Daily
রতনপুর। ঝাড়গ্রাম জেলার বিনপুর ১ নং ব্লকের রামগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম। এই কয়েক বছর আগে অবধিও যে ছিল, এই বাংলার পতিত অনাবাদী গ্রাম – মূল বাংলার থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন। অভাব তার কোণায় কোণায়। রুজি-রোজগার বলতে কেবল বন থেকে কাঠ সংগ্রহ বৈ আর কিছু নয়। পেটের দায়ে গ্রামের একটা বড় অংশ নাম লিখিয়েছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের দলে।
তবে হঠাৎই এই গ্রামের উপর নজর পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষি ও গ্রামন্নয়ন ব্যাঙ্ক, নাবার্ডের। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় গ্রামটির উন্নতিসাধনের কর্মসূচী। আজ নাবার্ডের আওতায় এসে পতিত গ্রামের ছবিটা একেবারে বিপরীত। বিঘার পর বিঘা জমিতে কাজু বাদাম চাষ করে স্বনির্ভর হচ্ছেন গ্রামের মানুষজন। কমেছে পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা। আগামী ৬ বছরের মধ্যে পিছিয়ে পরা গ্রামটিকে আয়ের দিশা দেখাতে আদিবাসী গ্রামের উন্নয়ন তহবিলের জন্য বরাদ্দ করা হয় ১ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা। রতনপুরের ১৪ একর জমিতে ১৪ জন বেনিফিসিয়ারি যুক্ত আছেন এই প্রজেক্টের সঙ্গে। প্রকল্প রুপায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় বালিভারা অফার নামে একটি সংস্থাকে।
২০১৭ সালে গ্রামের রুক্ষ জমিতে চারা রোপণ করেন তারা। একইসাথে সর্ষে, ঢেঁড়স, লাউ, কুমড়োর বীজ রোপণ করেন তারা। পরপর তিন বছর কাজু গাছের ফুল ছাঁটাই করে দেন তারা। আর তাতেই ঘটল ম্যাজিক। এখন গাছ প্রতি তারা ৬০০-৭০০ গ্রাম কাজু পাচ্ছেন। প্রতি কেজিতে তাদের আয় দাঁড়িয়েছে ১২০-১৫০ টাকা। নাবার্ডের সহযোগিতায় আয়ের দিশা খুঁজে পেয়ে খুশি চাষিরা।
চাষিরা যাতে তাদের ফসলের সঠিক দাম পান, সেই বিষয়ে সর্বতভাবে সাহায্য করবে নাবার্ড। এমনটাই জানালেন, নাবার্ডের এজিএম, জি কে রাও।
গ্রামের আদিবাসীদের উন্নতিসাধনে তাদের পাশে শুধু নাবার্ডই নয়, রয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এখন আগের মত আর তাদের অভাব তাড়া করে না। গত ৩১ মার্চ এই সাকসেস রিপোর্ট পেতেই এলাকা পরিদর্শন করেন নাবার্ডের কর্মকর্তারা।
সুব্রত সরকার
ঝাড়গ্রাম