Trending

একটা সময় ছিল যখন শুধু গ্রামবাংলা বলে নয়। শহরেও অতিথি আপ্যায়নে মাদুরের ভূমিকা থাকত ভালো রকম। হাতে বোনা মাদুরের কদর ছিল সেই সময়। যে কারণে মাদুর শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী থেকে শিল্পীদের ব্যস্ততার শেষ থাকত না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এসেছে পরিবর্তনের হাওয়া। হাতে বোনা মাদুরের বাজার ছিনিয়ে নিতে শুরু করল প্লাস্টিক। একটা সময় দেখা গেল, প্লাস্টিকের মাদুরের দৌরাত্ম্যে কার্যত আভিজাত্য হারাতে বসল হাতে বোনা মাদুর। একইসঙ্গে চরম সংকট ঘনিয়ে এলো মাদুর ব্যবসায়ীদের উপরে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বরুপনগর থানার চারঘাট। একটা সময় ছিল যখন চারঘাটের মাদুরের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা রাজ্যে। বাজার গমগম করত মাদুর শিল্পী এবং ব্যবসায়ীদের আনাগোনায়। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মাদুর ব্যবসার সঙ্গে ২৫ থেকে ৩০ জন ব্যবসায়ী যুক্ত থাকলেও এখন আতস কাঁচ দিয়ে খুঁজতে হবে মাদুর ব্যবসায়ীকে। মাদুর শিল্পের দৈন্যদশা এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে বর্তমানে চারঘাট মাদুর বাজারে ব্যবসায়ীর সংখ্যাটা ঠেকেছে মাত্র ১ জনে। কিন্তু কতদিন এভাবে মাদুর ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব? তাই নিয়ে বিজনেস প্রাইম নিউজের কাছে সংশয় প্রকাশ করলেন ব্যবসায়ী সুভাষ সরকার।
একটা সময় ইছামতি ও যমুনা নদীর ধারে চাষ হতো মাদুর কাঠির। চারঘাট এলাকার কয়েক হাজার পরিবার মাদুর কাঠির চাষ এবং মাদুর বোনার সঙ্গে যুক্ত থাকত। কিন্তু প্লাস্টিক মাদুর জায়গা দখল করে নেওয়ায় চাহিদা কমেছে হাতে বোনা মাদুরের। মাদুর শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়েছে একাধিক পরিবার।
হাতে বোনা মাদুর শিল্পের উপরেই নির্ভর করত বহু গ্রামীণ মানুষের রুটিরুজি। এখন গ্রামের এই কুটির শিল্পে নেমেছে সংকট। ফলে নতুন প্রজন্ম তো বটেই পুরোনো অনেকেই বেছে নিয়েছেন বিকল্প পেশা। তাই চারঘাটের মাদুর শিল্পীরা আর্জি জানিয়েছেন সরকারের কাছে। গ্রামবাংলার এই কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে যদি সরকার কোন উদ্যোগ নেয়, তাহলে আবারো স্বমহিমায় ফিরে আসবে চারঘাটের মাদুর শিল্প।
দেবস্মিতা মণ্ডল
উত্তর ২৪ পরগনা