Trending
চাঁদ ছুঁতেই ছ্যাকা খেল বিক্রম। এত তাপমাত্রা? এমনটা তো ভাবনাতেও আসেনি বিজ্ঞানীদের। চন্দ্রযান-৩-এর রিসেন্ট এই আপডেট রীতিমতো তাজ্জব করে দিয়েছে ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
বাস্তব দেখেই চক্ষু চড়কগাছ! ৭০ ডিগ্রি? শিবশক্তি পয়েন্ট, যেখানে ল্যান্ড করেছে চন্দ্রযান-৩, বিজ্ঞানীরা মনে করেছিলেন সেই অঞ্চলের উষ্ণতা ম্যাক্সিমাম ২০-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়ায়ের আশেপাশে থাকবে। কিন্তু বাস্তব তো অন্য কথা বলছে। বিজ্ঞানীদের ধারনার ধারেকাছেও ঘেঁষেনি বাস্তব। মাত্র ১০ সেন্টিমিটারের ব্যবধানেই টেম্পারেচারের এই ডিফারেন্স প্রতিমুহূর্তে অবাক করছে বিজ্ঞানীদের। আর যত তারা অবাক হচ্ছেন, ততই আকর্ষণ বাড়ছে চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে। পুরো বিষয়টা সহজে বোঝানোর জন্য একটা গ্রাফ পাবলিশ করেছে ইসরো। দেখুন সেই গ্রাফের ছবি।
ধাঁধাঁর থেকেও জটিল তিনি। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কথা বলছি। গ্রাফ অন্তত সেই কথা বলছে। নাহলে মাত্র ১০ সেন্টিমিটারের ব্যবধানে উষ্ণতার এতটা হেরফের হতে পারে? পর্যবেক্ষণ বলছে, পেলোড মাটির যত গভীরে প্রবেশ করছে ততই উষ্ণতা কমছে। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ সেন্টিমিটার গভীরেই তাপমাত্রা নাকি -১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড! এমন তথ্যই দিচ্ছে ল্যান্ডার বিক্রম। তাপমাত্রার এতটা ফারাক খুব কম ক্ষেত্রেই হয়। যদি পৃথিবীর সঙ্গেই তুলনা টানি তাহলে বলতে হয়, গুজরাটে চরম গরমে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রীতে ঘোরাফেরা করে, সেখানে কাশ্মীরে কনকনে শীতে থাকে -১০ডিগ্রি। আর এই বিশাল তাপমাত্রার হেরফের চাঁদের মাটিতে মাত্র আট সেন্টিমিটারের ব্যবধানে?
তো এবার প্রশ্ন হচ্ছে, তাপমাত্রার এই হেরফের আমাদের কী তথ্য দেবে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চাঁদের মাটিতে জল খুঁজতেই চন্দ্রযান-৩ সেখানে গিয়েছে। ভূপৃষ্ঠের মাত্র আট সেন্টিমিটার নীচে মাইনাস ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হওয়ার মানে, চাঁদের পৃষ্ঠের অল্প নীচে তরল অবস্থায় জল পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। শুধু জলের অস্তিত্বের সংকেত দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি চন্দ্রযান-৩। জানিয়েছে, চাঁদের মাটিতে লুকিয়ে রয়েছে আরও এক মহার্ঘ্য সম্পদ যার নাম হিলিয়াম থ্রি। পৃথিবীতে খুব একটা বেশি এর খোঁজমেলে না। কোনও বর্জ্য ছাড়াই শক্তি উৎপাদনে সক্ষম এই হিলিয়াম থ্রি। সারা ভারতের এক বছরের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করতে পারে মাত্র ২ টন হিলিয়াম থ্রি। বিজ্ঞানীদের একাংশ আবার মনে করছে চাঁদের এই রহস্যমেরুতেই লুকিয়ে রয়েছে প্রাণের অস্তিত্বের জন্য উপযোগী সম্পদও। সুতরাং ইতিহাস তৈরির পাশাপাশি রেয়ার খনিজের খোঁজ মেলা যে ভারতের জন্য সাপে বর হয়েছে, তা বলাই যায়।
শিবশক্তি পয়েন্টে বহালতবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রজ্ঞান। প্রশ্ন ছিল, গুটি গুটি পায়ে চাঁদের পাহাড়ে পৌঁছনো তো হল। এরপর? এরপর পর্দানশীন চাঁদের একের পর এক রহস্য উদঘাটন করবে বিক্রম এবং প্রজ্ঞান। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বকে অবাক করে দেওয়ার কাজ। ইসরো জানিয়েছে, যে তিনটে মিশন নিয়ে চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পৌঁছেছিল তার দুটো ইতিমধ্যেই পূরণ হয়ে গিয়েছে। বাকী রইলো এক। অনেকেই মনে করছেন, এই দক্ষিণ মেরু খুঁড়ে দেখা গেলে হয়তো পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাসও জানা যেতে পারে। যদিও এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের চোখ শুধু চন্দ্রযান-৩ এর থার্ড এবং ফাইনাল মিশনের দিকেই তাকিয়ে।
বিজনেস প্রাইম নিউজ
জীবন হোক অর্থবহ