিং। দেখা যাচ্ছে, চিনের সমুদ্রবন্দরগুলিতে রাশিয়ার তেলবাহী জাহাজের আনাগোনা আগের থেকে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বেজিং চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে গড়ে ৭ লক্ষ ব্যারেল তেল আমদানি করত। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যাটা বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে ১১ লক্ষ ব্যারেলে। বর্তমানে চিনের কাছে ৯২ কোটি ৬১ লক্ষ ব্যারেল তেল মজুত রয়েছে। এবং খুব তাড়াতাড়ি সেই পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়। জাহাজ ছাড়াও চিনের কাছে প্রতিদিন ৮ লক্ষ ব্যারেল তেল পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে রাশিয়া। আর শুধু চিনের কথাই বা বলি কেন? কম দামে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনাতে দাঁড়ি টানে নি ভারত। এমনকি ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডের মত বেশ কয়েকটি ইউরোপের দেশগুলি কম দামে তেল মজুত করে নিচ্ছে।
এখানেই বলে রাখা ভালো, বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা রাশিয়ার রুবল। কিন্তু পুতিন রাষ্ট্রের টালমাটাল অবস্থার কারণে কোষাগারে চাপ পড়তে শুরু করেছে। তাই আর্থিক বৃদ্ধিকে সচল রাখতে তেল রফতানির উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে রাশিয়াকে। শুধু তেল রফতানি করেই রাশিয়া আয় করেছে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন চিনের সঙ্গে রাশিয়ার এই বাণিজ্যিক সম্পর্ক কি ভবিষ্যতে আরও মজবুত করবে? সেটার উত্তর দেবে সময়।